নতুন কথা ডেস্ক ॥ শুরু হয়েছে ভাষার মাস। ’৫২-এর এ মাসের ২১ শে বাঙালি লড়াইয়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মাতৃভাষা ‘বাংলা’র মর্যদা। একুশ কেবল ভাষার লড়াই নয়, এ লড়াই বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার প্রথম উন্মেষ। পশ্চিম পাকিস্তানি শোষণ-বঞ্চনা ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ লড়াই। সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউর সহ আরো নাম না জানা তরুণের আত্মদানের রক্তস্নাত এ লড়াই বাঙালির হৃদয়ে স্বাধীকারের চেতনা জাগায়। যার প্রেরণায় ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ও ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি ছিনিয়ে আনেন স্বাধীনতার লাল সূর্য। বিশ্ব দরবারে আজ গর্বিত জাতি। অগ্নিঝরা একুশ তাই বাঙালির চেতনার অনিবার্ণ বাতিঘর।
পৃথিবীতে বাঙালি’ই একমাত্র জাতি যারা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে, রক্ত দিয়ে মায়ের ভাষা রক্ষা করেছে। বাঙালির বিরল এ ইতিহাসের কাহিনী কেবল ভারত নয়, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে বেশ গুরুত্ব সহকারে সে সময় প্রকাশ হয়। নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছিল, ‘পূর্ব পাকিস্তানের এই অশান্তির কারণ শুধু ভাষা নয়, আর্থিক শোষণ ও নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা। তাদের দেশের উৎপাদিত পাট ছিল বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের উৎস। কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানের বাজেটে অর্থ বরাদ্দ ছিল অপ্রতুল।’ ’৫২-র ১৪ ফেব্রুয়ারি করাচি থেকে নিউইয়র্ক টাইমসের বিশেষ সংবাদদাতা লেখেন, ‘শাসকগোষ্ঠী পূর্ব পাকিস্তানের পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছে’। এর অন্যতম কারণ ছিল, ভাষা আন্দোলন নিয়ে সম্পাদকীয় লেখা হয়েছিল। ভাষার জন্য বাঙালির আত্মত্যাগ বৃথা যায় নি। জাতীয়বাদী চেতনায় যেমন বাঙালি জাতি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ পেয়েছে, তেমনি এ লড়াইয়ের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও পেয়েছে। একুশ কেবল বাংলাদেশেই উদযাপন হয় না, একুশ এখন সারা বিশে^র দেশে দেশে উদযাপন হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে। তাই ভাষার মাসে মহান ভাষা শহীদ এবং ভাষা সৈনিকদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।