Saturday,7,December,2024
21 C
Dhaka
Saturday, December 7, 2024
Homeরাজনীতিএগারো ও ছয় দফার মধ্যে কোথাও রাষ্ট্রধর্ম ছিল না: বাদশা

এগারো ও ছয় দফার মধ্যে কোথাও রাষ্ট্রধর্ম ছিল না: বাদশা

নতুন কথা রিপোর্ট : বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেছেন, ‘স্বাধীনতা উত্তর ধর্মের ভিত্তিতে রাষ্ট্রকে পরিবর্তন করা হবে এমনটি আমরা কোনদিন কল্পনাও করিনি। বাংলাদেশে রাষ্ট্রধর্ম বলে কোন ধর্ম হবে; এটি এগারো ও ছয় দফাসহ স্বাধীনতা সংগ্রামের কোন লক্ষ্যের সাথেই যুক্ত ছিল না। অথচ সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম থেকেই গেল।’

সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সেমিনার হলে ‘স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলার ঘোষণা’ দিবসের ৫১ বছর পূর্তিতে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন।

সভায় ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত যে দেশ, সেটি আগামীতে কোন নীতির ভিত্তিতে পরিচালিত হবে তা বাহাত্তরের সংবিধানে স্পষ্ট বলা আছে। স্বাধীনতা সংগ্রামের কোন কর্মসূচিতেই রাষ্ট্রধর্ম বলে কোন শব্দ ছিল না। কিন্তু স্বাধীনতার পর সামরিক শাসকেরা ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে এদেশে রাষ্ট্রধর্ম করেছে। বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক ধারায় ঠেলে নিয়ে গেছে। বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও প্রগতিশীলতাকে ধুলিসাৎ করেছে। অথচ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর কোনদিন এমন পরিস্থিতির জন্ম হবে; তা তৎকালীন মুক্তিকামী কোন মানুষই কল্পনা করেনি।’

বাহাত্তরের সংবিধান থেকে রাষ্ট্র অনেক দূরে সরে এসেছে উল্লেখ করে রাজশাহী সদর আসনের এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, ‘বাহাত্তরের সংবিধান অনুসারে রাষ্ট্রের মালিক হওয়ার কথা ছিল জনগণের। কিন্তু তা না হয়ে রাষ্ট্রের মালিকানা চলে যাচ্ছে লুটেরা শ্রেণির হাতে। আজ দুঃখের সাথে বলতে হয়- যে জনগণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বপ্ন নিয়ে হাতে অস্ত্র তুলেছিলাম, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও তার প্রতিফলন ঘটেনি। রাষ্ট্র পরিচালনায় কখনও বাহাত্তরের সংবিধানকে অনুসরণ করা হয়নি। বাংলাদেশ এখন বাহাত্তরের সংবিধান থেকে অনেক দূরে। এমনটা কখনও কাম্য ছিল না।

সংসদে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ কর্তন করে প্রচারের সাথে জড়িতদের খুজে বের করার দাবি জানিয়ে প্রবীণ এই রাজনীতিক বলেন, ‘কিছুদিন আগে জাতীয় সংসদে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ভাষণ খ-িত আকারে উপস্থাপন করা হয়েছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে কে বা কারা স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা বঙ্গবন্ধুর ভাষণ কর্তন করলো, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্রকে বাদ দিল- ওয়ার্কার্স পার্টি তার জবাব চায়।’

ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও লক্ষ্য বাদ দিয়ে কখনোই সামনে এগোনো যাবে না। শহীদদের আত্মত্যাগ স্বার্থক করতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রেখেই এগিয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো ধরণের দ্বিধা, সংশয় ও আপোষকামীতার প্রশ্রয় ওয়ার্কার্স পার্টি দিবে না। সোনার এই বাংলাদেশ বাহাত্তরের সংবিধান মোতাবেক চার মূলনীতির ভিত্তিতে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে; সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে এটিই আমাদের আকাঙ্ক্ষা।’

আলোচনা সভায় ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুল হাসান মানিকের সঞ্চালনায় আলোচনা করেন- ভারতের কমিউনিস্ট পাটির (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় সদস্য গৌতম দাস। আরও বক্তব্য রাখেন- প্রাবন্ধিক ও গবেষক সামসুল হুদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেজবাহ কামাল, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ওয়ার্কার্স পার্টির ঢাকা মহানগরের সভাপতি আবুল হোসাইন প্রমুখ।

সর্বশেষ