খেলা ডেস্ক: সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক তারকা ক্রিকেটার অল রাউন্ডার অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস। ৪৬ বছর বয়সী সাইমন্ডস গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান। বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
স্থানীয় সময় শনিবার রাত ১১টার দিকে গাড়ি রাস্তা থেকে ছিটকে পড়ে বলে পুলিশের প্রতিবেদনে জানা গেছে। চিকিৎসকরা সাবেক এ ক্রিকেটারকে বাঁচানোর জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করেন। কিন্তু গুরুতর আঘাত পাওয়ায় বাঁচানো সম্ভব হয়নি তাকে। জানা গেছে গাড়িতে থাকা সাইমন্ডসের দুই কুকুর প্রাণে বেঁচে গেছে।
শনিবার রাত ১১টায় টাউন্সভিলে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে সাইমন্ডসের গাড়ি। এই টাউন্সভিলেই বসবাস করছিলেন ৪৬ বছর বয়সী সাবেক অজি অলরাউন্ডার। গাড়িতে এই সময় সাইমন্ডস ছাড়াও তার সঙ্গে ছিল পছন্দের দুই পোষা কুকুর।
দুর্ঘটনার প্রায় দুই মিনিট পর এক প্রত্যক্ষদর্শী দুর্ঘটনা কবলিত গাড়িটি দেখতে পায়। দ্য কুরিয়ার মেইলকে ওই সময়ের ঘটনা উল্লেখ করে প্রত্যক্ষদর্শীটি জানান, ‘দুই কুকুরের মধ্যে একটি খুবই সংবেদনশীল ছিল। আর সেই কুকুরটি সাইমন্ডসকে রেখে কোথাও যেতে চাচ্ছিল না। সাইমন্ডসের কাছ থেকে ওকে সরাতে গেলেই গর্জে উঠছিল। আমার সঙ্গীটি সাইমন্ডসকে দেখে গাড়ি থেকে বের করে আনে।’
ওই সময় সাইমন্ডসের সর্বশেষ অবস্থার কথা তুলে তিনি আরও বলেছেন, ‘সাইমন্ডস তখন অজ্ঞান ছিল। কোনও সাড়া দিচ্ছিল না, স্পন্দনও পাওয়া যাচ্ছিল না।’ প্যারামেডিকস পরে সর্বোচ্চ চেষ্টা করলেও সাবেক অজি ক্রিকেটারকে আর বাঁচাতে পারেনি। আরেকটি খবরে জানা গেছে, দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ি থেকে তখনও কান্ট্রি মিউজিক শোনা যাচ্ছিল।
সাইমন্ডস স্ত্রী ও দুই সন্তান রেখে গেছেন। স্ত্রী লরা বলেছেন, তারা এখন তীব্র শোকের মাঝে বিরাজ করছেন, ‘আমরা তীব্র শোকের মাঝে রয়েছি। এখন আমার দুই সন্তান নিয়ে উদ্বিগ্ন। ওদের বাবা বড় মানুষ ছিলেন; সন্তানরা বাবার মতোই অনেক কিছু পেয়েছে।’ সাইমন্ডসের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি আরও বলেছেন, ‘সবার জন্যেই সাইমন্ডস সময় বের করে নিতো।’
অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসের মৃত্যুতে তার সতীর্থ অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, পাকিস্তানের ফাস্ট বোলার শোয়েব আখতার এবং অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক অ্যালান বর্ডারসহ একে একে শোক জানাচ্ছেন অনেকে।
তিনি ১৯৯৮ থেকে ২০০৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ২৬টি টেস্ট, ১৯৮ ওয়ানডে এবং ১৪টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসের জন্ম ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে। ইংলিশ বাবা-মায়ের সঙ্গে ছোটবেলাতেই অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমান এই হার্ড হিটার ব্যাটসম্যান। পরে সেখানেই শুরু করেন ক্রিকেট, ঘরোয়া লিগে দারুণ পারফর্ম করে অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলেও জায়গা করে নেন।
১৯৯৮ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখা সামইন্ডসের টেস্ট অভিষেক ২০০৪ সালে। এই অলরাউন্ডার ২৬ টেস্টে ৪০.৬১ গড়ে করেছেন ১,৪৬২ রান, আর উইকেট ২৪টি। ওয়ানডেতে ছিলেন অবশ্য দুর্দান্ত, ১৯৮ ম্যাচে ৫,০৮৮ রানের সঙ্গে পেয়েছেন ১৩৩ উইকেট। সাইমন্ডস অস্ট্রেলিয়ার ২০০৩ ও ২০০৭ সালের বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য।