Site icon নতুন কথা

কেন্দ্রের প্রস্তাবে সাড়া দেননি ভারতের কৃষক নেতারা

কৃষি আইন বাতিল করেই ঘরে ফিরবেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কেন্দ্র চায় দেড় বছরের জন্য আইনের স্থগিত। প্রস্তাব আন্দোলনকারী কৃষক নেতাদের কাছে। কিন্তু কৃষক নেতারা সরকারকে সাফ জানিয়ে দিলেন, কিছু সময়ের জন্য স্থগিত নয়, কৃষকের মৃত্যু পরোয়ানা তিন কৃষি আইন বাতিল করেই ঘরে ফিরবেন। সেইসঙ্গে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আইনি নিশ্চয়তা দিতে হবে। এ প্রস্তাব তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। তাই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষণা করলেন ভারতরে লড়াকু কৃষকরা ২২ জানুয়ারি বিজ্ঞান ভবনে নির্ধারিত বৈঠকে বসেছিলেন তিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও কৃষক নেতারা। ২০ জানুয়ারি বৈঠকে কেন্দ্র দেড় বছরের জন্য আইন স্থগিত রেখে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিল। সরকার ও কৃষকদের একটি কমিটি বানিয়ে আইন খতিয়ে দেখার প্রস্তাবও পেশ করা হয়েছিল। এদিন বৈঠকের শুরুতেই কৃষকরা জানিয়ে দেন সরকারের প্রস্তাব নিয়ে সাধারণসভা করা হয়েছে। কৃষক সংগঠনগুলি একমত যে এই প্রস্তাব মেনে নেওয়া যাবে না। সরকারকে তিন আইন তুলে নিতেই হবে। এদিন বৈঠকের পরেই কৃষিমন্ত্রী নিজেই কৃষক আন্দোলনের বিরুদ্ধে কুৎসায় নেমে পড়েছেন। তিনি দাবি করেন, কিছু শক্তি আছে যারা চাইছে না আন্দোলন উঠে যাক। বাইরের শক্তি রয়েছে। কায়েমী স্বার্থবাদী শক্তি প্রতিবাদ জিইয়ে রাখতে চাইছে। সরকার অনেক প্রস্তাব দিয়েছে কিন্তু আন্দোলনের পবিত্রতা চলে গেলে কোনো সমাধান সম্ভব নয়। এদিন এই আন্দোলনকে পাঞ্জাব, হরিয়ানার আন্দোলন বলে পুনরায় কটাক্ষও করেন।
রাজধানী দিল্লী ঘিরে কৃষকদের প্রতিবাদ প্রায় দু’মাসে পড়ল। নানা কৌশলেও এই আন্দোলনে ফাটল ধরানো যায় নি। তিন আইন প্রত্যাহারের মূল দাবি থেকে কৃষকদের সরানোও যায়নি। সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যে কৃষি আইন বাস্তবায়ন স্থগিত রাখার নির্দেশও দিয়েছে। সরকারের সর্বশেষ প্রস্তাবের মধ্যে আইনি ফাঁকের কথা বিশিষ্ট আইনজীবীরাও উল্লেখ করেছেন। সংসদে পাশ হওয়া আইন সরকার নিজের ইচ্ছায় স্থগিত রাখতে পারে না। অর্ডিন্যান্স বা সংসদে আইন পাশ করিয়েই তা করতে হবে। সংসদে যখন আইন পাশ করাতেই হবে তখন কৃষকের দাবি মেনে তিন আইন প্রত্যাহার করা হবে না কেন, এই প্রশ্ন উঠেছে। এদিন সারা ভারত কৃষকসভার তরফেও এই প্রশ্ন তুলে বলা হয়েছে, তিন মন্ত্রীর কমিটি যে আইন স্থগিত রাখার প্রস্তাব দিয়েছে তার কি কোনো আইনি বৈধতা রয়েছে? আইনজ্ঞদের অভিমত, স্থগিত রাখার অধিকারই নেই সরকারের। সংসদের অধিকারে তা হস্তক্ষেপ এবং তা আইনের চোখে টিকবে না। বরং কৃষকরা যে তিন আইন প্রত্যাহারের দাবি তুলেছে তা আইনজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করেই উত্থাপিত হয়েছে। মূল দাবি লঘু করা যায় না।
এদিকে ২৬ জানুয়ারি কৃষক প্যারেডের প্রস্তুতি তুঙ্গে উঠেছে। কৃষক মোর্চা ডাক দিয়েছে, দিল্লি ও তার সংলগ্ন এলাকার মানুষ দলে দলে এই প্যারেডের সমর্থনে সমবেত হন। দিল্লির আউটার রিং রোড ধরেই এই ট্রাক্টর প্যারেড হবে। পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান থেকে হাজার হাজার ট্রাক্টর রওনা দিতে শুরু করেছে। কৃষকরা প্যারেডের মতোই ট্যাবলো সাজাচ্ছেন। সেখানে কৃষক জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হবে। অন্যদিকে, দিল্লি পুলিশ সিঙ্ঘু, টিকরির সীমান্তে যেভাবে ব্যারিকেড সাজাচ্ছে তা পুলিশের উদ্দেশ্য নিয়েই প্রশ্ন তুলছে। কংক্রিটের চাই, লোহার জাল, কনটেনার দিয়ে রাস্তা আটকানো হচ্ছে। রাজ্যে রাজ্যেও কিষাণ প্যারেড হবে।

Exit mobile version