নতুন কথা প্রতিবেদন: গৃহকর্মীদের সুরক্ষা দিতে তাদের জন্য আইন করতে হবে। নিদেনপক্ষে তাদের শ্রম আইনের অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। ২০১৫ সালে গৃহকর্মীদের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করা হলেও তার কার্যকরিতা নাই। এ কারণে করোনাকালে তারা সর্বাপেক্ষা ক্ষতিগ্রস্থ হলেও সামান্য ত্রাণটুকুও মেলে নাই। মেস-বাড়ী বন্ধ হয়ে যাওয়ায় করোনার কারণে বাড়ীর কাজ চলে যাওয়ায় অধিকাংশ গৃহকর্মীকে গ্রামে চলে যেতে হয়েছে। এখনও যদিও তারা কিছু কিছু কাজে ফিরেছে। কিন্তু বেতন কমে গেছে এক তৃতীয়াংশ। অন্যদিকে এরা যে করোনা টিকা নেবে তারও কোন বিধান রাখা হয়নি। নিজেদের সুরক্ষায় নিশ্চিত করতে হলে সংগঠন গড়া ছাড়া তাদের কোন বিকল্প নাই। আইন থাকলে অথবা শ্রম আইনে অন্তর্ভূক্ত করা হলে তাদের পক্ষে সংগঠন করা ও দাবি তোলা সহজ হবে। গৃহশ্রমিকদের আয়কে জিডিপিতে অন্তর্ভূক্ত করা হলে দেশের জিডিপি ব্যাপকভাবে পরিবর্তন সাধিত হবে।
আজ জাতীয় গার্হস্থ্য শ্রমিক ইউনিয়নের ৬ষ্ঠ জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধন করতে গিয়ে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি একথা বলেন। সুনামগঞ্জের সংখ্যালঘু গ্রামে হেফাজতী তা-বের উল্লেখ করে মেনন বলেন, ওরা বঙ্গবন্ধুর জম্মদিনকেই আক্রমণের জন্য বেছে নিয়েছিল। এই আক্রমণ কিছু মানুষের স্বতঃস্ফুর্ত কিংবা আবেগী কাজ নয়, এটা পরিকল্পিত। হেফাজতের নেতাদের নির্দেশেই যে এটা হয়েছে তার প্রমাণ আগের দিন মাইক প্রচার করে হামলার জন্য প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। শাল্লা উপজেলা অথবা কেন্দ্রীয় হেফাজতী নেতারা এখন পর্যন্ত এই হামলার নিন্দা জানানি কেন? আসলে তারা সরকারকে এবং অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক শক্তিকে একটা বার্তা দিতে চেয়েছে, এখন তারা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছে।
সংগঠনের সভাপতি আমেনা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের প্রধান অতিথি ছিলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট শ্রমিকনেতা আবুল হোসাইন, কৃষক নেতা মোস্তফা আলমগীর রতন, প্রধান বক্তা ছিলেন আন্তর্জাতিক গৃহশ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এলিজাবেথ ট্যাং। বক্তব্য রাখেন এড. জোবায়েদা পারভিন, এড. জাহানারা হক, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন যুবনেতা মোঃ তৌহিদ, ছাত্রনেতা অতুলন দাস আলো প্রমুখ। সম্মেলন পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মুর্শিদা আখতার।
প্রধান অতিথির ভাষণে বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, গৃহশ্রমিকদের সুরক্ষায় সরকার প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। শ্রম আইন সংশোধনী কাজ চলছে, সংশোধনী কমিটি সুপারিশ করলে সরকার গৃহশ্রমিকদের শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্তি করবে। গৃহশ্রমিকদের সমাজিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে সমাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় নিয়া আসা হবে। এব্যাপারে তিনি সমাজের সকল স্তরের মানুষের সাহায্য-সহযোগিতা কামনা করেন।
সম্মেলনের শুরুতে গণসাংস্কৃতিক মৈত্রী জাতীয় সঙ্গীত ও গণসংগীত পরিবেশন করে এবং সভার শুরুতে এযাবতকালে করোনায় দেশে বিদেশে গৃহশ্রমিকসহ যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের সকলের স্মৃতির প্রতি শোক প্রকাশ করা হয়।