Wednesday,4,December,2024
22 C
Dhaka
Wednesday, December 4, 2024
Homeজাতীয়ঘূর্ণিঝড় ইয়াস’র দৃষ্টি ভারতের ওডিশা ও পশ্চিমবঙ্গের উপকূল

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস’র দৃষ্টি ভারতের ওডিশা ও পশ্চিমবঙ্গের উপকূল

নতুন কথা ডেস্ক : পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ইয়াস যে পথে এগোচ্ছে, তাতে এই ঝড় অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ভারতের ওডিশা ও পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় এলাকার মাঝামাঝিতে আঘাত হানতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে বুধবার (২৬ মার্চ) সকাল নাগাদ ওডিশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছাবে। ওই দিন দুপুর নাগাদ ওডিশার পারাদ্বীপ এবং পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপের মধ্যে ওড়িশার বালাসোরের কাছ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২৫ মে সোমবার সন্ধ্যায় ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, গত ছয় ঘণ্টায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ঘণ্টায় ৭ কিলোমিটার বেগে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়েছে। এটা আরও উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগোবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগামী ১২ ঘণ্টায় শক্তি সঞ্চয় করে ইয়াস প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে। পরের ২৪ ঘণ্টায় আরও শক্তি নিয়ে হয়ে উঠবে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়।
গত বছর ঘূর্ণিঝড় আম্পানও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে প্রথম আঘাত হেনে সুন্দরবন হয়ে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল পেরোনোর সময় ধ্বংসযজ্ঞ রেখে গিয়েছিল। তবে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সম্ভাব্য যে গতিপথ ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর দিয়েছে, তাতে দেখা গেছে, ঝড়টি ওডিশা ও পশ্চিমবঙ্গের মাঝামাঝি উপকূলে আঘাত হানার পর সেটি উত্তর ও উত্তর–পশ্চিমে ঝাড়খন্ডের দিকে চলে যাবে।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, সোমবার সন্ধ্যা ছয়টায় ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ৫৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা থেকে ৬৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৮৫ কিলোমিটার দেিণ অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ঘূর্ণিঝড়টির সর্বশেষ অবস্থান ছিল ভারতের পোর্ট ব্লেয়ার থেকে ৬৭০ কিলোমিটার উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমে, ওডিশার পারাদ্বীপের ৪৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম, বালাসোরের ৫৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম এবং পশ্চিমবঙ্গের দিঘার ৫৮০ কিলোমিটার দণি ও দণি-পশ্চিমে।
এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব এখনও বাংলাদেশের সীমানায় আসেনি। মঙ্গলবার (২৫ মে) সন্ধ্যা নাগাদ এর প্রভাব শুরু হতে পারে। এখন যে বৃষ্টি হচ্ছে, তা স্থানীয় আবহাওয়ার কারণে। তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় আকাশের মেঘমালা তৈরি হয়েছে। তারই প্রভাবে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে তাপমাত্রা বেশ কিছুটা কমে আসবে।’
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, দেশের প্রায় সব বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই বৃষ্টির কারণে তা কমে আসতে পারে। এছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টায় খুলনা,বরিশাল, চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু জায়গায় দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বৃষ্টি হতে পারে।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সীতাকুন্ডে ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে ২৫ মে ঢাকায় ৩৮ দশমিক ১, ময়মনসিংহে ৩৭, চট্টগ্রামে ৩৭ দশমিক ৮, সিলেটে ৩৮ দশমিক ৩, রাজশাহীতে ৩৭ দশমিক ৮, রংপুরে ৩৭ দশমিক ৫, খুলনায় ৩৬ এবং বরিশালে ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে কুতুবদিয়ায় ৩৫ মিলিমিটার। এছাড়া চুয়াডাঙ্গায় ৩৩, কক্সবাজারে ২৮, গোপালগঞ্জে ২৬, সাতক্ষীরায় ১৬, খেপুপাড়ায় ১৪, খুলনায় ১৩, মাইজদীকোর্টে ৯, পটুয়াখালীতে ৬, রাজশাহী ও কুমিল্লায় ৫, বদলগাছি, চট্টগ্রামে ৪, টেকনাফে ৩, সন্দ্বীপে ২, রাঙামাটিতে ১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া যশোর, ঈশ্বরদী ও হাতিয়ায় সামান্য বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।

সর্বশেষ