সামগ্রিকভাবে চা শ্রমিকদের জন্য বিদ্যমান আইনি মানদণ্ডের তুলনায় প্রকৃত শ্রমিক অধিকার পরিস্থিতি অসন্তোষজনক বলে গবেষণা প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস)।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘চা খাতে নিয়োজিত নারী শ্রমিকদের অধিকার ও শোভন কাজের বিদ্যমান পরিস্থিতি’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফলে এ তথ্য জানায় বিলস।
গবেষণা প্রতিবেদনে বিলস জানায়, বাংলাদেশের চা শ্রমিকদের অধিকার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে গিয়ে দেখা গেছে- সামগ্রিকভাবে চা শ্রমিকদের জন্য বিদ্যমান আইনি মানদণ্ডের তুলনায় প্রকৃত শ্রমিক অধিকার পরিস্থিতি অসন্তোষজনক। চা বাগানে কর্মসংস্থানের সুযোগ খুবই সীমিত এবং চাকরির নিরাপত্তা সুরক্ষিত নয়।
চা শ্রমিকদের ৯৫ ভাগ স্থায়ী এবং পাঁচ ভাগ অস্থায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। শতকরা ৯৭ ভাগ নারী শ্রমিকের কোনো নিয়োগপত্র নেই। শতকরা ৮৭ ভাগ শ্রমিকের কোনো পরিচয়পত্র নেই। শতকরা ১০ ভাগ নারী শ্রমিক পরিচয়পত্র কি তা জানেন না। শতকরা ১০০ ভাগ শ্রমিক বলেছেন চা বাগানে তাদের কোনো সার্ভিস বুক নেই। শতকরা ৪৯ ভাগ শ্রমিক বলেছেন অতিরিক্ত আয়ের জন্য তারা ১ থেকে ২ ঘণ্টা ওভারটাইম করেন।
আয়োজকরা জানান, বাংলাদেশে চা শিল্পে নারী শ্রমিকদের ক্ষমতায়ন, শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সম্প্রতি এ গবেষণা সম্পন্ন হয়। গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল- বাংলাদেশের নারী চা শ্রমিকদের সামগ্রিক অধিকার পরিস্থিতি চিহ্নিত করা, চা বাগানে নারী শ্রমিকদের শোভন কাজ পরিস্থিতি ও আর্থসামাজিক অবস্থা বিশ্লেষণ, ভ্যালি এবং পঞ্চায়েত কমিটির ইউনিয়ন নেতাদের জ্ঞান ও দক্ষতা মূল্যায়ন এবং নারী চা বাগান শ্রমিকদের অবস্থা সম্পর্কে জাতীয় পর্যায়ের নেতাদের পরামর্শ গ্রহণ করা।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, যেখানে ৫০ ভাগের বেশি নারী শ্রমিক, সেখানে নারী শ্রমিকদের জন্য কোনো যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি নেই। চা বাগানের শ্রমিকদের জন্য ভূমি অধিকারের বিষয়টিও পরিষ্কার নয়। সরকার চা বাগানের জমি দিয়েছে চা চাষ করতে কিন্তু দেখা গেছে, সেখানে অন্য ফসলও চাষ করা হয়। এছাড়া চা শ্রমিকদের সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর যথাযথ উদ্যোগও লক্ষ্য করা যায় না।
বিলস ভাইস চেয়ারম্যান মো. মজিবুর রহমান ভূঞাঁর সভাপতিত্বে এবং বিলস উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য নইমুল আহসান জুয়েলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিলস উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য কামরুল আহসান, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দী, বিলস পরিচালক কোহিনূর মাহমুদ, বিলস এর উপ-পরিচালক মনিরুল ইসলাম প্রমুখ।