জুবায়ের আহমেদের অবস্থা আশঙ্কাজনক, আহত আরো ৬জন
নতুন কথা প্রতিবেদন: বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর পূর্বঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসাবে আজ ১৯ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টায় শতভাগ শিক্ষার্থীকে করোনা টিকা প্রদান, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিয়ে ক্লাস–পরীক্ষা গ্রহন, শিক্ষার্থীদের ন্যুনতম ৫০% বেতন–সেমিস্টার ফি মওকুফ করা, চাকরীতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি করে নতুন করে প্রজ্ঞাপণ ঘোষণা করা, ১৭ সেপ্টেম্বরকে শিক্ষা দিবস হিসাবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান করার দাবিতে সচিবালয় ঘেরাও করতে গেলে পুলিশ বাঁধা দেয়। এর একপর্যায়ে ছাত্র মৈত্রীর নেতাকর্মীরা ব্যারিকেড ভেঙ্গে ফেললে পুলিশ হামলা চালায়। এসময় কেন্দ্রীয় সহ–সভাপতি রাশেদ খান, ইয়াতুন্নেসা রুমা, সাংগঠনিক সম্পাদক অদিতি আদৃতা সৃস্টি, সাহিত্য, সাংস্কৃতিক ও ক্রিড়া সম্পাদক সুমাইয়া পারভীন ঝরা, ঢাকা মহানগর নেতা মালা আক্তার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্র মৈত্রীর সাংগঠনিক সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ। এদের মধ্যে জুবায়েরের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার সিটিস্ক্যানসহ অন্যান্য পরীক্ষাগুলো করা হচ্ছে। জুবায়েরসহ ৬জন বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিবির পর্যবেক্ষনে রয়েছে। এছাড়াও আরো ৭ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি কাজী আব্দুল মোতালেব জুয়েল বলেন, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দেশের ছাত্র সমাজের ন্যায্য দাবি আদায়ে লড়াই সংগ্রাম করে আসছে। করোনা অতিমারীর শুরু থেকেই ছাত্র মৈত্রী বিভিন্ন সময়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপি প্রধানের মাধ্যমে সরকারকে বারংবার শতভাগ শিক্ষার্থীকে করোনা টিকা নিশ্চিত করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে ক্লাস–পরীক্ষা নেয়ার দাবি জানিয়েছিলাম। গত ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল–কলেজগুলো খুলে দেয়া হলেও এখনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে তাদের শিক্ষাজীবনে নেমে এসেছে দুই বছরের সেশনজট। আমরা এর অবসান চেয়েছি। গত বছরের শুরুতে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ নেয়া হলে আমরা সেসময় বলেছিলাম, সকল শিক্ষার্থীকে প্রযুক্তি সহায়তা ও বিনামূল্যে ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করা না হলে শতভাগ শিক্ষার্থীরা এই অনলাইন ক্লাসের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে, হয়েছেও তাই। দেশের প্রায় ষাট শতাংশ শিক্ষার্থী এই অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। উপরন্তু তাদের কাছ থেকে বেতন–সেমিস্টার ফি একরকম জোর করে আদায় করেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। আমরা শিক্ষার্থীদের ন্যুনতম ৫০% বেতন– সেমিস্টার ফি মওকুফ করার দাবি নিয়ে সচিবালয়ের সামনে গিয়েছি।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অতুলন দাস আলো বলেন, করোনাকালে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতার কারণে শিক্ষাজীবন থেকে দু’বছর ঝড়ে যাওয়ার সরাসরি প্রভাব পড়বে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন শেষে যখন তারা কর্মজীবনে প্রবেশ করতে যাবে। করোনাকালীন এই সময়ে শতভাগ শিক্ষার্থীই এই ক্ষতির সম্মুখিন হবে। আমরা সবার জন্য চাকরিতে আবেদনের বয়স বৃদ্ধির দাবি নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশি এই হামলা মূলত দেশের প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীর স্বার্থকে হামলা করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই চালিয়ে যাব।
এই হামলার প্রতিবাদে আগামীকাল ছাত্র মৈত্রীর উদ্যোগে দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয়া হয়েছে। ছাত্র মৈত্রীর নেতৃবৃন্দ অপরাপর মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল ছাত্র সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ন্যায্য দাবি আদায়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যুগপথ আন্দোলন গড়ে তোলার এখনই সময়।