আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আফগানিস্তানে তালেবানের কঠোর বিধিনিষেধে কাবুলের কয়েক ডজন বিউটি পার্লার বন্ধ হয়ে পড়েছে; নারীদের কর্মসংস্থানের একমাত্র সীমিত ক্ষেত্রেও আড়ালিকভাবে আঘাত হানা হয়েছে, এমনই কথা জানিয়েছে অনলাইন জিও নিউজ। তালেবানের নীতিমালা অনুযায়ী, পার্লারগুলোতে তল্লাশি চালিয়ে সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, এবং তাদের পুরুষ আত্মীয়দের কাছ থেকে লিখিত অঙ্গীকার গ্রহণ করা হয়েছে যে তারা আর ওই কাজ করবেন না। অনেক বিউটিশিয়ান অভিযোগ করেছেন, এ সময় তাঁদের মোবাইল ফোনেও নজরদারি করা হয়েছে।
এই নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে ২০২৩ সালে জুলাই মাসে, যখন সরাসরি নির্দেশনা জারি হয়—তালেবানের সর্বোচ্চ নেতার মৌখিক আদেশে—সরাসরি পাঠানো হয় বিউটি পার্লারগুলো বন্ধে। তখন এক মাসের মেয়াদ দেওয়া হয় তাদের ব্যবসা বন্ধ করার এবং কাঁচামাল ব্যবহারের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য । এরপর থেকে অনেক নারী ঘরোয়া বা গোপন বৈঠকে পার্লার চালাতে বাধ্য হতেন, যা ছিল তাদের জীবিকার একটি অপ্রত্যাশিত, কিন্তু জরুরি বিকল্প ।
তালেবানের যুক্তি ছিল, বিউটি পার্লারগুলোতে মেকআপ, আঙ্গুলের নখের পলিশ, ফিলার বা কৃত্রিম চুল ব্যবহারের মতো কার্যক্রম শারীরিক পবিত্রতা–বিশেষত নামাজের আগে ওয়ু (ablution) করা কঠিন করে তোলে, যা ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য নয় । এছাড়া এ ধরনের অপ্রয়োজনীয় সৌন্দর্যচর্চা দামী খরচের বিষয় হিসেবে বিবেচিত হয় এবং “অও-ইসলামিক” কার্যক্রম হিসেবে বর্ণিত হয়েছে।
তালেবান প্রশাসনের এই কঠোর বিধিনিষেধে নারীরা একটি নিরাপদ কর্মক্ষেত্র ও সামাজিক মিলনস্থল হারিয়েছেন। বিউটি পার্লার ছিল তাদের ‘নারী মাত্রার নিরাপদ শ্রীফল’, যেখানে তারা ঘর ছাড়াই আড্ডা দিতে পারতেন এবং কাজ করে জীবিকা চালাতে পারতেন। এই মর্মান্তিক পরিস্থিতিতে, অনেক নারী গোপনে, বিপদসঙ্কুল পথে নিজের দক্ষতায় একাধিক পরিবারকে ভরসা দিয়েই চলেছেন – এগুলো এখন নারীদের ছোট্ট প্রতিরোধের গল্প।
তালেবানের এই পদক্ষেপ শুধু নারী শ্রমের স্থানীয় সংকট নয়; এটি আফগান নারীদের মর্যাদা, অটোনমি এবং সামাজিক স্বাধীনতার উপর আরও গভীর আঘাত।



