রাজশাহী ডেস্ক: দেওবন্দ নয়, হেফাজতে ইসলামের নেতারা সবাই তালেবানের অনুসারী বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। হেফাজত দেওবন্দের অনুসারী প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য খণ্ডন করে মেনন এ কথা জানান।
সোমবার (১৪ জুন) জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে রাশেদ খান মেনন এসব কথা বলেন।
এ সময় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
রাশেদ খান মেনন বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা হেফাজতের তাণ্ডব দেখেছি। এই তাণ্ডবের সঙ্গে বিএনপি জড়িত ছিল সেটা বিএনপির মহাসচিবের বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট। বিএনপির মহাসচিব বলছেন, হেফাজত তাণ্ডব করেনি, সরকার করেছে। কওমি মাদ্রাসার সনদকে যখন মূল ধারা স্বীকৃতি হলো তখন আমি বলেছিলাম আমরা ভুল করলাম কিনা ভেবে দেখা দরকার। তখন বিরোধী দল জাতীয় পার্র্টির একজন সদস্য বলেছিলেন, আমি ‘ধান ভানতে শিবের গীত গেয়েছি’। প্রধানমন্ত্রীও বলেছিলেন, হেফাজতের নেতারা দেওবন্দের অনুসারী। কিন্তু আসলে হেফাজতের নেতা বাবু নগরী পাকিস্তানের মাদ্রাসায় পড়াশুনা করেছেন। বাস্তবে হেফাজতের সবাই তালেবানের অনুসারী।
রাশেদ খান মেনন আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সংসদীয় কমিটি দেখলাম মুক্তিযোদ্ধাদের গার্ড অব অর্নারে নারী কর্মকর্তাদের বাদ দেওয়ার কথা বলেছে। যে নারীরা জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করলো, জীবন দিল এই প্রস্তাব করে তাদের অবমাননা করা হলো। এ ক্ষেত্রে যারা ধর্মীয় ফতোয়া দিয়েছেন এই ধর্মীয় ফতোয়া দেওয়ার অধিকার তাদের নেই। আমি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীকে বলবো মুক্তিযোদ্ধাদের গার্ড অব অর্নার দেওয়ার ক্ষেত্রে নারী কর্মকর্তাদের বাদ দেওয়ার যেন সিদ্ধান্ত না নেওয়া হয়। এটা করা হলে মুক্তিযুদ্ধের অবমাননা করা হবে।
মেনন বলেন, অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্য খাতে গত এক বছরে নানাবিধ দুর্নীতি প্রকাশ পেয়েছে। কোভিডে মানুষের জীবন রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর পদক্ষেপ আমলাতান্ত্রিক কারণে ব্যাহত হচ্ছে। পিপিই, মাস্ক নিয়ে দুর্নীতি আমরা দেখেছি। সাহেদ ও সাবরিনাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু যারা ছবি তুলে চুক্তি করলো তাদের কিছুই হয়নি। করোনার ভ্যাকসিন আমদানি করতে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে সরকারি ক্রয় নীতি ভঙ্গ করা হয়েছে। এর ফলে পরিণতি কি হয়েছে সেটা আমরা দেখতে পাচ্ছি। আগামী মাসে দেশে টিকা আসবে এই নিশ্চয়তা নেই। বাজেটে টিকার কোনো রোড ম্যাপ দেওয়া হয়নি। যে গরিব মানুষকে দুই বার ২ হাজার ৫০০ টাকা করে দেওযা হয়েছে তার এক-তৃতীয়াংশ সঠিক হাতে যায়নি। করোনাকালে কীভাবে অভিজাত শ্রেণি সৃষ্টি হয়েছে আমরা তা দেখেছি। বাজেটে সামাজিক খাতে বরাদ্দের মূল টাকা চলে যাচ্ছে পেনশন স্কিমে।