কেন্দ্রীয় কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠক
নতুন কথা রিপোর্ট : ‘‘বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে গৃহীত প্রস্তাবে বাংলাদেশের নির্বাচন পরিস্থিতি ক্রমাবনতিতে গভীর হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিশেষত : সম্প্রতি সময়ে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনসমূহে বিরোধীদল, এমনকি ক্ষমতাসীন দলের সাথে জোটভুক্ত দলসমূহের নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে অসম্ভব করে তোলা হয়েছে। নির্বাচনে রাষ্ট্রযন্ত্রের হস্তক্ষেপ ও নিয়ন্ত্রণ এখন আর গোপন নয় প্রকাশ্য। নির্বাচন কমিশন তা পরিপূর্ণ জ্ঞাত থাকার পরও সে সম্পর্কে কোন ব্যবস্থা নেয় না। জিয়া-এরশাদ আমলের হুন্ডা-গুন্ডা ভোটারহীন নির্বাচনের ঐতিহ্যও এখন ম্লান হয়ে গেছে। আগামী ইউপি নির্বাচনেও যদি এর পুনরাবৃত্তি ঘটে তা’হলে দেশের মানুষ নির্বাচনী ব্যবস্থা সম্পর্কে পরিপূর্ণ আস্থা হারিয়ে ফেলবে। এখন যেমন রাউজান ফেণীসহ কয়েকটি অঞ্চলে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার অর্থই ‘নির্বাচন’ হয়ে যাওয়া, তারই বিস্তৃতি ঘটবে সারা দেশে।’’
শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) পার্টির সভাপতি কমরেড রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল(জুম) মাধ্যমে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রিয় কমিটির সভায় নির্ধারিত আলোচ্য বিষয়ের প্রেক্ষিতে পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশা প্রস্তাবনা উত্থাপন করলে উপরে উল্লেখিত প্রস্তাবসহ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রস্তাব গৃহিত হয়
ওয়ার্কার্স পার্টির প্রস্তাবে বলা হয়, ভোট প্রদানে ইভিএম ব্যবস্থা প্রবর্তনের মধ্যদিয়ে ভোট বাক্স পূর্বাহ্নে পূর্ণ করে রাখা জোর করে ব্যালটে সিল প্রদান, ব্যালট ছিনিয়ে নেয়া, ভোটের ফলাফল পাল্টে দেয়ার যেসব অনিয়ম দূর করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল তার দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। ইভিএম-এ কারচুপির সুযোগ রাখার জন্যই নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরবর্তীকালে ভোটের ফলাফল নিরীক্ষার জন্য ভোটার ভেরিফায়াবেল পেপার অডিট ট্রেইল (ভিভিএটি) রাখার কারিগরী উপদেষ্টা কমিটি সুপারিশকেও উপেক্ষা করেছিল। সম্প্রতি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে ফলাফলের আসঙ্গতি নিয়ে অভিযোগ উঠেছে তা ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণকেই প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।
দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থায় জিয়া-এরশাদ খালেদা জিয়া ভোট কারচুপির যে সকল ব্যবস্থা রেখেছিল তাকে দূর করে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগকে নিষ্কন্টক করা নির্বাচনের উপর রাষ্ট্রযন্ত্র ও প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ দূর করার জন্য বর্তমানের প্রধানমন্ত্রী ১৪দল নেত্রীর নেতৃত্বে ১৪দল ৩৩-দফা নির্বাচনী সংস্কার প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল এবং তা নিয়ে জানবাজী রক্তাক্ত লড়াই করেছিল। তার ফলেই ২০০৮ সালে একটি সুষ্টু নির্বাচন সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে তার যে অধ:পতন ঘটেছে তার থেকে নির্বাচনী ব্যবস্থার পুণরুদ্ধার না করলে দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যত পরিপূর্ণ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। বর্তমান ক্ষমতাসীন দলসহ সমস্ত রাজনৈতিকদলই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়বে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ওয়ার্কার্স পার্টি মুহুর্তেই সব কিছু সুষ্টু ও সুন্দর রূপ নেবে বলে তা মনে করেনা। এর জন্য অর্থনীতি রাজনীতি ও সামাজিক ক্ষেত্রে দুনীর্তি-দুবৃত্তায়নে ও সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটেছে তার জন্য ও দৃঢ় সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে। ওয়ার্কার্স পার্টি এই মুহুর্তে যে সব স্থানীয় সরকার নির্বাচন হচ্ছে এবং এপ্রিল দেশব্যাপী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে তাতে যাতে সকলদল সঠিকভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে এবং জনগণ যাতে ভোটপ্রদান করতে পারে তা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছে।
ওয়ার্কার্স পার্টির প্রস্তাবে এই সাথে নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে যে আর্থিক অনিয়ম লুটপাট ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে অনৈতিক আচরণের সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে দেখা ও নির্বাচন কমিশনকে যথাযোগ্য আস্থাভাজন প্রতিষ্ঠান হিসাবে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার আহবান জানানো হয়েছে।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপযাপন : ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশাকে আহবায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সকল সদস্য ও বিকল্প-সদস্যকে সদস্য করে সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটি গঠন ও ২৭ মার্চ ঢাকা মহানগরে বর্ণাঢ্য জাতীয় পতাকা ও লাল পতাকার মিছিল ও বছরের বায়ান্ন সপ্তাহে জেলা-উপজেলাসহ নি¤œতর ইউনিটে একই কর্মসূচী পালন। ১৩ এপ্রিল সুবর্ণজয়ন্তীর কেন্দ্রীয় আলোচনা, শ্রমিক-কৃষক-নারী, ছাত্র-যুব, সাংস্কৃতিক ফ্রন্টের বছরব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। করোনা পরিস্থিতি অনুযায়ী কর্মসূচীর পুনর্বিন্যাস করা যাবে।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে আলোচনা সভা : বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি মুজিববর্ষ উপলক্ষে আগামী ১৩ মার্চ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন সেমিনার হলে “ বঙ্গবন্ধু ও চার মূলনীতি” শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত করবে।
২২ ফেব্রুয়ারি স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক
পূর্ববাংলা ঘোষণা দিবস পালন : বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ১৯৭০-এর ২২ ফেব্রুয়ারি ঘোষিত ‘স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা ঘোষণা দিবসে ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে-বামপন্থীদের ভূমিকা শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত করবে। ভার্চুয়াল ও শারিরীক উভয় পদ্ধতিতে আয়োজিত এই অনুষ্ঠান ২২ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন সেমিনার হলে অনুষ্ঠিত হবে।
শোক প্রস্তাব : বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক সম্প্রতিক সময়কালে পার্টির পলিটব্যুরোর সাবেক সদস্য ও কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মানিত সদস্য শফিউদ্দীন আহম্মদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শেখ সিরাজুল ইসলাম ভদু, সাবেক বিকল্প সদস্য আবুল হোসেনসহ করোনাকালে যে সব পার্টি সভ্য ও শুভানুধ্যায়ী মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের জন্য শোক প্রস্তাব গ্রহণ করেছে পার্টি একই সাথে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী ১৪ দলের সমন্বয়ক মো: নাসিম, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা হায়দার আনোয়ার খান জুনো,বিশিষ্ট নারীনেত্রী আয়শা খানমসহ করোনাকালে প্রয়াত ব্যক্তিদের সম্পর্কে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করে এবং দাড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করে।
সভায় বক্তব্য রাখেন কমরেড আনিসুর রহমান মল্লিক, কমরেড ড. সুশান্ত দাস, কমরেড মাহমুদুল হাসান মানিক, কমরেড নুর আহমদ বকুল,কমরেড কামরূল আহসান,কমরেড আমিনুল ইসলাম গোলাপ, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম হক্কানী,কমরেড নজরুল হক নিলু,কমরেড লিয়াকত আলী লিকু, কমরেড তপন কুমার দত্ত চৌধুরী,কমরেড অধ্যাপক ইব্রাহীম খলিল,কমরেড আবু হানিফ, কমরেড এড.নজরুল ইসলাম,কমরেড দিপন্কর সাহা দিপু,কমরেড এড.জোবায়দা পারভীন,কমরেড রফিকুল ইসলাম,কমরেড এড,কাজি মাসুদ,কমরেড আবুল হোসাইন,কমরেড জাকির হোসেন রাজু,কমরেড মোস্তফা আলমগীর রতন,কমরেড মহিবুল্লাহ মোড়ল, কমরেড দেবাশীষ প্রামানিক দেবু,কমরেড ইন্দ্রনী সেন শম্পা প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।