দেশে বর্তমানে দারিদ্র্যের হার সবচেয়ে বেশি রংপুর ও বরিশাল বিভাগে। বিভাগ দুটিতে দারিদ্র্যের হার যথাক্রমে ৪২.৯ শতাংশ এবং ৩২.৫ শতাংশ। তবে, বর্তমানে দেশে জাতীয় পর্যায়ে দারিদ্র্যের হার ২০.৭ শতাংশ। এরমধ্যে গ্রামীণ এলাকায় দারিদ্র্যের হার ২১.৬ শতাংশ এবং শহরাঞ্চলে ১৮.৭ শতাংশ।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) ও যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গেল বছরের অক্টোবর ও নভেম্বরে দেশজুড়ে খানা পর্যায়ে পরিচালিত এ জরিপ চালিয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সানেম। এই জরিপের আওতায় ছিল দেশের ৬৪ জেলায় ৯ হাজার ৬৫টি খানা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে দেশে জাতীয় পর্যায়ে দারিদ্র্যের হার ২০.৭ শতাংশ। এরমধ্যে গ্রামীণ এলাকায় দারিদ্র্যের হার ২১.৬ শতাংশ এবং শহরাঞ্চলে ১৮.৭ শতাংশ। বাংলাদেশে গ্রামীণ দারিদ্র্যের হার ২০১৮ সালে ছিল ২৪.৫ শতাংশ থেকে ২০২৩ সালে ২১.৬ শতাংশ-এ হ্রাস পেলেও শহুরে দারিদ্র্যের হার ১৬.৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৮.৭ শতাংশ হয়েছে। এছাড়া বিভাগীয় পর্যায়ে সর্বোচ্চ দারিদ্র্যের হার রংপুর ও বরিশালে; যথাক্রমে ৪২.৯ শতাংশ এবং ৩২.৫ শতাংশ।
জরিপে বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের ক্ষেত্রেও একই ধরনের প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়েছে। গ্রামীণ বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের হার ৩০.৪ শতাংশ থেকে নেমে এসেছে ২৭.৬ শতাংশে, অন্যদিকে শহরাঞ্চলে তা ২০১৮ সালে ১৬.৮ শতাংশ থেকে ২০২৩ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ শতাংশে।
গবেষণায় মৌলিক চাহিদার খরচভিত্তিক দারিদ্র্য এবং বহুমাত্রিক দারিদ্র্য পদ্ধতি, উভয় ক্ষেত্রেই শহুরে দারিদ্র্য বৃদ্ধির পেছনের দুটি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথমত- নাজুক দরিদ্রদের (যারা দারিদ্র্যসীমার ওপরে থাকলেও যে কোনো ধাক্কার প্রভাব তাদের দারিদ্র্যসীমার নিচে নামিয়ে দিতে পারে) একটি বড় অংশ শহুরে অঞ্চলগুলোতে বসবাস করে, যারা দারিদ্র্যের হাত থেকে বাঁচতে অথবা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ইত্যাদি কারণে শহরে স্থানান্তরিত হয়েছিল। সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধির মতো উল্লেখযোগ্য ধাক্কাগুলো এই নাজুক লোকদের দারিদ্র্যসীমার নিচে নামিয়ে দিতে পারে। এবং দ্বিতীয়ত, শহুরে এলাকাগুলো বিদ্যমান সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিগুলোতে ব্যাপকভাবে আওতাভুক্ত না, যার ফলে অনেক শহুরে পরিবার ধাক্কার প্রতি আরও ঝুঁকিপূর্ণ থাকে।