রবিবার,১৬,নভেম্বর,২০২৫
28 C
Dhaka
রবিবার, নভেম্বর ১৬, ২০২৫
প্রচ্ছদজাতীয়নারী প্রতিনিধিত্ব: সংসদে সরাসরি ৫ শতাংশেও ইসলামপন্থি দলগুলোর ‘অনীহা’

নারী প্রতিনিধিত্ব: সংসদে সরাসরি ৫ শতাংশেও ইসলামপন্থি দলগুলোর ‘অনীহা’

“দেশের জনসংখ্যার ৫১ শতাংশ নারী। কিন্তু এখনও নারীর রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয়নি,”

জুলাই-অগাস্টের আন্দোলনে নারীরা সামনের সারিতে থাকলেও বদলে যাওয়া বাংলাদেশের রাজনীতিতে তাদের এগিয়ে আসার বাধা কী দূর হয়েছে? জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুলাই সনদের যে চূড়ান্ত খসড়া তৈরি করেছে, তাতে যে বাধা দূর হয়েছে, সেটি বলা যায় না।

বরং রাজনৈতিক দলগুলো যে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করতে যাচ্ছে, সেখানে আগামী জাতীয় সংসদের পাঁচ শতাংশ আসনে সরাসরি নারী প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়ার কথা বলা হলেও ইসলামপন্থি দলগুলোর ‘অনীহা’ স্পষ্ট।

সংসদের ৩০০ আসনের সরাসরি নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোকে এক তৃতীয়াংশ বা ৩৩ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছিল ঐকমত্য কমিশন। প্রায় একই দাবি ছিল নারী অধিকারকর্মীদেরও।

ঐকমত্যের সংলাপে সে দাবি পূরণ না হওয়ায়, এমনকি পাঁচ শতাংশ আসনেও সরাসরি নারী প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে ইসলামপন্থি কোনো কোনো দলের ভিন্নমত হতাশ করেছে নারী অধিকারকর্মীদের।

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদারও এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের ইতি টানার পর ঐকমত্য কমিশনের এই সদস্য বলেছিলেন, এখন আর ‘তেমন কিছু করার নেই’।

৩০ দলের মধ্যে ভিন্নমত দিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ। এ দুটি দল ১০০ আসনে সরাসরি ভোটের পক্ষে।

কমিশনের প্রস্তুত করা সেই জুলাই সনদের খসড়ায় বলা হয়েছে, জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষরের পর সাধারণ নির্বাচনে প্রতিটি রাজনৈতিক দল ৩০০ সংসদীয় আসনের জন্য প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেবে; তবে এটি সংবিধানে উল্লেখ করা হবে না।

পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলো ন্যূনতম ১০ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেবে। এ বিষয়ে ভিন্নমত এসেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফতে মজলিস ও বাংলাদেশ নেজামে ইসলামী পার্টির তরফে।

ক্রমান্বয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৩৩ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়নের লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে প্রত্যেক সাধারণ নির্বাচনে ন্যূনতম ৫ শতাংশ বর্ধিত হারে নারী প্রার্থী মনোনয়ন অব্যাহত থাকার কথা বলা হয়েছে জুলাই সনদের চূড়ান্ত খসড়ায়।

এ ক্ষেত্রে ওই তিনটি দলের পাশাপাশি ভিন্নমত দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি।

সনদের খসড়ায় বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে সংরক্ষিত নারী আসনের মেয়াদ ২৫ বছর বাড়ানোয় ২০৪৩ সাল পর্যন্ত তা বহাল থাকবে।

তবে, সাধারণ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে ৩৩ শতাংশ নারী প্রার্থীর লক্ষ্য ২০৪৩ সালের আগে অর্জিত হয়ে গেলে, সংবিধানের সপ্তদশ সংশোধনীর মাধ্যমে প্রবর্তিত বিধান নির্ধারিত সময়ের আগেই বাতিল হবে।

এর ওপর ভিন্নমত দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন, খেলাফতে মজলিস ও নেজামে ইসলামী পার্টি।

জাতীয় সংসদে ১০০ সংরক্ষিত আসনে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন এবং নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে অন্তত ৩৩ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার দাবি করেছিল নারী অধিকারকর্মীদের সংগঠন ‘নারীর রাজনৈতিক অধিকার ফোরাম’।

“দেশে অর্ধেকের বেশি নারী, তারা এখন রাজনীতি সচেতন। তারা ভোট দিতে আসছেন। সে হিসেবে সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে এক তৃতীয়াংশ আসনে সরাসরি নারী প্রার্থী মনোনয়ন ও নারীদের আসনে সরাসরি নির্বাচন জরুরি এবং তদের অধিকার ও সময়ের দাবি।

 

সর্বশেষ