বৃহস্পতিবার,২০,নভেম্বর,২০২৫
23 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২০, ২০২৫
প্রচ্ছদসীমানা পেরিয়েনির্বাচন কমিশন ও বিজেপির যোগসাজশে ভোট চুরির অভিযোগে রাহুল গান্ধীর বিস্ফোরক দাবি

নির্বাচন কমিশন ও বিজেপির যোগসাজশে ভোট চুরির অভিযোগে রাহুল গান্ধীর বিস্ফোরক দাবি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী অভিযোগ তুলেছেন, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন বিজেপি ও নির্বাচন কমিশন যৌথভাবে ভোট চুরি করে গণতন্ত্রকে বিপন্ন করেছে। শুক্রবার বেঙ্গালুরুর এক শোভাযাত্রায় দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, “লোকসভা নির্বাচনের পর মহারাষ্ট্রে উপনির্বাচনে আমাদের জোট জয়লাভ করেছিল, কিন্তু চার মাস পর একই রাজ্যে বিজেপি জয়ী হয়ে গেল। তদন্তে আমরা দেখতে পাই, ওই নির্বাচনে এক কোটিরও বেশি নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছে, আর যেসব এলাকায় এরা ছিল, সেখানেই বিজেপি জিতেছে।”

রাহুলের অভিযোগ, এই নতুন ভোটারদের অন্তর্ভুক্তি, ভোটার তালিকায় জালিয়াতি এবং সন্দেহজনক ভোটার উপস্থিতি—সবই পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, মহাদেবপুরা লোকসভা কেন্দ্রে মোট সাড়ে ছয় লাখ ভোটের মধ্যে এক লাখেরও বেশি ভোট চুরি হয়েছে। কংগ্রেসের প্রায় ৩০-৪০ জন গবেষকের একটি দল ছয় মাস ধরে হাজার হাজার ভোটার রেকর্ড বিশ্লেষণ করে পাঁচটি ভিন্ন কৌশলে কারচুপির প্রমাণ পেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১১ হাজার ৯৬৫ জন ডুপ্লিকেট ভোটার, ৪০ হাজার ৯টি ভুয়া ঠিকানা, একই ঠিকানায় ১০ হাজার ৪৫২ জন ভোটারের নিবন্ধন, ৪ হাজার ১৩২টি ভুল ছবি ব্যবহার এবং ৩৩ হাজার ৬৯২টি নতুন ভোটার নিবন্ধন ফরমের অপব্যবহার।

রাহুল জানান, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রের নির্বাচনে মতামত জরিপ, এক্সিট পোল ও কংগ্রেসের নিজস্ব সমীক্ষার সঙ্গে সরকারি ফলাফলের ব্যাপক অমিল পাওয়া গেছে। তাঁর অভিযোগ, নির্বাচন কমিশন ইলেকট্রনিক ভোটার তালিকার তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে কেবল ত্রুটিপূর্ণ কাগজপত্র দিয়েছে, যা বিশ্লেষণে ছয় মাস সময় লেগেছে—যেন সত্য গোপন রাখাই উদ্দেশ্য। তিনি বলেন, “মাত্র ২৫টি আসনে ৩৩ হাজারের কম ভোটের ব্যবধানে বিজেপি জিতেছে, অর্থাৎ এ কয়েকটি আসনে ভোট কারচুপি করলেই নরেন্দ্র মোদির ক্ষমতা টিকে যায়।”

গতকাল দিল্লির ইন্দিরা ভবনে সংবাদ সম্মেলনেও রাহুল গান্ধী এই অভিযোগ তুলে ধরেন এবং একে ভারতের গণতন্ত্রের ওপর ‘পারমাণবিক বোমা’ নিক্ষেপের সঙ্গে তুলনা করেন। তিনি বলেন, কমিশন এখন তাঁকে শপথ নিয়ে তথ্য দিতে বলছে, অথচ তিনি সংসদে সংবিধানের ওপর শপথ নিয়েছেন। আরও অভিযোগ করেন, তাঁর তথ্য প্রকাশের পর নির্বাচন কমিশন নিজেদের ওয়েবসাইট বন্ধ করে দিয়েছে, যাতে জনগণ প্রশ্ন তুলতে না পারে।

রাহুল গান্ধীর এই অভিযোগ ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। কংগ্রেস দাবি করছে, বিজেপি ও নির্বাচন কমিশনের এই যোগসাজশ শুধু নির্বাচনী প্রক্রিয়াকেই নয়, গোটা সাংবিধানিক কাঠামোকেই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে।

সর্বশেষ