সোমবার,১,ডিসেম্বর,২০২৫
23 C
Dhaka
সোমবার, ডিসেম্বর ১, ২০২৫
প্রচ্ছদসীমানা পেরিয়েনেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে তেল আবিবে বিক্ষোভ

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে তেল আবিবে বিক্ষোভ

“ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দুর্নীতির মামলায় পূর্ণ ক্ষমার আবেদন ঘিরে তেল আবিবে প্রেসিডেন্ট আইজাক হারজগের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ হয়েছে। রবিবার রাতে কয়েক শ মানুষ রাস্তায় নেমে নেতানিয়াহুর আবেদন প্রত্যাখ্যানের দাবি জানান”    

নেতানিয়াহু (৭৬পাঁচ বছর ধরে তিনটি পৃথক দুর্নীতির মামলায় বিচারাধীন। রবিবার তিনি দোষ স্বীকার বা অনুশোচনা ছাড়াই প্রেসিডেন্টের কাছে পূর্ণ ক্ষমা চান। তার এই উদ্যোগের পরই বিরোধীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। মামলাগুলোর একটিতে নেতানিয়াহু ও তার স্ত্রী সারার বিরুদ্ধে অভিযোগধনকুবেরদের কাছ থেকে ২ লাখ ৬০ হাজার ডলারের বেশি দামের সিগারঅলংকার ও শ্যাম্পেন নেওয়ার বিনিময়ে রাজনৈতিক সুবিধা দেওয়া হয়েছে। অন্য দুটি মামলায় মিডিয়ার অনুকূল কভারেজের জন্য চুক্তির চেষ্টা করার অভিযোগ আছে। নেতানিয়াহু সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার আইনজীবীরা প্রেসিডেন্ট দফতরে পাঠানো ১১১ পৃষ্ঠার চিঠিতে বলেনতিনি এখনও মনে করেন শেষ পর্যন্ত তিনি পুরোপুরি খালাস পাবেন।

দেশে মামলার বাইরেও নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে হেগভিত্তিক আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। ২০২৪ সালের নভেম্বর গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করা হয়। ইসরায়েলের গাজায় হামলায় ৭০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত ও প্রায় ১ লাখ ৭১ হাজার আহত হয়েছে। অধিকাংশই নারী ও শিশু। ইসরায়েলে সাধারণত রায় ঘোষণার পর এবং দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরই ক্ষমা করা হয়। তাই নেতানিয়াহুর আবেদন তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে।

বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার লাপিদ বলেনদোষ স্বীকারঅনুশোচনা প্রকাশ ও রাজনৈতিক জীবন থেকে সরে দাঁড়ানো ছাড়া নেতানিয়াহুকে ক্ষমা দেওয়া উচিত নয়। সাবেক সামরিক উপপ্রধান ইয়াইর গোলান বলেনশুধু অপরাধীরাই ক্ষমা চায়। তিনি নেতানিয়াহুকে পদত্যাগের আহ্বান জানান। ইসরায়েলের মুভমেন্ট ফর কোয়ালিটি গভর্নমেন্ট জানায়গুরুতর প্রতারণা ও বিশ্বাসভঙ্গের মতো অভিযোগে অভিযুক্ত প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমা দিলে কেউ কেউ আইনের ঊর্ধ্বে এমন বার্তা যাবে। তবে ক্ষমতায় থাকা জোটের কয়েকজন নেতা নেতানিয়াহুর আবেদনের পক্ষে মত দিয়েছেন। জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেনগাভির ও অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ বলেনদুর্নীতিগ্রস্ত বিচারব্যবস্থা তাকে বছরের পর বছর নিপীড়ন করেছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেনক্ষমা দিলে দশকের পুরোনো বিভাজনের ইতি ঘটবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মারওয়ান বিশারা বলেননেতানিয়াহু এখন ইসরায়েলের জন্য বোঝা। নেতানিয়াহুর অধীনে ইসরায়েলের গণতান্ত্রিক কাঠামো দুর্বল হয়েছে। আগে সুপ্রিম কোর্টসহ বিচারব্যবস্থার বিরুদ্ধে তার অবস্থানই দেশে ব্যাপক আন্দোলনের জন্ম দেয়। পাশাপাশি তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত ও আন্তর্জাতিক আদালতে চলমান গণহত্যা বিষয়ক মামলার মূল আসামি।

সুত্র- আল জাজিরা 

সর্বশেষ