নয়াদিল্লিতে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশের নির্বাচনসহ কিছু বিষয়ে স্পষ্ট আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কাত্রা। তবে নির্বাচন ছাড়া বাংলাদেশের ঠিক কোন কোন বিষয়ে তারা কথা বলেছেন, তা পরিষ্কারভাবে জানায়নি কোনো পক্ষই।
যুক্তরাষ্ট্র-ভারত পঞ্চম ‘টু প্লাস টু’ বৈঠকের জন্য মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। শুক্রবার (১০ নভেম্বর) তারা ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন।
দুই দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কাত্রা এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, দুই দেশের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের উন্নয়ন ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এ সময় উভয় পক্ষই বাংলাদেশের বিষয়ে স্পষ্টভাবে তাদের নিজ নিজ দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছে।
তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশ সম্পর্কে খুব স্পষ্টভাবে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি একে অপরকে জানিয়েছি। মার্কিন প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার সময় আমরা বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের পরিস্থিতি কীভাবে মূল্যায়ন করি, তাও স্পষ্টভাবে জানিয়েছি। মূলত, এই আলোচনায় বাংলাদেশের বিষয়টিও উঠে আসে।
যুক্তরাষ্ট্রের কথা উল্লেখ করে ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব বলেন, তৃতীয় কোনো দেশের নীতি নিয়ে আমরা মন্তব্য করতে পারি না। আমি মনে করি, যখন বাংলাদেশের উন্নয়ন বা নির্বাচনের কথা যখন আসে, তখন এটা তাদের ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’। বাংলাদেশের জনগণই তাদের ভবিষ্যৎ ঠিক করবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ আমাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও অংশীদার। সে হিসেবে আমরা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সম্মান করি এবং দেশটির জনগণ নিজেদের জন্য যে স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ ও প্রগতিশীল অবস্থা দেখতে চায়, আমরা সেই আকাঙ্ক্ষাকেই সমর্থন দেবো।
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতের এই অবস্থান নতুন নয়। কিন্তু বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যেভাবে নানা মন্তব্য করছেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা, তার বিপরীতে গিয়ে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্টভাবে মার্কিন মন্ত্রীদের সামনে তুলে ধরার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
অনেকে আবার মনে করছেন, বাংলাদেশ নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়তে পারে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র। বৈঠকের আগে ওয়াশিংটন-ভিত্তিক থিঙ্কট্যাঙ্ক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইএস) বিশেষজ্ঞ রিক রসো বলেছিলেন, ভারত-যুক্তরাষ্ট্র কৌশলগত সম্পর্কের ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক ইস্যুগুলোর প্রভাবই কিন্তু বেশি থাকবে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, গাজা বা ইউক্রেনের যুদ্ধের চেয়ে বাংলাদেশ কিংবা শ্রীলঙ্কায় কী ঘটছে, সেটাই কিন্তু ভারত-মার্কিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে বেশি গুরুত্বপূর্ণ!