নতুন কথা প্রতিবেদন: আজ বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর বীর শহীদ ডাঃ জামিল আক্তার রতন’র ৩৩ তম মৃত্যূবার্ষিকী। শহীদ জামিল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ শাখার তৎকালীন সভাপতি ছিলেন। তিনি ছিলেন জামাত-শিবির সহ সাম্প্রদায়িকতা-মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহীর অগ্রণী সেনা।
স্বৈরাচার জেনারেল এরশাদের প্রস্তাবিত রাষ্ট্রধর্ম বিল তথা সংবিধানের ৮ম সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম প্রবর্তনের চেষ্টা কালে তার বিরুদ্ধে রাজশাহীতে দুর্বার ছাত্র আন্দোলন গড়ে তোলেন শহীদ জামিল আকতার রতন।
১৯৮৮ সালের ৩১ মে ক্যাম্পাসে ৩৫ জন শিক্ষক আর হাজারো শিক্ষার্থীদের সামনেই খুনী জামাত-শিবির কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিবাদী ছাত্রনেতা জামিলকে। হত্যার পরে খুনীরা ‘নারায়ে তকবির আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি তুলে উল্লাস করে। স্বাধীনতার পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রকাশ্যে কুপিয়ে আর রগ কেটে খুনের মিশন জামাত- শিবির এভাবেই শুরু করে। শহীদ জামিলের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে স্বৈরশাসক এরশাদ সরকার রাষ্ট্রধর্ম বিল তথা অষ্টম সংশোধনী সংসদে পাস করে। সেই থেকে শহীদ জামিলের খুনের দিনটিকে এদেশের প্রগতিশিীল-গণতান্ত্রিক ছাত্র সংগঠনসমূহ ‘মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী দিবস’ হিসেবে পালন করে।
দিবসটি উপলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর সাবেক-বর্তমান নেতৃবৃন্দ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী আব্দুল মোতালেব জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক অতুলন দাস আলো, ছাত্র মৈত্রীর রোজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি তৌহিদুর রহমান, কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি ও ঢাকা মহানগর সভাপতি ইয়াতুন্নেছা রুমা, সহ সভাপতি তরিকুল ইসলাম প্রমুখ। সেখানে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা বলেন শহীদ জামিল আজও আমাদের কাছে প্রেরণা। অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার যে বাংলাদেশ গড়ে তুলতে শহীদ জামিল প্রাণ দিয়ে গেছেন সেই লড়াই চলছে প্রতিনিয়ত। বক্তারা আরো বলেন, প্রগতিশীল লেখক ব্লগারদের ধারাবাহিক হত্যা, হেফাজত ইসলামের শাপলা চত্ত্বরের তাণ্ডব, পাঠ্যপুস্তকে ইসলামি ধারায় পরিবর্তন, অমুসলিম কবি-লেখকদের গল্প কবিতা বাতিল করা, সুপ্রিম কোর্টের সামনে লেডি জাস্টিসের মূর্তি অপসারণ, সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন ইত্যাদি ঘটনাগুলো মনে করিয়ে দেয় শহীদ জামিল আজও কতটা প্রাসঙ্গিক। শহীদ জামিল আকতার রতন এর রক্তের শোধ নিতে আমাদের লড়াই চলছে। শহীদ জামিল লাল সালাম।