শুক্রবার,২১,নভেম্বর,২০২৫
22 C
Dhaka
শুক্রবার, নভেম্বর ২১, ২০২৫
প্রচ্ছদসম্পাদকীয়মুক্তমতশ্রমজীবী মানুষ শ্রম বিক্রির সুযোগও পাচ্ছেন না, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কি রেখে যাবে...

শ্রমজীবী মানুষ শ্রম বিক্রির সুযোগও পাচ্ছেন না, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কি রেখে যাবে ?

বাংলাদেশের অর্থনীতি ভালো নেই : অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কি রেখে যাবে : আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতির ত্রিশঙ্কু অবস্থার ইঙ্গিত : শ্রমজীবী মানুষ শ্রম বিক্রির সুযোগও পাচ্ছেন না! অর্থনীতির নানা পরিসংখ্যান মানুষের দূর্ভোগের চিত্রই তুলে ধরে!
আগামী ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের মানুষ একটা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মুখোমুখি হবেন। সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ফেব্রুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহে সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। এর পরপরই শুরু হবে মুসলমানদের পবিত্র রমজান এবং ইদুল ফিতর। ডিসেম্বরের দিকে নির্বাচন ও গণভোটের সূচি ঘোষিত হলে রাজনীতি উত্তাপ ছড়াবে এবং সহিংসও হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু এইসব বিষয় অনেকটা ঘরের বাইরের,  রাজনীতির বিষয় হিসেবে অনেকে দেখেন। কিন্তু রমজান মাসে ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা সিয়াম সাধনার পাশাপাশি একটা বড় অর্থনৈতিক চাপ অনুভব করবেন। পত্রিকা ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় রমজানকে সামনে রেখে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধির খবর প্রচার শুরু করেছে। এখন পণ্যের আমদানির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ডিসেম্বরের শেষ দিকে পণ্য বাজারে প্রবেশ করবে।
চালের কথা বলার দরকার নেই।  তাঁর দাম বাড়তি। পেঁয়াজ ও  ডালের দাম বাড়তি। খেজুর, ভোজ্য তেল, চিনি – সবই এখনো বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। বিশ্ববাজারে এই সব পণ্যের দাম পড়তির দিকে কিন্তু বাংলাদেশে তার কমার কোনো লক্ষ্মণ নেই।  কেনো?
এর উত্তর ব্যবসায়ীদের কাছে এক রকম, সরকারের কাছে আরেক রকম এবং গবেষকদের কাছে ভিন্ন রকম। আর জনগণের পকেট ফাঁকা।  অর্থনীতির তলার দিকে তাকালে দেখা যায়,  মাঠে পাকা ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। মজুরি বেশি  দিয়েও পাচ্ছে না। অন্য দিকে,  বাজারে মানুষ শ্রম বিক্রির জন্য সারাদিন বসে থাকেন।  রমজানে ব্যবসায়ীদের কারসাজি এবং সরকারের নিষ্ক্রিয়তার কারণে প্রতি বছর নিত্য প্রয়োজনিয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি একটা ক্রণিক ডিজিজে পরিণত হয়েছে।  সরকারের ঋণের পরিমাণ বেড়েছে।  প্রবৃদ্ধি কমে এসেছে। আইএমএফ বলছে,  তারা নির্বাচিত সরকারের সাথেই ঋণের কিস্তি ছাড়ের বিষয়ে আলাপ করবে। তার মানে, সেই ফেব্রুয়ারী পার হয়ে যাবে। ব্যাঙ্কগুলো তারল্য সংকটে নিপতিত।
এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ নির্বাচনের পরপরই শেষ হবে।  তাদের সামনের তিন মাসে তেমন আর কিছু করারও সুযোগ নেই।  তাহলে তারা কি রেখে যাচ্ছেন?  নেতিবাচক মন্তব্য না করলেও বলা যায় একটা প্রবৃদ্ধিবিহীন, কর্মসংস্থানের সুযোগহীন উচ্চ দারিদ্র্যের হার রেখে যাবেন।  নির্বাচন কি হবে সে প্রসঙ্গে না গিয়েও বলা যায় মানুষের পেটে ক্ষুধা ও না খেয়ে থাকার একটা পরিস্থিতি রেখে যাবেন। পবিত্র রমজানের সিয়াম এবং নির্বাচনপরবর্তী ঈদ পালন হবে ভয়ঙ্কর অর্থনৈতিক চাপের। তা সুখকর হবে না।
লেখক- শরীফ শমশির
লেখক ও গবেষক

সর্বশেষ