কাশিয়াডাঙ্গা-রাজপাড়া ওয়ার্কার্স পার্টির সমাবেশ
রাজশাহী থেকে জগদীশ রবিদাস ॥ “১৫ বছর ধরে রাজশাহীর সংসদ সদস্য হিসেবে কাজ করছি। কেউ বলতে পারবেন না, জনগণকে দেয়া প্রতিশ্রুতি কখনো ভঙ্গ করেছি। কেউ এসে স্বাক্ষী দিতে পারবেন না, কারো উপকারের পরিবর্তে টাকা নিয়েছি। এমন কোনো নজির নেই; কোনোদিন কারো সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছি। আমি রাজনীতি করেছি এবং এখনো করছি শুধুমাত্র জনগণের জন্য। জনগণের স্বার্থের বিপরীতে যায়; এমন কোনো কর্মকা-ের সঙ্গে কখনো জড়িত হইি ন। কারণ আমার বিশ্বাস; জনগণ কখনোই প্রতারণার রাজনীতিকে পছন্দ করে না। তাই আমিও প্রতারণার রাজনীতি করিনি।”-বললেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশা।
১৪ জানুয়ারি রাজশাহী নগরীতে এক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এ কথা বলেন। নগরীর কোর্ট স্টেশন এলাকায় ওই সমাবেশের আয়োজন করে রাজশাহী মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা ও রাজপাড়া থানা ওয়ার্কার্স পার্টি।
সমাবেশে কমরেড ফজলে হোসেন বাদশা আরো বলেন, “শহরের মধ্যে পশ্চিমাঞ্চল উপেক্ষিত অঞ্চল হিসেবে ছিল। অনেকে বলতেন, আমাদের এলাকার কি হবে! আজকে তাকিয়ে দেখুন-আমাদের এলাকায় আইটি পার্ক হয়েছে। আইটি পার্ক যেখানে হয়েছে; সেখানে সবচেয়ে গরিব মানুষেরা বসবাস করতেন। তাদেরকে ওখান থেকে উচ্ছেদ করার কথা ছিল। আমি এই এলাকার এমপি। আমি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে এটি আটকেছি। আমি সেদিন বলেছিলাম, কোনোভাবেই গরিব মানুষকে উচ্ছেদ করা যাবে না। তাদের উচ্ছেদ করতে হলে আগে সরকারি অর্থে তাদের স্থায়ী বাড়ি নির্মাণের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। আমরা সেদিন যা বলেছি; পরবর্তীতে তা সঠিকভাবে বাস্তবায়নও করেছি। যাদেরকে ওখান থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে, তাদেরকে হাতে আগে চেক দেয়া হয়েছে; এরপরে উচ্ছেদ করা হয়েছে। গলায় ধাক্কা দিয়ে বা বুলডোজার চালিয়ে গরিব মানুষকে উচ্ছেদ করার প্রয়োজন পড়ে নি। এটাই হচ্ছে গণমানুষের রাজনীতি। আমি সেই রাজনীতিতে বিশ্বাস করি।”
কেন্দ্রীয় ১৪ দলের অন্যতম এই নেতা বলেন, “আমি যখন নির্বাচনে দাঁড়াই, তখন আমার এলাকাবাসীকে বলেছিলাম; যদি নির্বাচিত হতে পারি তাহলে আমার ছেলেমেয়েদের, মা বোনদের কষ্ট করে রেললাইন টপকে এপারে এসে স্কুল-কলেজে লেখাপাড়া করতে হবে না। ঘরের পাশেই উন্নত স্কুল-কলেজ হবে। আজকে এখানে দাঁড়িয়ে বলছি, আপনারাই বলুন- স্কুল-কলেজ হয়েছে, না হয় নি? আজকে আমার ছেলেমেয়েদের আর রেললাইন টপকানো লাগে না। তারা ঘরের পাশেই লেখাপড়া করে। শুধু আমাদের এলাকাই নয়, পুরো রাজশাহী শহরজুড়েই এটি করেছি। শহরের আর কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উন্নয়নের বাইরে নেই। আমাদের রাজশাহী এখন প্রকৃত অর্থেই শিক্ষানগরী। আগামীতে আপনারা যদি সুযোগ দেন, আমার এলাকার মানুষ যদি আমার পাশে থাকে; তাহলে আর যা পরিকল্পনা আছে-তা ধাবাহিকভাবে বাস্তবায়নের চেষ্টা করবো।”
রাজশাহী সদর আসনের টানা তিনবারের এই সংসদ সদস্য বলেন, “নির্বাচন আসছে। এই নির্বাচনে কি করব তা আপনাদের কাছেই জিজ্ঞেস করছি। আপনারা যা বলবেন তাই হবে। আপনারা যদি বলেন, সৎ পথে থেকেছি; আমাকে দরকার, তবে আবারো নির্বাচন করব। আর যদি বলেন নির্বাচন করার দরকার নেই; তবে নির্বাচন করব না। কারণ, আমি নির্বাচনকে কখনো বাণিজ্য হিসেবে দেখি না। আমি সবসময় সত্যের পক্ষে ছিলাম, এখনো আছি। তাহলে যে এলাকায় আমার জন্ম; যে এলাকায় আমার নারী পোতা আছে; আগামীতে যদি আপনাদের সামনে এসে দাঁড়াই, আপনারা আমার পাশে থাকবেন কিনা আমি জানতে চাই।”
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রাজপাড়া থানা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি আব্দুল মতিন। বক্তব্য রাখেন, মহানগরের সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ প্রামানিক দেবু, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আশরাফুল হক তোতা, জেলা নারী মুক্তি সংসদের সভাপতি অধ্যাপক তসলিমা খাতুন, মহানগর যুব মৈত্রী’র সভাপতি ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি, মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সদস্য মাসুম আক্তার অনিক, মোশারোফ হোসেন, আব্দুল খালেক বকুল, কাশিয়াডাঙ্গা থানা কমিটির সভাপতি শামীম ইমতিয়াজ প্রমুখ।