Site icon নতুন কথা

আফগানিস্তানকে উড়িয়ে দিল ভারত, রোহিতের রেকর্ডময় সেঞ্চুরি

মাত্র ৩৫ ওভারেই আফগানিস্তানের ২৭৩ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে দিলো।

আফগানিস্তানের পুঁজি তেমন মন্দ ছিলনা, কিন্তু তাদের কে কোনো সুযোগই দিলেন না রোহিত শর্মা। অধিনায়কের রেকর্ডময় সেঞ্চুরিতে অনায়াস জয় পেল ভারত।

নতুন কথা প্রতিবেদন: দিল্লির অরুন জেটলি স্টেডিয়ামের যে রেকর্ড তাতে এর আগে ২৭০+ রান তারা করে জয় পায়নি কেউ, সে বিচেনায় আফগান্তিানের ২৭২ রান একবারে কম নয় কিন্তু বুধবার আফগানিস্তানের সেই রান টপকে ৮ উইকেটের বড় জয় ছিনিয়ে নিলো ভারত। ২৭৩ রানের লক্ষ্য স্রেফ ৩৫ ওভারেই তাড়া করে ফেলেছে স্বাগতিকরা। 

সফল রান তাড়ায় ওভারপ্রতি ৭.৮০ রান তুলেছে ভারত। বিশ্বকাপে আড়াইশর বেশি রান তাড়ায় এটিই সবচেয়ে দ্রুত রান তোলার রেকর্ড। চলতি আসরেই উদ্বোধনী ম্যাচে ওভারপ্রতি ৭.৭৮ গড়ে রান করে ইংল্যান্ডের ২৮২ রান টপকে যায় নিউ জিল্যান্ড।

দলের সহজ জয়ে স্রেফ ৮৪ বলে ১৩১ রান করেছেন রোহিত। ১৬ চার ও ৫ ছক্কার ইনিংসে অন্তত তিনটি রেকর্ড গড়েছেন ভারত অধিনায়ক। এর সৌজন্যে জিতেছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কারও।

বিশ্বকাপে এটি তার সপ্তম সেঞ্চুরি। বৈশ্বিক এই টুর্নামেন্টে শচিন টেন্ডুলকারের ছয়টি সেঞ্চুরির রেকর্ড ভেঙে এককভাবে শীর্ষে উঠেছেন ৩৬ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। 

জাদুকরী তিন অঙ্ক ছুঁতে রোহিত খেলেন স্রেফ ৬৩ বল। বিশ্ব আসরে ভারতের হয়ে এটিই দ্রুততম সেঞ্চুরি। আগের রেকর্ড কপিল দেবের। ১৯৭৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৭২ বলে।

নিজের ইনিংসের তৃতীয় ছক্কায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ছক্কার মালিক হন রোহিত। ক্রিস গেইলের ৫৫৩ ছক্কাকে ছাড়িয়ে এখন ৫৫৫ ছক্কার চূড়ায় তিনি। 

রান তাড়ায় শুরু থেকেই আফগান বোলারদের ওপর চড়াও হন রোহিত। অন্য প্রান্তে ইশান কিষান স্রেফ সঙ্গ দিয়ে যান অধিনায়ককে। প্রথম পাওয়ার প্লেতে ভারত করে ৯৪ রান। যেখানে রোহিতের একার সংগ্রহ ৭৬ রান। 

অষ্টাদশ ওভারে সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন রোহিত। ওয়ানডেতে এটি তার ৩১তম তিন অঙ্ক ছোঁয়া ইনিংস। এই সংস্করণে তার চেয়ে বেশি সেঞ্চুরি রয়েছে স্রেফ শচিন (৪৯) ও ভিরাট কোহলি (৪৭)। 

উনিশতম ওভারে কিষান ফিরে গেলে ভাঙে ১৫৬ রানের উদ্বোধনী জুটি। ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৪৭ বলে ৪৭ রান করেন তরুণ বাঁহাতি ওপেনার। 

কিষানের পর রোহিতকেও আউট করেন রাশিদ খান। ফ্লিপার ধরনের ডেলিভারি সুইপ করতে গিয়ে ব্যাটে লাগাতে পারেননি রোহিত। বোল্ড হয়ে থামে তার চার-ছক্কায় ভরপুর নান্দনিক ইনিংস। 

এরপর আর উইকেট পড়তে দেননি কোহলি ও শ্রেয়াস আইয়ার। অবিচ্ছিন্ন ৬৮ রানের জুটিতে দল জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন তারা। ক্যারিয়ারের ৬৮তম ফিফটি ছুঁয়ে ৫৫ রানে অপরাজিত থাকেন কোহলি।

ম্যাচের প্রথমভাগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা মন্দ ছিল না আফগানিস্তানের। প্রথম পাওয়ার প্লেতে ইব্রাহিম জাদরানের উইকেট হারিয়ে ৪৮ রান করে তারা। এরপর রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও রেহমাত শাহ দ্রুত ফিরে গেলে কিছুটা চাপে পড়ে আফগানরা।

চতুর্থ উইকেটে ১২১ রান যোগ করেন হাশমতউল্লাহ শাহিদি ও আজমতউল্লাহ ওমারজাই। বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের দ্বিতীয় শতরানের জুটি এটি। গত আসরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৩৩ রানের জুটি গড়েন রেহমাত, ইকরাম আলি খিল। 

পয়ত্রিশতম ওভারে এই জুটি ভাঙার আর প্রত্যাশিত রান করতে পারেনি আফগানিস্তান। বিশ্বকাপে নিজের তৃতীয় ফিফটি ছোঁয়া শাহিদি খেলেন ৮৮ বলে ৮ চার ও ১ ছক্কায় ৮০ রানের ইনিংস। ওমারজাইয়ের ব্যাট থেকে আসে ২ চার ও ৪ ছক্কায় ৬৯ বলে ৬২ রান।

৩৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ভারতের সফলতম বোলার জাসপ্রিত বুমরাহ।

পরপর দুই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে ভারত। দুই ম্যাচ হেরে সবার নিচে আফগানিস্তান। এ নিয়ে বৈশ্বিক আসরে টানা ১৪ ম্যাচ হারল তারা। এর চেয়ে বেশি টানা পরাজয় রয়েছে স্রেফ জিম্বাবুয়ের (১৮)। টানা ১৪ ম্যাচ হারের স্বাদ পেয়েছে স্কটল্যান্ডও।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: 

আফগানিস্তান: ৫০ ওভারে ২৭২/৮ (গুরবাজ ২১, ইব্রাহিম ২২, রেহমাত ১৬, শাহিদি ৮০, আজমতউল্লাহ ৬২, নাবি ১৯, নাজিবউল্লাহ ২, রাশিদ ১৬, মুজিব ১০*, নাভিন ৯*; বুমরাহ ১০-০-৩৯-৪, সিরাজ ৯-০-৭৬-০, পান্ডিয়া ৭-০-৪৩-২, শার্দুল ৬-০-৩১-১, কুলদিপ ১০-০-৪০-১, জাদেজা ৮-০-৩৮-০)

ভারত: ৩৫ ওভারে ২৭৩/২ (রোহিত ১৩১, কিষান ৪৭, কোহলি ৫৫*, শ্রেয়াস ২৫*; ফারুকি ৬-০-৫০-০-, মুজিব ৮-০-৬৪-০, নাভিন ৫-০-৩১-০, ওমারজাই ৪-০-৩৪-০, নাবি ৪-০-৩২-০, রাশিদ ৮-০-৫৭-২)

ফল: ভারত ৮ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: রোহিত শর্মা  

Exit mobile version