শনিবার,২০,এপ্রিল,২০২৪
40 C
Dhaka
শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪
Homeগণ অর্থনীতিএডিপির টাকা যাচ্ছে করোনা মোকাবিলায়

এডিপির টাকা যাচ্ছে করোনা মোকাবিলায়


নতুন কথা ডেস্ক :
 দেশে করোনা প্রাদুর্ভাব রুখতে সরকারের নানা পদক্ষেপে স্থবির হয়ে গেছে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড । অর্থনীতিতেও এসেছে মন্দাভাব। রাজস্ব আয়ে ব্যাপক ভাটা পড়লেও সরকারের ব্যয় কমেনি। এ অবস্থায় করোনা মোকাবিলায় নানা পন্থা খুঁজছে অর্থ মন্ত্রণালয়। অর্থ সংকটে কৃচ্ছ্র সাধনের নীতিতে যেতে বাধ্য হচ্ছে সরকার। এর অংশ হিসেবে চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) থেকে প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা নেওয়া হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

গত অর্থবছরেও সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা এডিপি থেকে নেওয়া হয়েছিল। তবে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, কর্ণফুলী টানেল, পদ্মা রেল লিঙ্কের মতো মেগা প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নে অর্থ সংকট হবে না বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।

গত অর্থবছরের ন্যায় এবারও উন্নয়ন প্রকল্পকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তিন ভাগে বিভক্ত করে সার্কুলার দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের আওতাধীন মোট প্রকল্পের ৪০ শতাংশ উচ্চ অগ্রাধিকারে রাখা হয়েছে। মধ্য ও নিম্ন অগ্রাধিকার তালিকায় স্থান পেয়েছে ৩০ শতাংশ করে প্রকল্প। এ হিসেবে নিম্ন অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে ৪৭৯টি প্রকল্প। এসব প্রকল্পে বরাদ্দ ৫২ হাজার কোটি টাকা চলতি অর্থবছরে ব্যয় হবে না।

এছাড়া মধ্য অগ্রাধিকারভুক্ত প্রকল্পেও অর্থ ব্যয়ে বিশেষ অনুমতির প্রয়োজন হবে। এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির আগে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে পাঠানো হয়। ওই চিঠিতে নিজেরদের বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প তিন ভাগে ভাগ কওে অর্থ মন্ত্রণালয়কে জানানোর নির্দেশনা ছিল। মন্ত্রণালয়গুলোর পাঠানো তালিকা থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, করোনার কারণে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকির সঙ্গে সঙ্গে আর্থিক ঝুঁকিও তৈরি হয়েছে। সারা বিশ্ব অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাংলাদেশও আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর্থিক সংকট রয়েছে এটা বলতে কোনো সংকোচ নেই। এজন্য সরকার কৃচ্ছ্র সাধন নীতির দিকে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, উন্নয়নের প্রয়োজন আছে, তার আগে মানুষের জীবন। এজন্য তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কাজ পরে করা হবে। এই টাকা করোনা মোকাবিলায় ব্যয় করার চিন্তা করা হচ্ছে। গেল অর্থবছরেও এটা করা হয়েছিল, চলতি অর্থবছরেও এর ধারাবাহিকতা রাখা হচ্ছে।

উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ ব্যয় নিয়ে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে একটি পরিপত্র জারি করা হয়েছে। এই পরিপত্র অনুসারে আরএডিপিতে চলমান প্রকল্পগুলোকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, কর্ণফুলী টানেল, পদ্মা রেল লিঙ্কের মতো মেগা প্রকল্পগুলো অর্থ ব্যয় করতে পারবে। এদের রাখা হয়েছে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার তালিকায়। তবে ‘নিম্ন অগ্রাধিকার’ উন্নয়ন প্রকল্পে খরচ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে যৌক্তিক কারণে ব্যয় করতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগবে। আর ‘মধ্যম অগ্রাধিকার’ প্রকল্পের যেসব খাতে না করলেই নয় এমন খাতে নিজ বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে।

করোনায় অর্থ সংকটে রয়েছে সরকার। বাধ্য হয়ে কৃচ্ছ্র সাধন নীতির দিকে যাচ্ছে। সম্প্রতি ডিসেম্বর পর্যন্ত সরকারি গাড়ি ক্রয়ে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অহেতুক অর্থ ব্যয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ নিয়েছেন।

এডিপির অগ্রাধিকার তালিকার বিষয়ে পরিকল্পনা বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, এর আগের বছর অর্থ মন্ত্রণালয় থেকেই এই তালিকা আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছিল। তাদের তালিকা ধরেই কাজ করেছি। এবারও তাই হবে।

তারা বলেন, করোনার কারণে উন্নয়ন কর্মকা- আগে থেকেই থমকে গেছে। ফলে এডিপিতে বরাদ্দ থাকলেও বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলো ব্যয় করতে পারবে না। গত অর্থবছরে এডিপির মাত্র ৮০ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে। করোনা থাকলে চলতি অর্থবছরেও এমনটি হতে পারে।

চলতি অর্থবছরে মোট ১ হাজার ৫৮৪টি প্রকল্পের বিপরীতে ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকার এডিপি বাস্তবায়নের লক্ষ্য ধরা হয়। এর মধ্যে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এবং বিদেশি উৎস থেকে ৭০ হাজার ৫০২ কোটি টাকার সংস্থান করার কথা।

সর্বশেষ