Site icon নতুন কথা

কিম জং উনের ট্রেনের নাম ‘তাইয়াংহো’, যার অর্থ সূর্য

কিম জং উন

কিম জং উন

বিশ্ব রাজনীতির এখনকার আলোচনার বিষয় রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন ও উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। তাদের বৈঠক নিয়ে চলছে তোলপাড়। এরই মধ্যে নিজের বিশেষ ট্রেনে প্রতিবেশী দেশে ঢুকেও পড়েছেন কিম। এ দফায় কিম এক হাজার ১৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ যাত্রাটি শেষ করেছেন ২০ ঘণ্টারও বেশি সময়ে।বিশেষ এ ট্রেনের নাম তাইয়াংহো। সূর্যকে কোরিযান ভাষায় এ নামে ডাকা হয়। যা মূলত উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল সুং-এর প্রতীকী উল্লেখ।

ট্রেনটির গতিবেগ ঘণ্টায় মাত্র ৫০ কিলোমিটার। কারো কারো মতে, ৫৯ কিলোমিটার। এর কারণ হিসেবে বলা হয়, তাইয়াংহো অন্যান্য উচ্চ গতিসম্পন্ন ট্রেনের তুলনায় অনেক ভারী। সাঁজোয়া সুরক্ষা এর কারণ।

২০০৯ সালের নভেম্বরে দক্ষিণ কোরিয়ার দৈনিক চোসুন ইলবোর প্রতিবেদনে বলা হয়, সাঁজোয়া ট্রেনটিতে প্রায় ৯০টি বগি রয়েছে। হলুদ-সবুজ যানটিতে আছে কনফারেন্স রুম, দর্শক চেম্বার ও শয়নকক্ষ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রেনটিতে একটি রেস্তোরাঁ রয়েছে। যেখানে চমৎকার ফ্রেঞ্চ ওয়াইন ও তাজা গলদা চিংড়ির মতো খাবার পরিবেশন করা হয়।

হাল আমলে রাষ্ট্রপ্রধানদের জন্য বরাদ্দ থাকে নানান সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত উড়োজাহাজ। সেখানে কিম জং উন ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। দূরপাল্লার ভ্রমণে ট্রেনের ব্যবহার শুরু করেন তার দাদা কিম ইল সুং। যিনি ভিয়েতনাম ও পূর্ব ইউরোপ ভ্রমণে নিজের ট্রেন নিয়েছিলেন।

এই বিলাসবহুল ট্রেনগুলোকে কড়া পাহারার ঘিরে রাখে নিরাপত্তা এজেন্টরা। তারা বোমা ও অন্যান্য হুমকির জন্য রুট ও আসন্ন স্টেশনগুলো পর্যবেক্ষণ করেন।

কিম জং উনের বাবা কিম জং ইল ১৯৯৪ থেকে ২০১১ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত উত্তর কোরিয়া শাসন করেছিল। জানা যায়, তিনি উড়তে ভয় পেতেন। ২০০১ সালে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে যেতে ১০ দিন সফর করেছিলেন কিম জং ইল।

২০০১ সালের ওই সফরে ইলের সঙ্গে ছিলেন রাশিয়ান সামরিক কমান্ডার কনস্ট্যান্টিন পুলিকভস্কি। তিনি স্মৃতিকথায় এ ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেসের ঐশ্বর্যের চিত্র তুলে ধরেন। বলেন, রুশ, চাইনিজ, কোরিয়ান, জাপানি ও ফরাসি খাবার অর্ডার করা যেতো ওই ট্রেনে।

আরেক সাবেক রুশ কূটনীতিক জর্জি তোলোরায়া ২০০১ সালে একই ট্রেনে ভ্রমণ করেন। তিনি জানান, ডাইনিং টেবিলে পিয়ংইয়ং থেকে আনা গাধার মাংস ও অ্যাবালোনের মতো সুস্বাদু খাবার ছিল। রাশিয়ান স্ট্যান্ডার্ড ভদকাও ছিল। এমনকি ট্রেনে থাকা অতিথিদের বিনোদনের জন্য পারফরমার থাকত।

এ রকমই এক আয়েশি ট্রেন ভ্রমণের সময় ২০১১ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান কিম জং ইল। এরপর তার উত্তরসুরীও ট্রেন ভ্রমণ অব্যাহত রেখেছেন।

অবশ্য ট্রেন ছাড়াও কিমকে অন্য ধরনের বিলাসবহুল পরিবহনে যেতে দেখা গেছে। রাশিয়ার তৈরি ব্যক্তিগত জেটে বেশ কয়েকটি সফর করেছেন তিনি।

২০১৮ সালের মে মাসে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করতে তিনি প্রথম আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে চড়েছিলেন। অবশ্য এর আগে উত্তর কোরিয়ায় ভ্রমণের জন্য ব্যক্তিগত জেট ব্যবহার করেছিলেন।

Exit mobile version