রবিবার,৯,নভেম্বর,২০২৫
26 C
Dhaka
রবিবার, নভেম্বর ৯, ২০২৫
প্রচ্ছদরাজনীতি"জুলাই যোদ্ধারা" যদি অন্তবর্তীকালীন সরকারের পুলিশের হাতে মার খায় এই লজ্জা আমি...

“জুলাই যোদ্ধারা” যদি অন্তবর্তীকালীন সরকারের পুলিশের হাতে মার খায় এই লজ্জা আমি কোথায় রাখব, জামায়াত আমীর

জুলাই জাতীয় সনদ সই অনুষ্ঠানে ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ ওপর পুলিশি হামলায় অন্তবর্তী সরকারের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান।

শুক্রবার বিকালে রাজধানীর মিরপুরে এক শ্রমিক সমাবেশে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, ‘‘আমরা বার বার দাবি করেছি, তাদেরকে (‘জুলাই যোদ্ধাদের’) স্বীকৃতি দিন, সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিন, তাদের প্রতি মর্যাদা দেখান। কিন্তু না, আমাদের অন্তবর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলে আজকে তারা সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় অবস্থান নিয়েছে। আমরা শুনেছি এখন সরকার বিষয়টা গুরুত্ব সহকারে নিয়েছেন। ‘‘কিন্তু এর মাঝে কিছু অসুন্দর কাজ হয়েছে কিনা আমি নিশ্চিত না। যদি হয়ে থাকে আমি ব্যথিত, দুঃখিত, লজ্জিত। এরা জালিমের হাতে মার খেয়েছে, আজকে অন্তবর্তীকালীন সরকারের পুলিশের হাতে যদি মার খায় এই লজ্জা আমি কোথায় রাখব।”

জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, আইনি সুরক্ষা, পুনর্বাসনের দাবিতে জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের মঞ্চের সামনে অবস্থান নেয় ‘জুলাই যোদ্ধারা’। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি আলী রীয়াজ মঞ্চে এসে তাদের দাবি পূরণে জুলাই সনদে সংশোধনী আনার ঘোষণা দেন। ওই প্রতিশ্রুতির পরও ‘জুলাই যোদ্ধারা’ সেখান থেকে না সরলে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে ও লাঠিপেটা করে সেখান থেকে তাদের সরায়। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেডও ব্যবহার করে পুলিশ।

এ প্রসঙ্গে ওই শ্রমিক সমাবেশে শফিকুর রহমান বলেন, ‘‘আমরা সরকারকে বলব, দয়া করে নিজেদের দায়িত্বের প্রতি সুবিচার করুন। আমরা আর কাউকে রাস্তায় দেখতে চাই না। আরও অনেকে দাবি-দাওয়া নিয়ে নেমেছে। অনেক দাবি-দাওয়া আর জুলাই যোদ্ধাদের দাবি-দাওয়া এক না। ‘‘এটাকে ভিন্নভাবে অবশ্যই দেখতে হবে।” বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যোগে মিরপুরের পবর্তা ঈদগাহ মাঠে ঢাকা-১৫ আসনে এ শ্রমিক সমাবেশ হয়। এ আসন থেকে জামায়াতের আমিরের আসন্ন সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার কথা রয়েছে।

শফিকুর বলেন, ‘‘বাংলাদেশের আজকে সর্বাঙ্গে ব্যথা, মলম লাগাবেন কোথায়? দুর্নীতিতে এই সমাজ পুরোপুরি ছেয়ে গেছে। আগেও ফ্যাসিজমের সময়ে দুর্নীতি হয়েছে। এখন আরও বিপুল শক্তিতে দুর্নীতি হচ্ছে। ‘‘কোথাও মানুষের শান্তি নেই, নিরাপত্তা নেই, ইজ্জত নেই। প্রতিদিন চাঁদাবাজি এটা সেটাকে করে অহরহ দুর্ঘটনা ঘটছে। এর তো সমাপ্তি অবশ্যই হতে হবে। কে করবে সমাপ্তি? যারা নিজেরা ক্ষমতায় যাওয়ার দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিচ্ছে, যারা দেশেরর নেতৃত্ব নিয়ে আগামী দিনে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে তারাই কেবল পারবে এই জাতিকে যন্ত্রণা থেকে মুক্ত করতে।” আর কোনো চাঁদাবাজি চলবে না হুঁশিয়ার করে দিয়ে তিনি বলেন, “অবৈধ হাত বাড়ানো যাবে না। আমরা কোনো চাঁদাবাজ দেখতে চাই না।” জামায়াত আগামীতে রাষ্ট্রের দায়িত্ব পেলে দেশে চাঁদাবাজি, ঘুষ, ‘বরদাশত’ করা হবে না, দুর্নীতির মূল শেকড় কেটে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেন তিনি। আগের সরকারের হাতে নিপীড়নের শিকার হওয়ার কথা তুলে ধরে জামায়াত আমির বলেন, ‘‘আমরা একটি নিপীড়িত সংগঠন। আমাদের সাথে এমন আচরণ করা হয়েছে এই পাক-ভারত উপমহাদেশে কারো সাথে এই আচরণ করা হয়নি, বাংলাদেশের ইতিহাসে কারো সাথে এই আচরণ করা হয়নি। ‘‘এক এক করে আমাদের নেতাসহ হাজারো নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এর পাশাপাশি হাজার হাজার সহকর্মীকে পঙ্গু করা হয়েছে। আমাদের প্রতীক কেড়ে নেয়া হয়েছে, আমাদের সংগঠনকে শেষ পর্যন্ত ওরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।” দু-একটি সংবাদমাধ্যম বক্তব্য পাল্টে দিচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘‘আমরা ঘোষণা দিলাম, আমরা ব্যক্তিগত পর্যায়ে কারও প্রতি প্রতিশোধ নেব না। তবে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার এবং ব্যক্তি তাদের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার আছে। তারা যদি আদালতের আশ্রয় নেয় আমরা তাদেরকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব। ‘‘আফসোস আমাদের মিডিয়া সকলে নয়, দুই একজন মগজ বিগড়িয়ে গেল তারা আমার কথাটা উল্টিয়ে ফেললেন, তারা বললেন, আমি আওয়ামী লীগকে ক্ষমা করে দিয়েছি। আওয়ামী লীগ শব্দটাই আমি মুখে আনিনি।”

শ্রমিক সমাবেশে ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনসহ মহানগর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ