মঙ্গলবার,২৩,এপ্রিল,২০২৪
33 C
Dhaka
মঙ্গলবার, এপ্রিল ২৩, ২০২৪
Homeজীবন সংগ্রামতিস্তার ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন

তিস্তার ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন

তিস্তা সোলার প্রজেক্ট এখন রূপ বদলে হচ্ছে আলীবাবা থিম পার্ক।অনেকেই বলছেন, তিস্তা নদী নানা কায়দায় কোম্পানি দখল করে নিচ্ছে।অনেকেই আলীবাবার পিছনে দরবেশ আছে বলে ইঙ্গিত করছেন।দরবেশ! সে-কে! (?)। সবাই উত্তর এড়িয়ে গেলেন।তিস্তার ডান তীরে বহমান ছোট প্রবাহমান নদী বন্ধ করে আলীবাবা তিস্তার পাড় দিয়ে প্রশস্ত রাস্তা তৈরি করেছে।ছোট নদীর পানি চলাচলের মুখে কোন ব্রীজও দেয়া হয়নি।ফলে একদিকে জলাবদ্ধতা হচ্ছে প্রকট। অন্যদিকে ওই নদীর পানি বুড়াইল নদী দিয়ে তিস্তায় নামতে পারছেনা। পীরগাছার ছাওলা- শিবদেব – নামা রহমত চরের পানি চলাচলের প্রবাহমুখ বন্ধ হযে গেছে। রাস্তার দক্ষিণের প্রবাহমান নদীর ধারা মরে বিলিন হয়ে গেছে। নদী দখল করা,নদী মেরে ফেলা আইনত চরম অপরাধ।ওটাই হাইকোর্টের নির্দেশ। পানি উন্নয়ন বোর্ড নীরব,নির্বিকার। দরবেশের দাপটে সবাই আতঙ্কগ্রস্ত।স্হানীয় জনগন নদীর মুখ বন্ধ করে নদীর বুকের ওপর দিয়ে সোজাসোজি রাস্তা তৈরির বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়েছিলেন। সফল হননি।সংঘর্ষে একজন মানুষ নিহত হযেছেন,২০১৮ সালে।
আমরা ওই রাস্তা ধরে ” আলীবাবাকে” একপলক দেখে ১০ জুন সুন্দরগঞ্জের তারাপুর ইউনিয়নের লাটশালা ও চর খোর্দা পরিদর্শন শেষে তিস্তার ডানতীরের খেয়াপারে নৌকায় ওঠি। নৌকা যোগে তিস্তার বা-তীরের ভাঙন কবলিত কুড়িগ্রাম উলিপুর উপজেলার হোকোডাঙ্গা,নাগড়াকুড়া পরিদর্শন করি।ভাঙনপীড়িত নাগরাকুড়ার জনগণের অভিযোগের তীর আলীবাবা কোম্পানির দিকে।তাদের অভিযোগ তিস্তার ডান তীরে নদীর গতিপথ আটকে দেওয়ায় তিস্তার স্রোত সোজাসোজি না গিয়ে বাম তীরের গ্রামগুলিতে “ঘূর্ণি বেগে” আঘাত করছে।ভাঙছে নাগরাকুড়া টি- বাধ।ভাঙছে উলিপুরের থেতরাই,হোকোডাঙ্গা,বজরা এবং কাশেম বাজার।তাদের অভিযোগ, গেল এক সপ্তাহে তিস্তার ভাঙনে বা-তীরের শতাধিক ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হযেছে।আমরা জনগণের অভিযোগ শুনেছি।উত্তর দেইনি।কারণ কোনটা ঠিক আমরা বলতে পারি নাই। আসলে আমরা নদী বিশেষজ্ঞ নই।তাই! কিন্তু জনগণ আমাদের দেখে একটাই দাবি জোরালোভাবে করেছেন- তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনায় প্রস্তাবিত “তিস্তা মহাপরিকল্পনার” দ্রুত বাস্তবায়ন।ভাঙন কবলিত মানুষের কথা, পাগলা তিস্তাকে এবং আলীবাবা চল্লিশ চোরকে দমাতে ” তিস্তা মহাপরিকল্পনার ” বিকল্প নাই। ফিরতিপথে নৌকা থামাই পীরগাছার নামা রহমত চরে।তিস্তায় হঠাৎ পানি বাড়ায় বাদামচাষিদের চরের বাদাম তলিয়ে গেছে।চাষিরা বাড়ন্ত পানিতে ঢুবে যাওয়া চাষের বাদাম তুলে নৌকায় তুলছেন।কেউ বা ঘোড়ার গাড়িতে করে বাড়িতে বাদাম নিয়ে যাচ্ছেন। আবার অনেকেই নদীতীরে মাছ ধরার চেষ্টা করছেন। দুর্ভাগ্য- তিস্তা ঘেঁষা রহমত চর- শিবদেব- ছাওলা-নয়ারহাট- গাবুরার চরও পড়েছে ভাঙনের মুখে।চরের জনগণের মাঝে বাড়ছে চরম উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা।নৌকা থেকে নেমে নামা রহমত চর দিয়ে হাটাপথে রংপুর জেলার পীরগাছার সাহেব বাজারের পাকা রাস্তায় উঠলাম।পেছনে রেখে এলাম ভাঙনপীড়িত অনেক গ্রাম,গ্রামের অসংখ্য মানুষ এবং পাগলা “তিস্তা”-কে। সারাদিন পরিদর্শন টিমে ছিলেন- তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি নজরুল ইসলাম হক্কানী,স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয় নেতা রেজওয়ান আলী, রবিউল ইসলাম স্হানীয় সংগঠক ফারুক মিয়াসহ চরের স্হানীয় নেতৃবৃন্দ।

সর্বশেষ