Site icon নতুন কথা

তিস্তা তীরের ক্ষতিগ্রস্ত বাদাম চাষিদের ক্ষতিপূরণ এবং” তিস্তা মহাপরিকল্পনার” কাজ দ্রুত শুরু করার দাবি।

এবছর আগাম বন্যায় তিস্তাপারের হাজারহাজার হেক্টর জমির বাদাম পানির নিচে তলিয়ে গেছে।কৃষকরা অপরিপক্ক বাদাম গাছ তুলে গরু -ছাগলকে খাওয়াচ্ছেন।করোনার দু:সময়ে বাদাম চাষিদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে।বাদাম চাষ খুবই ব্যয়বহুল।১ বিঘা জমি চাষ করতে খরচ লাগে ১৫ হাজার টাকা।গেল বছর বাদাম বীজের দাম প্রতিমন ছিল ৩ হাজার টাকা।এবছর ব্যবসায়ী সিণ্ডিকেটের কারসাজিতে ওই বীজ কৃষককে কিনতে হয়েছে প্রতিমন ১০ হাজার টাকা।বাদাম ৩ মাসি ফসল। এবার বৃষ্টির অভাবে বাদাম চাষে কৃষকের সেচের খরচ বেড়েছিল বহুগুন।এক বিঘা জমিতে ফলন হয় ৬ থেকে ৭ মন।তিস্তা চরের বাদাম চাষের সাথে যুক্ত অধিকাংশই বর্গা,প্রান্তিক এবং গরিব কৃষক।ব্যয়বহুল বাদাম চাষে কৃষকরা এনজিও,আত্বীয়, দাদন ব্যবসায়ী,বেসরকারি ব্যাংকসহ নানা উৎস থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে বাদাম চাষে হাত লাগান।জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে বাদাম পরিপক্ক হয়।কিন্তু এবছর মে মাসেই তিস্তা নদীতে হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তার বিস্তৃন্ন চরাঞ্চলের বাদাম খেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে।এমতাবস্থায় কৃষকের জীবনে নেমে এসেছে ভয়াবহ দুর্ভাবনা। দুর্ভাবনাগ্রস্ত বাদাম চাষি কৃষক’রা শংকিত হয়ে পড়েছেন- কি ভাবে তারা ধার,দেনা ও ঋণ পরিশোধ করবেন।ইতোমধ্যেই এনজিও ও দাদন ব্যবসায়ীরা কৃষকদের সতর্ক করে বলেছেন, ‘ ফসল তলিয়ে যাক,ঢুবিয়ে যাক তা তাদের দেখার বিষয় নয়।তাদের কিস্তি দিতে হবে,সুদ দিতে হবে ঋণ পরিশোধ করতেই হবে’।তিস্তা চরের বাদাম চাষির এই মহা দুর্ভোগে সরকারকে বাদাম চাষিদের ক্ষতিপূরণ প্রদানে সহযোগীতার হাত প্রসারিত করার সবিশেষ আহ্বান জানিয়েছেন ” তিস্তা বাঁচাও,নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের” সভাপতি নজরুল ইসলাম হক্কানী,সাধারণ সম্পাদক শফিয়ার রহমান। নেতৃবৃন্দ দ্রুত এলাকাভিত্তিক তিস্তা চরের ক্ষতিগ্রস্ত বাদাম চাষিদের তালিকা প্রণয়ন, তাদের হাতে খাদ্য,নগদ অর্থ প্রণোদনা সহ এনজিও /দাদন ঋণের সুদ মওকুফ ও কিস্তি আদায় বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।পাশাপাশি- তিস্তাপারের “হিডেন ডায়মন্ড” খ্যাত কৃষি ও কৃষককে রক্ষার জন্য বাজেটে সমলয় / সমবায় কৃষির প্রবর্তন, শষ্যবীমা চালুসহ অকাল বন্যা,নদী ভাঙনের হাত থেকে মানুষকে বাঁচাতে “তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ দ্রুত শুরু করার দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।নেতৃবৃন্দ রংপুর বিভাগ এবং চরের কৃষির উন্নয়নে বাজেটে আলাদা বরাদ্দ রাখার দাবি জানান।
লেখকঃ অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী, পলিটব্যুরো সদস্য, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি।
Exit mobile version