বৃহস্পতিবার,২৫,এপ্রিল,২০২৪
37 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪
Homeসম্পাদকীয়মুক্তমততিস্তা: মারার ওপর খাড়ার ঘাঁ

তিস্তা: মারার ওপর খাড়ার ঘাঁ

ডিসেম্বর মাস থেকে তিস্তা নদী পার হতে নৌকা লাগে না। এপ্রিল মাস পর্যন্ত এ অবস্থা থাকে। এর কারণ ভারতীয় অংশে গজলডোবায় সমস্ত পানি আটকিয়ে ভিন্ন পথে নিয়ে যায়। গজলডোবা ব্যারেজের ভাটি দিকে চোয়ানী পানি ও কিছু উপনদীর পানি তিস্তায় প্রবাহিত হয়। তিস্তাপারের মানুষের ভাষায় খরাকালে তিস্তা নদী পারাপারে গামছা খায় না। অর্থ্যাৎ কাপড় ভিজে না। এই পানিটুকু বাংলাদেশ অংশে হাতীবান্ধা উপজেলায় অবস্থিত দোয়ানী ব্যারেজে আটকিয়ে খরাকালে মৃত তিস্তার সেচ প্রকল্পকে নামকা ওয়াস্তে বাঁচিয়ে রাখার প্রাণপণ চেষ্টা চলে। এতে তিস্তাও পানিশূন্য হয় আবার ঠিকমত সেচও পায় না কৃষক। কোনো কোনো সুবিধাবাদী শ্রেণি তিস্তা সেচ প্রকল্পের এই বাস্তবতা তুলে না ধরে ফুলিয়ে ফাপিয়ে তুলে ধরে গরীব এই দেশের অর্থের অপচয় করাতে উ বাংলাদেশের তিস্তাবাসী এই খরা মৌসুমে তিস্তার বুকে আলু, ভুট্টা, পিঁয়াজ, তামাক, রসুন, মিষ্টি কুমড়া, বাদাম সহ নানা ধরনের ফসল ফলিয়ে নিজের পরিবার ও দেশের খাদ্য ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে। এই ফসল তাঁরা মার্চ মাসের শেষ থেকে মে মাসের প্রথম দিক পর্যন্ত ঘরে তোলে। কিন্তু দুঃখের বিষয় কোনো কোনো বছর হঠাৎ করে দুই তিনদিনের জন্য গজলডোবায় পানি ছেড়ে দেয়। ফসল ওঠার সময় এই পানিতে নিচু জায়গার ফসল ডুবে নষ্ট হয়। এবছরও এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে হঠাৎ করে তিস্তার পানি অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় পিঁয়াজ, রসুন, মিষ্টি কুমড়ার ফসল সহ অনেক জমির ফসল নষ্ট হয়ে কৃষকের মাথায় হাত। বর্ষায় ফসল হয় না। খরাকালের এই ফসল দ্বারা কোনোরকমে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। সেটুকুও এবার পানি খেয়ে ফেলল। আজ আবার যে শুষ্ক তিস্তা সেই শুষ্ক তিস্তায় রয়ে গেল। শুধু পিঁয়াজ রসুন, মিষ্টি কুমড়ার ক্ষেত পচে গেল। আমাদের ( তিস্তার কৃষকের) এই দুরবস্থার খবর কে করবে? কে হেঁটে হেঁটে আমাদের এই দুরবস্থা দেশবাসীকে জানাবে। হঠাৎ এই পানির আগমনে অনেকে খুশি হয়। কিন্তু তাঁরা আজকে এসে দেখুক নদীতে ঐ পানি আছে কি না। আমাদের নিয়ে সকলের উপহাস। আমরা সবার আগে চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ” তিস্তা নদী সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও পুনরুদ্ধার প্রকল্প” এর দ্রুত বাস্তবায়ন।

লেখকঃ শফিয়ার রহমান, সাধারণ সম্পাদক, তিস্তা বাঁচাও নদী,বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ।

সর্বশেষ