Site icon নতুন কথা

বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন চায় যুক্তরাজ্য: পররাষ্ট্র সচিব

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশে একটি ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও সহিংসতামুক্ত’ নির্বাচন দেখার প্রত্যাশা প্রকাশ করেছে।

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দুই দেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত পঞ্চম কৌশলগত সংলাপের সময় যুক্তরাজ্যের পক্ষে বাংলাদেশের সঙ্গে নির্বাচন ইস্যু নিয়ে আলোচনায় এই প্রত্যাশা করা হয় বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব।

তিনি আর‌ও বলেন, অনিয়মিত বা অবৈধ হয়ে পড়া বাংলাদেশিদের ফেরাতে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে শিগগিরই স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর বা এসওপি চুক্তি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কৌশলগত সংলাপে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, সংলাপের সময় যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের সঙ্গে নির্বাচন ইস্যু নিয়ে আলোচনা করে। তিনি বলেন, যেহেতু তারা আমাদের পুরনো বন্ধু এবং উন্নয়ন সহযোগী, তাই আমাদের নির্বাচন নিয়ে তাদের আগ্রহ রয়েছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আমরাও আমাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছি। আমরা ইতিবাচক আলোচনা করেছি।

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বিষয়ে যুক্তরাজ্যের বক্তব্য কী এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘অংশগ্রহণমূলক’ শব্দের অনেক অর্থ হতে পারে।
সব মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ এক ধরনের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। তারা জানেনা কোন দল কী ভাবছে। ‘

মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আমরাও তাদের বলেছি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আমাদের কোনো দ্বিমত নেই। নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষক পাঠানো নিয়ে কথা বলেছি। বাংলাদেশ যে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানাচ্ছে তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

এ সময় তিনি এসওপির বিষয়ে বলেন, আজকের বৈঠকে আমরা দু’একটা মেকানিজমের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা এসওপি শিগগিরই স্বাক্ষর করব। যেন যুক্তরাজ্যে যারা ভিসার বাইরে থাকছে বা অবৈধ হয়ে আছে তাদের নিয়ে আসতে পারি। এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, মাইগ্রেশান অ্যান্ড মবিলিটি নিয়ে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ করতে তারা (যুক্তরাজ্য) সম্মত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের কিছু শিক্ষার্থী এবং কর্মী সেখানে যাচ্ছে সেটাকে আরও যেন বাড়ানো যায়; সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি।

সংলাপে অংশ নেওয়া যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আমাদের এ ধরনের এসওপি আছে, যার সদস্য ব্রিটেনও আছে। কিন্তু ব্রেক্সিট হওয়ার পর যুক্তরাজ্যের সঙ্গে আর আমাদের এসওপি হয়নি। সেই প্রেক্ষাপটে আমরা তাদের সঙ্গে এসওপি করছি।

এসওপি চুক্তি হলে প্রতি মাসে তিন থেকে চারজন অবৈধ বাংলাদেশি দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলেও জানান হাইকমিশনার মুনা।

সংলাপে ঢাকার পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। অন্যদিকে ব্রিটিশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের পার্মানেন্ট আন্ডার সেক্রেটারি ফিলিপ বার্টন।

জানা গেছে, সংলাপে ঢাকা- লন্ডন রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক, দুই দেশের অর্থনৈতিক, বাণিজ্য ও উন্নয়ন অংশীদারিত্বের বিষয়, রোহিঙ্গা সঙ্কটসহ বৈশ্বিক, আঞ্চলিক ও নিরাপত্তা বিষযয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

চতুর্থ বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য কৌশলগত সংলাপ ২০২১ সালে লন্ডনে অনুষ্ঠিত হয়। ওই সংলাপে সর্ব যুক্তরাজ্য ২০২৯ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের বাজারে শুল্ক-মুক্ত, কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার প্রদানের মাধ্যমে একটি মসৃণ এবং সফল স্নাতক অর্জন এবং রপ্তানি-নেতৃত্বাধীন বৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি জানিয়েছে। গতকালকের বৈঠকে সেটিও পুনর্ব্যক্ত করে দেশটি।

Exit mobile version