আজ সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস। প্রতি বছর ১০ অক্টোবর বিশ্বব্যাপী এই দিনটি পালন করা হয় মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে। ১৯৯২ সালে প্রথমবারের মতো দিবসটি পালন শুরু হয়। এরপর থেকে প্রতি বছর নানা আয়োজনে দিবসটি পালন করে আসছে বিভিন্ন দেশ।
বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসের মূল উদ্দেশ্য হলো ‘মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে বিদ্যমান ভুল ধারণা দূর করা, মানসিক সমস্যাকে লুকিয়ে না রেখে তা নিয়ে খোলামেলা কথা বলা এবং মানসিক চিকিৎসাকে সহজলভ্য ও সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য করে তোলা।’ বাংলাদেশে ২০১৮-১৯ সালের জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য জরিপ অনুযায়ী, দেশের ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক কোনো না কোনো মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। শিশু-কিশোরদের মধ্যেও এ হার কম নয়, যা প্রায় ১২ দশমিক ৬ শতাংশ। তবে উদ্বেগের বিষয় হলো আক্রান্তদের মধ্যে ৯২ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক ও ৯৪ শতাংশ শিশু-কিশোর কখনোই কোনো ধরনের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নেননি। তারা না খাচ্ছেন ওষুধ, না নিচ্ছেন কাউন্সেলিং।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিষণ্নতা (ডিপ্রেশন) ও উদ্বেগ (অ্যাংজাইটি) মানসিক সমস্যাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাধারণ। কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত কাজের চাপ, স্বল্প পারিশ্রমিক, চাকরি হারানোর ভয়, সহকর্মীদের অসহযোগিতা, দারিদ্র্য ও সামাজিক অবস্থান হারানোর আশঙ্কা কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্যকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করছে। পরিসংখ্যান বলছে, কর্মক্ষেত্রে প্রতি পাঁচজনে একজন কোনো না কোনো মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। এমনকি গুরুতর মানসিক অসুস্থতার কারণে তাদের ৮০ শতাংশই কাজ হারাচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানসিক সমস্যাকে অবহেলা করলে তা দীর্ঘমেয়াদি ও জটিল রূপ নিতে পারে। তাই কোনো উপসর্গ দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসা নেওয়া জরুরি। স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্র কিংবা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া মানসিক সুস্থতার প্রথম পদক্ষেপ।
বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসের মূল বার্তা হচ্ছে ‘মানসিক স্বাস্থ্যই মানসিক শক্তি, সচেতন হই, সহানুভূতিশীল হই’। এ দিবসটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, শুধু শারীরিক সুস্থতা নয়, মানসিক সুস্থতাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।



