Site icon নতুন কথা

ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট থেকে সতর্ক থাকুন

দেশজুড়ে এখনো লকডাউন চলছে। কিন্তু ঢিলেঢালা লকডাউন পালনে কারও আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। সর্বত্র অনীহা আর অবহেলা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাদে প্রায় সবই চলছে। কোথাও স্বাস্থবিধি মানার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। সবখানেই যেন ‘ডন্ট কেয়ার ভাব’। মনে হয় যেন দেশে করোনাই নেই। এরই মধ্যে সীমান্ত জেলাসমূহে করোনার দাপট বেড়েছে। ঈদের পর তা ভয়ঙ্কর রুপ ধারণ করে। বর্তমানে করোনার দাপটে দেশের সীমান্ত এলাকার ১৫ জেলার টলমলে অবস্থা। প্রতিদিন হু হু করে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। গত ১ সপ্তাহে এসব জেলায় শনাক্তের গড় হার ২৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। সর্বোচ্চ শনাক্ত হয়েছে চাপাইনবাবগঞ্জ। এ জেলায় শনাক্তের হার ৩৫ দশমিক ৭ শতাংশ। এর পরেই খুলনায় ২৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ, রাজশাহীতে ২২ দশমিক ৭৪ শতাংশ, মৌলভী বাজারে ২০ শতাংশ, মেহেরপুরে ১৮ দশমিক ৮১ শতাংশ, দিনাজপুরে ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ, সাতক্ষীরায় ১৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ, সিলেটে ১৪ শতাংশ, যশোরে ১৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং কক্সবাজারে ১২দশমিক ৮৩ শতাংশ। সীমান্ত জেলাগুলো থেকে করোনা ছড়াচ্ছে দেশেরর অন্যান্যা জেলাগুলোতেও। গোপালগঞ্জ, নাটোর ও গাইবান্দা, ঢাকা, নরসিংদি ও ঝালকাঠি সহ সারাদেশেই করোনা শনাক্তের হার বাড়ছে। এছাড়া সারা দেশে গত ১ সপ্তাহে করোনা শনাক্তের গড় হার ৯ দশমিক ০৮ শতাংশ। সুতরাং যারা দেশে করোনা নেই বলে মনে করছেন তারা ঘোরের মধ্যে আছেন। অবহেলায় আর অবজ্ঞায় নিজের এবং অন্যের জন্য বিপদ ডেকে আনছেন।
জাতীয় রোগ তত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এবং ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপিং সায়েন্স আইডিএমএইচআইয়ের যৌথ গবেষণা বলছে শনাক্তের ৮০ শতাংশই ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে। ১৬ শতাংশ নমুনায় বিটা ভ্যারিয়েন্ট বা সাউথ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট এবং ১ টি অজানা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্যবিদদের মতে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট খুবই ভয়ঙ্কর। সংক্রমিত হওয়ার পর খুব কম সময়ে ফুসফুস নষ্ট করে ফেলে। ইতোমধ্যে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১ দিনে ১৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
তাই করোনার এই ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট থেকে আমাদের আরো বেশি সাবধান এবং সতর্ক থাকতে হবে। ইতোমধ্যে হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। চাপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহীসহ সীমান্ত জেলাগুলোতে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট থেকে রক্ষার জন্য যেভাবেই হোক সীমান্তে আরো সতর্ক হতে হবে। মনে রাখতে হবে সবার আগে জীবন। জীবন থাকলে জীবিকার ব্যবস্থাও হবে। সরকারকে একদিকে যেমন সীমান্তে নজরদারি বাড়াতে হবে তেমনি কর্মহীন মানুষের পাশেও দাঁড়াতে হবে। পাশাপাশি মানুষকেও সচেতন হতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে আরো মনোযোগী হতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। আমরা বলব ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধে সতর্ক থাকুন জীবন বাঁচান।

Exit mobile version