রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভারতকে ‘অবাধে জ্বালানি তেলের চালান’ সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছেন। যদিও রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনা বন্ধের জন্য ভারতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের চাপ রয়েছে।
পুতিন বৃহস্পতিবার থেকে ভারত সফর শুরু করেছেন। শুক্রবার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পুতিন নিরবিচ্ছিন্নভাবে জ্বালনি সরবরাহের ওই ঘোষণা দেন। যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার তেল কেনার শাস্তি হিসাবে ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আলোপ করেছে। রাশিয়ার তেল কিনে ভারত মস্কোর ইউক্রেইন যুদ্ধে তহবিল যোগাচ্ছে বলে অভিযোগ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের।
ওদিকে, রাশিয়া ২০২২ সালে ইউক্রেইনে আগ্রাসন শুরুর পর যেসব নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে, তাতে তাদেরকে জ্বালানি রপ্তানির জন্য নতুন নতুন খদ্দের খুঁজতে হচ্ছে। ভারত রাশিয়ার অশোধিত তেলের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রেতা দেশ। প্রথমে আছে চীন। গত অক্টোবর মাসে ভারত রাশিয়ার ৩৮ শতাংশ অশোধিত তেল কিনেছে।
বৃহস্পতিবার ভারত সফরে গিয়ে পুতিন সেখানকার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও প্রেসিডেন্টের উষ্ণ অভ্যর্থনাও পেয়েছেন। এজন্য ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দুইজনকেই ধন্যবাদ জানান পুতিন। এরপর মোদীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক সম্পর্কে পুতিন বলেন, ‘আমাদের মধ্যে ‘গঠনমূলক’ এবং ‘বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে’ আলোচনা হয়েছে। বিভিন্ন প্রয়োজনে মোদীর সঙ্গে ‘নিয়মিত’ ফোনালাপ হওয়ার কথাও পুতিন উল্লেখ করেন। বৈঠকে হওয়া চুক্তিগুলোকে আকর্ষণীয় বলেও মন্তব্য করেন পুতিন। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে নতুন চুক্তির সম্পর্কে জানানো হয়। পুতিন এবার দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্য নিয়েই ভারত সফর করছেন। দুই দেশের বাণিজ্যে নিজেদের জাতীয় মুদ্রার ব্যবহার বাড়া নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন পুতিন। ভারতের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক প্রকল্প নির্মাণেও সহায়তা করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। আর তেল প্রসঙ্গে পুতিন বলেছেন, ভারতে অবাধে জ্বালানির চালান পাঠিয়ে যেতে প্রস্তুত রাশিয়া।
রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানি তেল না কিনতে ভারতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের যে তীব্র চাপ তার সমালোচনা করে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি রাশিয়ার তেল কিনতে পারে, তাহলে ভারত পারবে না কেন? পুতিনের ভারত সফরের মধ্যে সম্প্রচারমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে তার এক সাক্ষাৎকার প্রচার করে। সেখানেই তাকে তেল কেনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের এই সমালোচনা করতে দেখা গেছে।



