চিরসবুজ লবঙ্গগাছের ফুলের কুঁড়িই হলো লবঙ্গ। এতে থাকা ‘ইউজেনল’ নামের উপাদানের জন্য লবঙ্গ থেকে মিষ্টি সুগন্ধ পাওয়া যায়। এই মসলাটি ঔষধি হিসেবে কাজ করে। সর্দি কাশি কমানো ছাড়াও শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা অনেকটাই শক্তিশালী করে তোলে। দাঁত, মাড়ির সুস্থতা নিশ্চিত করে লবঙ্গ।
লবঙ্গের উপকারিতা ও অপকারিতা-
প্রতিদিন সকালে ও রাতে ২–৩ টি করে লবঙ্গ চিবিয়ে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়-
১. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা অনেক রয়েছে। যেমন, রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে লবঙ্গের নাইজেরিসিন উপাদানটি দারুণ কাজ করে। তাই ডায়াবেটিসের রোগীরা এই রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য লবঙ্গ খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।
২. সাইনাস: সাইনাসের মাথাব্যথায় এর তেল খুব কাজে দেয়। এ ছাড়া বুকের ব্যথায় এর তেল মালিশে বেশ উপকার পাওয়া যায়। এর অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়া ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণের জন্য দাঁতের ব্যথায় এটি খুব উপকারী।
৩. দাঁত ও মাড়ি ব্যথায়: লবঙ্গ দাঁতের ব্যথা দূরকরে। মাড়ির ক্ষয় নিরাময় করে। লবঙ্গতে উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর এমন কিছু বিক্রিয়া করে যে নিমেষে দাঁতের যন্ত্রণা কমে যায়। লবঙ্গ পানির কুলকুচি নিয়মিতই করতে পারেন।
৪. আলসার: অনেক কারণে পাকস্থলীতে আলসারের সমস্যা হতে পারে। এ সমস্যা থাকলে প্রতিদিন দুটি করে লবঙ্গ খেতে পারেন। কেননা, এই লবঙ্গ পাকস্থলীতে মিউকাস উৎপাদনে সাহায্য করে। এই মিউকাসই সংক্রমণের হাত থেকে পাকস্থলীকে রক্ষা করতে ঢাল হিসেবে কাজ করে।
৫.সর্দি–কাশি ও ঠাণ্ডা লাগা কমায়: সর্দিকাশির মহৌষধ হিসেবে লবঙ্গ কাজ করে। লবঙ্গ চিবিয়ে রস গিলে খেলে বা লবঙ্গ মুখে রেখে চুষলে সর্দি, কফ, ঠাণ্ডা লাগা, অ্যাজমা, গলাফুলে ওঠা, রক্ত পিত্ত আর শ্বাস কষ্টে সুফল পাওয়া যায়।
৬. স্ট্রেস কমায়: এক টুকরো লবঙ্গ মুখে দিয়ে চুষতে থাকলে স্ট্রেস অনেকটাই কমে যেতে পারে। এর চা-ও খুব ভালো কাজ দেয়।
যাদের রক্তে শর্করার মাত্রা কম, তাদের কখনোই বেশি পরিমাণে লবঙ্গ খেতে নেই। কেননা, তাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত লবঙ্গ সেবন হাইপারগ্লাইসিমিয়ার কারণ হতে পারে। অনেক চিকিৎসকই মনে করেন, যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে লবঙ্গ সেবনে র্যাশ বা চুলকানির সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে লবঙ্গ সেবন করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।


