Site icon নতুন কথা

শীতে কাঁপছে বাংলাদেশ-বিপাকে শ্রমজীবীরা

নতুন কথা প্রতিবেদন : তীব্র শৈত্যপ্রবাহে কাহিল হয়ে পড়েছে উত্তরের মানুষ। শীতের তীব্রতা বেড়েছে সারা দেশেই। রক্ষা পাচ্ছেন না রাজধানীর মানুষ। এবারের শীতে কাঁপছে গোটা বাংলাদেশ। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে সামনে আরো শৈত্যপ্রবাহ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। শীতের তীব্রতায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন দিনআনি শ্রবজীবীরা। কাজে না গেলে পেট চলে না, শীতের তীব্রতায় কাজেও যেতে পারেন না। ফলে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন এই শ্রেণির মানুষরা।
জানাগেছে, প্রচ- শৈত্যপ্রবাহে শীতের তীব্রতায় বিভিন্ন জেলায় তাপমাত্রা অনেক কমেছে। হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে ঠা-াজনিত রোগীর সংখ্যা। উত্তরের হিমেল হাওয়া ও কোথাও কোথাও ঘন কুয়াশায় বয়ে যাচ্ছে মৃদু ও মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। তীব্র শীতে জনজীবন কাহিল হয়ে পড়েছে। প্রতিদিনের জীবনযাপনে ছন্দপতন ঘটছে সাধারণ মানুষদের। জীবন ও জীবিকার সঙ্কটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষেরা। শীতের হাত থেকে বাঁচার জন্য অনেকে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
গ্রাম ও শহরের দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষের দুর্ভোগ এখন চরমে। শীতের প্রয়োজনীয় গরম কাপড়ের অভাবে অনেক দরিদ্র মানুষ বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। ফলে রুটি-রুজিও বন্ধ। দ্রুত সরকারি বেসরকারি সহায়তা চেয়েছেন তারা। এদিকে শীতের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি জ্বরসহ নানাবিধ রোগের। তাতে রয়েছে করোনা আতঙ্ক। সব মিলিয়ে দেশবাসী এই শীতে আছেন চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায়।
দেশের কোথাও কোথাও তাপমাত্রা নেমে এসেছে ৬/৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। কিছু এলাকায় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মত শিশির ঝরেছে। অনেক জায়গায় দিনেও হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলতে দেখা যায়। কোনো কোনো দিন সূর্যের দেখাও মেলে না।
তীব্র শীতের কারণে চলতি ইরিবোরো মৌসুম ব্যহত হচ্ছে। এছাড়া ঘন কুয়াশায় আলু-মরিচ বিভিন্ন সবজির ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন চাষীরা। মাঘ মাসের প্রথমদিন থেকেই সারাদেশে বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। ‘মাঘের শীত বাঘের গায়’। উত্তরাঞ্চলের এই প্রবাহেরই প্রতিফলন যেন এবারের শীত। বাড়ি থেকে বের হতে না পারা অটোচালক, দিনমজুর, ক্ষুদ্রব্যবসায়ী, খেতমজুরসহ গরিব মানুষরা মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। হাট-বাজার রাস্তাঘাট ফাঁকা ও জনশূন্য থাকায় এক অদ্ভুত স্তব্দতা নেমে এসেছে গোটা অঞ্চলে। নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলগুলোয় ঠা-ার প্রকোপ বেশি। দুর্গম এই চরগুলোতে সরকারি বা বেসরকারি কোনো সাহায্য পৌঁছে না বলা যায়। ফলে তাদের দুর্ভোগ বলতে গেলে সীমাহীন। ব্রক্ষ্মপুত্র, দুধকুমার, তিস্তা, ধরলা প্রভৃতির তীরবর্তী কুড়িগ্রাম, লালমনির হাট, ঠাকুরগাঁও, রংপুরের শীতার্ত মানুষের দুর্দশা অবর্নণীয়।
পরিবেশবিদদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এই অঞ্চলে শীতের সময় প্রচ- শীত এবং গরমের সময় প্রচ- গরম অনুভূত হয়। গত কয়েকদিন থেকে শীত তার আপনরুপে ফিরে আসায় দরিদ্র, শ্রমজীবীরা বেশ বেকায়দায় পড়ে যায়। তীব্র ঠা-ায় মানুষ তো বটেই গরু ছাগল সহ নানা গবাদি পশুর অবস্থাও খারাপ। তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসে নেমে এসেছে। এই তাপমাত্রা আরো কমতে পারে। এই অবস্থাও কিছুদিন অব্যহত থাকবে বলে আবহাওয়াবিদরা জানান। এই দুর্ভোগ থেকে বাঁচার জন্য শীতার্ত মানুষের মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে শীতবস্ত্র বিতরণের আবেদন জানিয়েছেন শীতার্ত মানুষেরা।

Exit mobile version