শ্রমজীবী মানুষকে সংগঠিত করার উদ্দীপনার নাম কমরেড আবুল বাশারঃজাতীয় শ্রমিক ফেডারশনের স্মরণসভায় কমরেড বাদশা

নতুন কথা প্রতিবেদনঃ “ক্ষমতাসীন সরকার ২৫টি পাটকল বন্ধ করে হাজার হাজার শ্রমিককে বেকার করেছে। রাষ্ট্রায়ত্ব চিনিকলও ব্যক্তি মালিকানা দেয়ার ষড়ডন্ত্র চলছে। রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল ও চিনিকল করার বন্ধ করার কারণে শুধু শ্রমিকরাই বেকার হবে না, এই শিল্পের যোগনদাতা চাষীদেরও ক্ষতিগ্রস্ত করা হচ্ছে। অবস্থা দৃষ্টে মনে হয়, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার মুক্তিযুদ্ধের মুল ধারা ও সংবিধানের মুলনীতি থেকে সরে আসছে যা আমাদের জন্য গভীর উদ্বেগের” বললেন ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশা এমপি। ৭ নভেম্বর বর্ষীয়ান শ্রমিক নেতা কমরেড আবুল বাশারের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। শ্রমজীবী মানুষের পরীক্ষিত নেতা কমরেড বাদশা এ সভায় আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশের কলকারখানাগুলোকে জাতীয়করণ করে জনগণের মালিকানায় দিয়েছিলেন। লক্ষ্য ছিল উৎপাদনের অংশীদারিত্বে জনগণের মালিকানা নিশ্চিত করা। রাষ্ট্রায়ত্বকরণের মূল্য শুধু মুনাফা অর্জন ছিল না, লক্ষ্য ছিল জনগণের সমৃদ্ধি অর্জনে ব্যয় করা।
কমরেড আবুল বাশারকে স্মরণ করে তিনি আরোও বলেন, ষাটের দশকের শ্রমিক আন্দোলনে যারা জড়িত ছিলেন তাদের মধ্যে বাম চেতনার ধারকরাই ছিলেন মুল ধারা। কমরেড আবুল বাশার সেই ধারার অগ্রপথিক।
কমরেড বাদশা বলেন, কিন্তু সেদিনের রাজনৈতিক বিভক্তি শ্রমিক আন্দোলনকে বিভক্তি করে তার ক্ষত করেছিল। মানুষকে সংগঠিত করার কাজই একজন কমিউনিস্টের কাজ। কমরেড আবুল বাশার আমাদের সেই উদ্দিপনার নাম। সরকারের নীতির কারণে দেশে দুর্নীতি, লুটপাট ও ব্যক্তিমালিকানার সুনামি চলছে। এর বিরুদ্ধে শ্রমিক আন্দোলনকেই রুখে দাঁড়াতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্ত্যবে পাট-সুতা-বস্ত্রকল শ্রমিক কর্মচারি সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক ও টিইউসি সংগ্রামী সভাপতি শহিদুল্লা চৌধুরী বলেন, দেশে ৭ কোটি শ্রমিকের অস্তিত্ব আজ বিলীন হওয়ার পথে। কথিত গণতান্ত্রিক সরকারগুলো শ্রম আইনকে মালিকদের স্বার্থে নিয়ে গেছে। শ্রমিক রক্তে উপার্জিত সম্পদ ভোগ করে মালিকরা। এটা একটা বৈষম্যমূলক সমাজ। শ্রমিক স্বার্থেই বিদ্যমান ব্যবস্থা পরিবর্তন করা দরকার। কমরেড আবুল বাশার ছিলেন এই লড়াইয়ের নেতা।
জাতীয় শ্রমিক ফেডারশেন সভাপতি কামরূল আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় আরো বক্তব্য রাখেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল হক আমিন, সরকারি কর্মচারি সমন্বয় পরিষদের মহাসচিব নোমন্জ্জুামান আল আজাদ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোস্তফা আলমগীর রতন, বাংলাদেশ কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের নারী বিষয়ক সম্পাদক শাহানা ফেরদৌসী লাকী, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক কমরেড কিশোর রায়, বিল্ডিং কনষ্ট্রাকশন শ্রমিক ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, করিম জুট মিল লেবার ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুকবুল হোসেন প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম দেলোয়ার হোসেন।