সোমবার,৮,ডিসেম্বর,২০২৫
17 C
Dhaka
সোমবার, ডিসেম্বর ৮, ২০২৫
প্রচ্ছদসীমানা পেরিয়েফ্লোটিলার আটক অধিকার কর্মীদের কারাগারে পাঠাতে চান, ইসরায়েলি মন্ত্রী

ফ্লোটিলার আটক অধিকার কর্মীদের কারাগারে পাঠাতে চান, ইসরায়েলি মন্ত্রী

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার আটক অভিযাত্রীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর পরিবর্তে কারাগারে পাঠাতে চান ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী ইতমার বেন-গিভর। শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় এই আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন তিনি।

এক্সবার্তায় বেন-গিভর বলেছেন, “ফ্লোটিলার আটক অভিযাত্রীদের যদি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠান—তাহলে আবার তারা ফিরে আসবে, বার বার আসবে। আমার মনে হয়, এখনই দেশে না পাঠিয়ে কয়েক মাস তাদের ইসরায়েলের কারাগারে রাখা উচিত। এতে তারা সন্ত্রাসীদের গন্ধে অভ্যস্ত হয়ে উঠবে।” এর আগে এক্সে পোস্ট করা এক ভিডিওবার্তায় ফ্লোটিলার অভিযাত্রীদের ‘সন্ত্রাসী’ বলে উল্লেখ করেছিলেন বেন-গিভর। ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার বাসিন্দাদের জন্য খাদ্য ও ওষুধ নিয়ে গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বন্দর থেকে গাজার উপকূলের দিকে যাত্রা শুরু করেছিল ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ মিশনের অন্তর্ভুক্ত ৪৩টি নৌযান। ফ্রিডম ফ্লোটিলা ফাউন্ডেশন, গ্লেবাল মুভমেন্ট টু গাজা, মাগরেব সুমুদ ফ্লোটিলা এবং সুমুদ নুসানতারা— ফিলিস্তিনিভিত্তিক এই ৪ আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা চার সংগঠনের জোট ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) ছিল এই মিশনের মূল উদ্যোক্তা।

সুইডেনের নাগরিক এবং আন্তর্জাতিক পরিবেশ আন্দোলন কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী নেতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি ও রাজনীতিবিদ মান্ডলা ম্যান্ডেলাসহ ৪৪টি দেশের ৫০০ জন নাগরিক ছিলেন সেই মিশনে। এই নাগরিকদের কেউ পার্লামেন্টারিয়ান, কেউ আইনজীবী, কেউ রাজনৈতিক আন্দোলনকর্মী এবং কেউ বা স্বেচ্ছাসেবী। কিন্তু গাজার জলসীমার কাছাকাছি আসার পর একে একে সবগুলো নৌযান এবং অভিযাত্রীদের আটক করে আশদোদ বন্দরে নিয়ে যায় ইসরায়েলের নৌবাহিনী। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, এখনও আশদোদ বন্দরেই আছেন তারা।

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার জাহাজ বহরের আটকরা অনশন শুরু করেছেন। ইন্টারনেশনাল কমিটি টু ব্রেক ‍সিজ অব গাজা এক বিবৃতিতে জানায়, আটক হওয়ার পর থেকেই ইসরায়েলের দেওয়া কোনো খাবার গ্রহণ না করে তারা অনশন-ধর্মঘট শুরু করেছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তারা অনশন চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ফ্লোটিলার জাহাজ বহর থেকে আটক অধিকারকর্মী কয়েকজনকে ইসরায়েল হেনস্তা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাদের হাত বেঁধে পাঁচ ঘণ্টা হাঁটু মুড়ে বসিয়ে রাখা হয়। দ্য আইরিশ টাইমস জানায়, আয়ারল্যান্ডের আটক কয়েকজন নাগরিক জানিয়েছেন, তাদের সঙ্গে আগ্রাসী আচরণ ও সহিংসতা চালিয়েছে ইসরায়েল। তাদের লাথি মারা হয়েছে এবং মরুভূমির জঘন্য কারাগারে রাখা হয়েছে। ফ্লোটিলা থেকে আয়ারল্যান্ডের ১৬ নাগরিককে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে ১০ জনের সঙ্গে কথা বলে আইনজীবী এসব তথ্য জানতে পেরেছেন। তাদেরকে জিওট জেলে রাখা হয়েছে।

রয়টার্স জানায়, গতকাল শুক্রবার ইউরোপ থেকে পাকিস্তানের করাচি, বুয়েন্স আয়ার্স থেকে মেক্সিকো সিটি– সব জায়গা বিক্ষোভ হয়েছে। ইতালিতে দেশব্যাপী হরতাল পালন করা হয়; লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে ফ্লোটিলার সমর্থনে বিক্ষোভ করেন।

আবারও যাত্রার অঙ্গীকার
গাজায় যে ক্ষুধার মহামারি চলছে, এসব জাহাজের ত্রাণ তাতে হয়তো মহামরুতে এক ফোঁটা পানির মতো হতো। তবু প্রতীকী যাত্রায় ইসরায়েলের তৈরি অবরোধ ভাঙতে চেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৪৪ দেশের প্রতিনিধিরা। তারা সেটা পারেননি। তবু তাদের চেষ্টায় পুরো বিশ্বের সংহতি ছিল। কয়েক ডজন জাহাজে থাকা মানুষের ইচ্ছার সঙ্গে সবার ইচ্ছা সম্মিলিত হয়েছে। পরিস্থিতি না বদলালে আবারও এ ধরনের যাত্রার অঙ্গীকার করেছে ফ্লোটিলা।

সর্বশেষ