মঙ্গলবার,৯,ডিসেম্বর,২০২৫
26 C
Dhaka
মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ৯, ২০২৫
প্রচ্ছদরাজনীতিআত্মপ্রকাশ করলো এনসিপি, এবি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নতুন জোট

আত্মপ্রকাশ করলো এনসিপি, এবি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নতুন জোট

“নতুন এ রাজনৈতিক জোটের নাম দেওয়া হয়েছে ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট” যাতে আরও অনেকে পরে যুক্ত হবেন বলে আশা করছেন এনসিপির আহ্ববায়ক ও জোটের মুখপাত্র নাহিদ ইসলাম। 

নির্বাচনের আগে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মিলে নতুন একটি রাজনৈতিক জোট গঠন করেছে; যেটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘গণতান্ত্রিক সংষ্কার জোট’। রাষ্ট্র সংস্কারের পক্ষে জনমত গঠন ও জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা শক্তিশালী করতে নতুন এ জোট গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়।

রোববার বিকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে তিন দলের নেতারা নতুন এ জোট গঠনের ঘোষণা দেন।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম নতুন জোটের মুখপাত্র হিসেবে থাকছেন। রাষ্ট্র সংস্কারের পক্ষে সরব এমন আরও কিছু দল, সংগঠন, মোর্চা, প্ল্যাটফর্ম ও প্রবীণ রাজনৈতিক ব্যক্তি এ জোটে যুক্ত হবে বলে আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান থেকে আশা প্রকাশ করা হয়। নতুন এ রাজনৈতিক জোটের ঘোষণা দিয়ে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমাদের এই ঐক্য প্রক্রিয়া চলমান থাকবে। আমরা যারা সংস্কারের পক্ষে বাংলাদেশকে একটি সার্বভৌম এবং মর্যাদাবান রাষ্ট্রের পক্ষে এতদিন লড়াই করেছি তারা এই জোটে ঐক্যবদ্ধ থাকব। এটা কেবল নির্বাচনি জোট নয়; এই জোটটা মূলত রাজনৈতিক জোট।”

জোট ঘোষণার জন্য দীর্ঘদিন ধরে ঐক্য প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পরে যে পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা বাংলাদেশে তৈরি হয়েছিল, মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছিল- গত দেড় বছরে ঐকমত্য কমিশনে আমরা তার সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে পারি নাই।” অনেক রাজনৈতিক দল সংস্কারের বিরোধীতা করছে দাবি করে নতুন জোটের মুখপাত্র নাহিদ বলেন, “এ নিয়ে আমাদের অনেক হতাশা রয়েছে। আমরা যারা মন থেকে সংস্কার চাচ্ছি সেই রাজনৈতিক শক্তিগুলো আজকে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি।”

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ুম বলেন, “এই আন্দোলনে এবং এই সংস্কারের পক্ষে যারা জীবন দিয়েছে তাদের পক্ষে রাজনীতিবিদরা কতটুকু ভূমিকা পালন করতে পারবে তা নির্ভর করছে আগামী নির্বাচনের ওপর। সংস্কারের সেই আকাঙ্খা বাস্তবায়নের জন্য আমরা প্রাথমিকভাবে তিন সংগঠন যাত্রা করছি। আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশে প্রধানত এখন যারা রাজনীতি করেন তারা প্রত্যেকে এই সংস্কারের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করেন। একাত্তরের আকাঙ্খা চব্বিশ পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয় নাই, ছাব্বিশের নির্বাচনে সেটা ব্স্তবায়ন হবে বলে আমরা আশা করি।”

এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জু বলেন, “তরুণদের কাছে আমাদের যে প্রত্যাশা ছিল তা নানা কারণে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। পুরাতন রাজনীতির প্রতি এদেশের মানুষের মোহভঙ্গ হয়েছে, মানুষের মধ্যে খুবই বিরক্তি দেখা দিয়েছে। যার প্রেক্ষিতে সকলেই চান একটা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত আসুক। জুলাই অভ্যুত্থানের ভিত্তিতে বাংলাদেশকে একটা নতুন রাজনৈতিক দিশা দেওয়ার জন্য আমরা প্রাথমিকভাবে তিনটা দল হাতে হাত মিলিয়ে আপনাদের সামনে এসে দাঁড়িয়েছি। আমাদের অনেক ভুল ত্রুটি আছে। আজকে আমি সবার পক্ষ থেকে আপনাদের কাছে ক্ষমা চাই। আমাদেরকে যারা বিভ্রান্ত করেছে, ভুল পথে পরিচালিত করেছে, সবকিছুর পর্যালোচনার পরে আমরা একটা নতুন অভিযাত্রায় আসতে চাই।” এই জোটের সব সদস্য একই প্রতীকে নির্বাচন করতে চায় বলে তাদের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন নাহিদ ইসলাম। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত আর কিছু বলেননি তিনি।

প্রশ্নত্তোরে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মঞ্জু বলেন, নিজেদের মধ্যে বিস্তারিত আলাপ শেষে জোটের বিস্তারিত কর্মসূচি অচিরেই তুলে ধরা হবে। এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, এবি পার্টির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব মিনার, ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল দিদারুল আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জোবায়ের আহমেদ ভূঁইয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসরীন সুলতানা মিলি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সহসভাপতি সাইদুল খন্দকার সবুজ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ সোহেল শিকদার, মৎসজীবী ও অবাঙ্গালি বিষয়ক সম্পাদক শেখ নাসির উদ্দিনসহ অন্যান্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ