জুলাই অভ্যুত্থানের পর মাঠের বিভিন্ন আন্দোলন ও দাবিদাওয়া আদায়ের আলোচনায় জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মোটামুটি একই পথে হাঁটছিল বলে মনে হচ্ছিল। রাজনৈতিক বিভিন্ন ইস্যুতে অনেক ক্ষেত্রেই সহাবস্থান নিচ্ছিল দল দুটি। কিন্তু জুলাই জাতীয় সনদ যেন দুই দলকে দুই পথে নিয়ে গেল। জামায়াত সনদে স্বাক্ষর করল। স্বাক্ষর করল না এনসিপি।
শুক্রবারই এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছিলেন, কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্যের নামে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে কাগজে সই করছে। আর গতকাল শনিবার এনসিপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘গতকালকের অনুষ্ঠানে গিয়েছিল, গতকালকে যে প্রক্রিয়ায় স্বাক্ষর করেছে, গণ-অভ্যুত্থান থেকে এবং জনগণ থেকে তারা ছিটকে গিয়েছে।’ এনসিপির প্রধানের দুই দিনের বক্তব্যই যে জামায়াতকে ইঙ্গিত করে, তা ধারণা করছেন অনেকে। তাঁরা বলছেন, দুই দলের সম্পর্কে দূরত্ব বাড়ছে বলে মনে হচ্ছে। আগামী নির্বাচনে দল দুটির জোটবদ্ধ হওয়ার যে আলোচনা রাজনীতির ময়দানে ছিল, তা-ও মনে হয় হোঁচট খেল। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণার পর থেকে দুই দলের মতভিন্নতা প্রকাশ পেতে শুরু করে। আর সেপ্টেম্বরে জামায়াতের যুগপৎ আন্দোলনে এনসিপি যোগ না দেওয়ায় দল দুটির সম্পর্কের টানাপোড়েন চোখে পড়ে। সর্বশেষ জামায়াত জুলাই সনদে স্বাক্ষরের পর সেটা প্রকাশ্যে চলে এসেছে।
জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে এনসিপির নেতারা প্রকাশ্যে কিছু বলতে রাজি হননি। তবে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করা নিয়ে জামায়াতের অবস্থানে এনসিপি অসন্তুষ্ট বলে জানিয়েছেন একাধিক নেতা। এনসিপির দাবি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যেমন সম্পর্ক থাকে, এনসিপি আর জামায়াতের মধ্যেও তেমন রাজনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। জামায়াত আর এনসিপির মধ্যকার সম্পর্ক সব সময় মিডিয়া ফ্রেমিং করেছে। একটা ঐক্য আছে, এই আছে, সেই আছে। এ রকম কিছু না। আমাদের মধ্যে আলাদা কোনো দূরত্বের বিষয় নাই। আগে সম্পর্ক যেমন ছিল। এখনো তেমন।’ আমাদের কাছে আগামী নির্বাচনে কার কতটা আসন, এসবের চেয়ে এটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ মানুষকে দেওয়া প্রতিশ্রুতির পক্ষে থাকা।’



