বৃহস্পতিবার,২০,নভেম্বর,২০২৫
26 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২০, ২০২৫
প্রচ্ছদসীমানা পেরিয়েশি-পুতিন-মোদীর সঙ্গে কথার পর: ইউক্রেইনে শান্তির জন্য নেটো সম্প্রসারণ প্রসঙ্গেরও সমাধান লাগবে

শি-পুতিন-মোদীর সঙ্গে কথার পর: ইউক্রেইনে শান্তির জন্য নেটো সম্প্রসারণ প্রসঙ্গেরও সমাধান লাগবে

চীনের তিয়ানজিনের মেইজিয়াং কনভেনশন অ্যান্ড এক্সিবিশন সেন্টারে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) সম্মেলন শুরু হওয়ার আগে খোশগল্পে ভারতের নরেন্দ্র মোদী, রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন আর চীনের শি জিনপিং। ছবি: রয়টার্স

চীনের শি জিনপিং এবং ভারতের নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথার পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেইনে স্থায়ী শান্তির জন্য নেটোর পূর্বমুখী সম্প্রসারণ প্রসঙ্গেরও সমাধান হতে হবে।

সোমবার চীনের তিয়ানজিনে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

মস্কো সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী ও ইউক্রেইনের সেনাদের মধ্যে ইউক্রেইনের পূর্বাঞ্চলে ৮ বছর ধরে যুদ্ধ চলার পর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুতিন প্রতিবেশী দেশটিতে কয়েক লাখ সেনা পাঠিয়ে ‘বিশেষ সামরিক অভিযানে’ নামেন।

ক্রাইমিয়াসহ ২০১৪ পূর্ববর্তী ইউক্রেইনের প্রায় এক পঞ্চমাংশ এখন রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

ইউক্রেইন এবং তার পশ্চিমা মিত্ররা মস্কোর এই অভিযানকে ‘সাম্রাজ্যবাদী কায়দায় জমিদখল’ আখ্যা দিচ্ছে।

অন্যদিকে পুতিন একে দেখছেন ক্ষয়িষ্ণু পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে লড়াই হিসেবে। এ পশ্চিমারা ১৯৮৯ সালে বার্লিন প্রাচীরের পতনের পর থেকে নেটোকে ক্রমাগত পূর্ব দিকে বিস্তৃত করার মাধ্যমে রাশিয়াকে হেয় করে আসছে।

তিয়ানজিনে এসসিওর সম্মেলনের ফাঁকে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মোদীকে পুতিনের হাত ধরে একসঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের দিকে যেতে দেখা গেছে। কথা বলার সময় তারা তিনজনই ছিলেন হাসিমুখে, আশপাশে ছিলেন অনুবাদকরা।

পরে সম্মেলনে দেওয়া বতৃতায় পুতিন বলেন, পশ্চিমারা ইউক্রেইনকে নিজেদের প্রভাব বলয়ে নিতে এবং সাবেক এই সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রটিকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন নেটো সামরিক জোটে ঢোকাতে প্রলুব্ধ করেছে।

“ইউক্রেইনে স্থায়ী ও দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের জন্য এই সংকটের মূল কারণগুলো, যা আমি মাত্রই বললাম, এবং পূর্বেও যা বারবার বলেছি, অবশ্যই নির্মূল করতে হবে।

“নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটি ন্যায্য ভারসাম্যও পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে,” নেটো ও ইউরোপীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার দিকে ইঙ্গিত করে বলেন পুতিন।

২০০৮ সালে হওয়া বুখারেস্ট সম্মেলনে নেটো নেতারা ভবিষ্যতে ইউক্রেইন ও জর্জিয়াকে জোটে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে একমত হয়েছিলেন। ২০১৯ সালে ইউক্রেইনও তার সংবিধান সংশোধন করে নেটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পূর্ণাঙ্গ সদস্যপদ লাভের পথে অগ্রসর হওয়ার অঙ্গীকার করেছে।

ইউক্রেইনে যুদ্ধ বন্ধে পুতিন যেসব শর্ত দিয়েছেন তার মধ্যে নেটোর পূর্বমুখী সম্প্রসারণ বন্ধে পশ্চিমা নেতাদের লিখিত প্রতিশ্রুতি এবং রাশিয়ার ওপর থাকা সিংহভাগ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কথাও রয়েছে বলে মে-তেই রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল।

এসসিও সম্মেলনে পুতিন আরও বলেন, আলাস্কায় গত মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকে যে ‘বোঝাপড়া’ হয়েছে তাতে ইউক্রেইনে শান্তির পথ খুলেছে।

এসসিও সম্মেলনে পুতিন আরও বলেন, আলাস্কায় গত মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকে যে ‘বোঝাপড়া’ হয়েছে তাতে ইউক্রেইনে শান্তির পথ খুলেছে।

এ প্রসঙ্গে চীনে চলা সম্মেলনে অংশ নেওয়া নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানান পুতিন।

“ইউক্রেইনে সংকট নিরসনে সহায়তা চীন ও ভারতের উদ্যোগ ও প্রস্তাবকে আমরা যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছি। আলাস্কায় সম্প্রতি রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র বৈঠকে যে বোঝাপড়া হয়েছে, তাও এই লক্ষ্য পূরণে ভূমিকা রাখবে বলে আমি আশাবাদী,” বলেছেন তিনি।

রুশ এ প্রেসিডেন্ট জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে অর্জন এবং ইউক্রেইন সংকট সমাধানে ‘যেসব কাজ চলমান’ সে বিষয়ে রোববার তিনি শি-কে বিস্তারিত জানিয়েছেন। চীনের নেতা এবং অন্যদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকগুলোতে তিনি এ প্রসঙ্গে আরও জানাবেন।

চীন এবং ভারত এখন পর্যন্ত রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা। বিশ্বে অপরিশোধিত তেল রপ্তানিতে রাশিয়া দ্বিতীয়।

মস্কোর কাছ থেকে তেল কেনা কমাতে ট্রাম্প ভারতের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করলেও নয়া দিল্লি কিংবা চীন কাউকেই এখন পর্যন্ত ওয়াশিংটনের হুমকিতে টলতে দেখা যায়নি। এই তেল বিক্রির অর্থই রাশিয়ার যুদ্ধ অর্থনীতিকে সচল রাখছে বলে ধারণা পশ্চিমাদের।

সর্বশেষ