নতুন কথা ডেস্ক : আসন্ন কোরবানি ঈদে চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত গরু, লকডাউনে বিক্রি বন্ধ, ভারত থেকে গরুর আমদানিসহ বেশকিছু কারণে গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার গরুর দাম কম। কিন্তু সে তুলনায় বাজারে কেজিপ্রতি মাংসের দাম কমেনি। আর এর জন্য বাজার অব্যবস্থাপনাকেই দায়ী করছে মাংস ব্যবসায়ী সমিতি।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে। তবে এক মন ১৪ থেকে ১৬ হাজার টাকা অর্থাৎ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা দরে গরু বিক্রি হচ্ছে।
মাংস ব্যবসায়ীদের দাবি, ইজারাদারদের অতিরিক্ত খাজনা আদায়, দুই সিটি করপোরেশনের অসহযোগিতা, কোনও জবাবদিহিতা না থাকায় এবং ভোক্তা অধিকার, পুলিশ প্রসাশনের নীরবতার কারণে মাংসের দাম কমছে না।
গরুর দাম কমলেও মাংসের দাম বেশি কেন জানতে চাইলে বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম বলেন, ‘ইজারাদাররা আমাদের পকেট কাটছে, তাই আমরা ক্রেতাদের পকেট কাটছি। দেখার তো কেউ নেই। তাই এই সুযোগে অসাধু কিছু ব্যবসায়ী সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে।’
তিনি জানান, কোরবানির আর ১৪ দিনের মতো বাকি। কিন্তু এবার এখনো বাজার নজরদারিতে নেয়নি প্রসাশন। প্রতিবার গরুর হাটে ভোক্তা অধিকার, পুলিশ, র্যাব সবাই থাকে।
রবিউল আলম বলেন, ‘ইজারাদাররা তাদের ইচ্ছামতো ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করলেও এ পর্যন্ত কাউকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হয়নি। ফলে তারা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে তাই ব্যবসায়ীরাও মাংসের দাম বেশি নিচ্ছে।’
তিনি জানান, গত ৪৭ বছরের মধ্যে এই প্রথম রমজান মাসে ঢাকার দুই মেয়র নীরবতা পালন করেছেন। এবারই কোনও দোকানে মাংসের মূল্য তালিকা ছিল না। এর জন্য কারা দায়ী সেই প্রশ্নও তোলেন এই ব্যবসায়ীরা।
তিনি আরো বলেন, ‘২০১৪ সালের দিকে আমাদের দেশে গরুর মাংসের চাহিদা পূরণে ৩৫ শতাংশ ভারতের গরুর ওপর নির্ভরশীল থাকতে হতো। কিন্তু বর্তমানে মাত্র ৫ শতাংশ ভারত বা অন্য দেশের ওপর নির্ভরশীল হতে হয়।’
গত বছরের তুলনায় এবছর কোরবানিদাতার সংখ্যা ৩০ শতাংশ কমবে বলেও মনে করছে মাংস ব্যবসায়ী সমিতি। তাদের হিসাবে গতবছর এক কোটি ১৮ লাখ গরু কোরবানি হয়েছে। আর অনুমিত হিসাবে আসন্ন ঈদে কোরবানির সংখ্যা কমে ৮০ থেকে ৮৫ লাখে দাঁড়াবে।
রবিউল বলেন, ‘এ কারণে দেশীয় পশু ২০ শতাংশের মতো উদ্বৃত থাকবে। এরপরও কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ভারত ও মিয়ানমার থেকে গরু আমদানি করছে। এতে গরুর দাম আরো কমবে।’
ভারত থেকে অবৈধভাবে গরু আসার কারণে সরকার প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অসাধু ব্যবসায়ীরা হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে টাকা পাচার করে গরু আনছে। সরকারকে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। ইজারাদারকে জবাবদিহিতা ও শাস্তির আওতায় আনতে হবে তবেই গরুর মাংসের দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে।’