গত বছরের ডিসেম্বরে চীন থেকে করোনার যাত্রা শুরু। কোভিড-১৯ নামের এই অদৃশ্য শত্রæর দাপটে বিপর্যস্ত গোটা দুনিয়া। বিপর্যস্ত আমাদের বাংলাদেশ। পুরোবিশ্বের সাথে বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকাও স্থবির হয়ে গিয়েছিল। পরিস্থতি অনেকটা স্বাভাবিক হলেও এখনো কমেনি করোনার দাপট। বরং বিশ্বজুড়ে মহামারি এই ভাইরাস আবারো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। শীতে বাংলাদেশে ভয়াবহ এই ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। অনেক আগেই এ আভাস দিয়েছে দেশের স্বাস্থ্যবিদ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক থেকে দেশবাসীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক থাকার আহŸান জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জারি করা হয়েছে ৯ নির্দেশনা। ‘নো মাস্ক-নো সার্ভিস’-বলে দেওয়া হয়েছে সরকারি-বেসরকারি সকল সেবা প্রতিষ্ঠানে। করোনায় মৃত্যু ও আক্রান্তের হিসাবের খাতা এখনো বন্ধ হয় নি। ফলে করোনা আতঙ্ক এখনো দেশবাসীকে তাড়া করছে। এরই মধ্যে হানা দিয়েছে আরেক ভাইরাস ডেঙ্গু। দিন দিন প্রকোপ না কমে বরং বাড়ছে। যা মানুষের মধ্যে নতুন উদ্বেগ ও আতঙ্ক তৈরি করছে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত হয়ে গত একসপ্তাহে গড়ে প্রতিদিন ১০ জনেরও বেশি রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৪৫ জন। সরকারের রোগতত্ত¡, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সস্টিটিউট ( আইইডিসিআর) ২৬৬ টি ডেঙ্গুজনিত মৃত্যুর প্রতিবেদনের মধ্যে ২৬৩ টি ঘটনা পর্যালোচনা করে ১৬৪ জনের মৃত্যু ডেঙ্গুজনিত কারণে বলে নিশ্চিত করেছে। ২০১৯ সালে লক্ষাধিক লোক ডেঙ্গু জ¦র নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। যদিও বেশীরভাগই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান।চলতিবছর ২৩৬ জন ডেঙ্গুর কারণে হাসপাতালে ভর্তি হন। এর মধ্যে ২৩০ জনই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা ছাড়া উপায় নেই। ডেঙ্গু আক্রান্তরা নাক ও দাঁত দিয়ে রক্তক্ষরণে ভুগে থাকে। এছাড়া পিঠ, দাঁত মাযা, চোখ দিয়ে রক্তক্ষরণে ভুগে থাকেন। এছাড়া পিঠ, দাঁত, মাজা, চোখ ব্যাথার উপসর্গসমূহ দেখা যায়। বিশে^র ২৫০ কোটি লোক ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে রয়েছে, যার ৭০ ভাগই এশিয়া ওপ্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে। বিশ^স্বাস্থ্য সংস্থা ইতোমধ্যে বাংলাদেশসহ সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে সতর্ক করে দিয়েছে। এ ব্যাপারে আরো সতর্ক হতে হবে। ডেঙ্গুর ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে হলে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন কে আরো সতর্ক হতে হবে। মশক নিধনে সর্বাত্মক কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। এ লক্ষ্যে সরকার, মন্ত্রণালয়, গণমাধ্যমসহ সকল সংস্থাকে একযোগে কাজ করতে হবে। কারণ প্রতিষোধকের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম।