ঢাকা: দেশে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমিতদের ৫০ জনের নমুনা সিকোয়েন্সিং করে ৪০টিতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের (বি.১.৬১৭.২) উপস্থিতি পেয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। বাংলাদেশে এই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টটি ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বলে অধিক পরিচিত।
যে ৪০টি নমুনায় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি পাওয়া গেছে তার মধ্যে ১৪ জনের বাংলাদেশের বাইরে ভ্রমণের অথবা বিদেশ থেকে আগত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার কোনো ইতিহাস পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ, বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সামাজিক সংক্রমণ (কমিউনিটি ট্রান্সমিশন) হয়েছে বলে জানিয়েছে আইইডিসিআর।
শুক্রবার (৪ জুন) আইইডিসিআরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ সব তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের মধ্যে ৮ জনের ভারত ভ্রমণের ইতিহাস আছে। ১৮ জনের বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার ইতিহাস আছে। অপর ১৪ জন রোগীর বাংলাদেশের বাইরে ভ্রমণের অথবা বিদেশ থেকে আগত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার কোনো ইতিহাস পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ, বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সামাজিক সংক্রমণ (কমিউনিটি ট্রান্সমিশন) হয়েছে।
বাংলাদেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার দেশের সীমান্তবর্তী এলাকাসহ অন্যান্য জেলায় বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানানো হয় প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে কোভিড-১৯ জিনোম সিকোয়েন্সিং এর ফলাফল জানিয়ে বলে হয়, সর্বশেষ সিকোয়েন্স অনুযায়ী দেশে
ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট (বি.১.৬১৭.২) >> ৪০ (৮০%)
বেটা ভ্যারিয়েন্ট (বি.১.৩৫১) >>> ৮ (১৬%)
সাকুর্লেটিং স্ট্রেইন >>> ১ (০২%)
আন-আইডিন্টিফাইড (বি.১.১.৩১৮)>> ১ (২%)
প্রতিবেদনে আটটি দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যারিয়েন্ট বলে পরিচিত বেটা ভ্যারিয়েন্ট (বি.১.৩৫১) পাওয়া গেছে বলেও জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, শতকরা হিসেবে দেশে এই ৫০ টি নমুনার মাঝে ৮০ শতাংশ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ও ১৬ শতাংশ বেটা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে ১টি সাকুর্লেটিং স্ট্রেইন এবং একটি আন-আইডিন্টিফাইড (শনাক্তকরণ হয়নি) রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট নিয়মিত ভিত্তিতে কোভিড-১৯ এর উচ্চ সংক্রমিত এলাকাগুলোতে আক্রান্ত রোগীদের কেস ইনভেস্টিগেশন, কন্টাক্ট ট্রেসিং এবং সন্দেহজনক রোগীদের নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করছে। গত ১৬ মে আইইডিসিআর কোভিড-১৯ এর ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট (বি.১.৬১৭.২) শনাক্ত সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করে। এরপর থেকে আইইডিসিআর ও অন্য একটি সংস্থা এ পর্যন্ত ৫০টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং সম্পন্ন করেছে। এরমধ্যে ৪০টিতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, ৫০টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের মধ্যে ৪০টি নমুনায় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছাড়াও ৮টি নমুনায় সাউথ আফ্রিকান বেটা ভ্যারিয়েন্ট (বি.১.৩৫১), ১টি সাকুর্লেটিং স্ট্রেইন এবং একটি আন-আইডিন্টিফাইড (শনাক্তকরণ হয়নি) রয়েছে।