ভেনেজুয়েলার কাছাকাছি আন্তর্জাতিক জলসীমায় আরেকটি জাহাজের পেছনে ‘সক্রিয়ভাবে ধাওয়া’ করছে যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ড। এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রবিবার (২১ ডিসেম্বর) চালানো এই অভিযানটি এমন একটি তেলবাহী জাহাজে চালানো হয়, যেটি গোপনে ও অবৈধভাবে নিষেধাজ্ঞা ভেঙে তেল বহন করে। চলতি মাসে যুক্তরাষ্ট্র দুটি তেলবাহী ট্যাংকার জব্দ করেছে। শনিবারও একটি ট্যাংকার জব্দ করা হয়।এই ঘটনাটি এমন এক সময়ে ঘটলো যখন ওই অঞ্চলে উত্তেজনা আরও বাড়ছে।ওই কর্মকর্তা জানান, জাহাজটি ভুয়া পতাকা ব্যবহার করছে এবং বিচারিক জব্দের আদেশের আওতায় রয়েছে ওয়াশিংটন অভিযোগ করেছে, ভেনেজুয়েলা তেলের অর্থ ব্যবহার করে মাদক-সংক্রান্ত অপরাধে অর্থায়ন করছে। ভেনেজুয়েলা এসব ট্যাংকার জব্দকে ‘চুরি ও অপহরণ’ বলে বর্ণনা করেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে ভেনেজুয়েলায় প্রবেশ ও দেশটি থেকে বের হয়ে আসা-সব নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেলবাহী ট্যাংকারের ওপর ‘অবরোধ’ আরোপের নির্দেশ দেন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ প্রমাণিত তেল মজুতের দেশ ভেনেজুয়েলা অভিযোগ করেছে, ট্রাম্প প্রশাসন তাদের সম্পদ দখলের চেষ্টা করছে। এছাড়া ট্রাম্প প্রশাসন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর বিরুদ্ধে ‘কার্তেল দে লোস সোলেস’ নামে একটি ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠনের নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ করেছে, যা মাদুরো অস্বীকার করেছেন।
রবিবারের ধাওয়ার বিষয়ে মার্কিন কর্তৃপক্ষ এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেনি। জড়িত ট্যাংকারটির সঠিক অবস্থান ও নামও এখনও জানা যায়নি। ট্যাংকারট্র্যাকার্স ডটকমের সংকলিত তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহ পর্যন্ত ভেনেজুয়েলার জলসীমায় থাকা বা দেশটির দিকে আসা ৮০টি জাহাজের মধ্যে ৩০টির বেশি যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিল।
শনিবারের জব্দ অভিযানে পানামার পতাকাবাহী একটি ট্যাংকার আন্তর্জাতিক জলসীমায় বিশেষায়িত ট্যাকটিক্যাল দলের মাধ্যমে দখলে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। জাহাজটি মার্কিন ট্রেজারির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত জাহাজের তালিকায় নেই। তবে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, এতে নিষেধাজ্ঞাভুক্ত পিডিভিএসএ তেল বহন করা হচ্ছিল। বিবিসি ভেরিফাইয়ের দেখা নথি অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে জাহাজটি গ্রিস ও লাইবেরিয়ার পতাকাতলেও চলাচল করেছে। সরকারি ব্যয় মেটাতে ভেনেজুয়েলা তেল রপ্তানি আয়ের ওপর অত্যন্ত নির্ভরশীল।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ক্যারিবীয় সাগরে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়েছে এবং ভেনেজুয়েলার কথিত মাদক পাচারকারী নৌযানের ওপর প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে। এতে প্রায় ১০০ জন নিহত হয়েছে। তবে এসব জাহাজে মাদক বহনের কোনও প্রকাশ্য প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র দেয়নি। এসব হামলা নিয়ে কংগ্রেসেও সেনাবাহিনীর ওপর নজরদারি বাড়ছে।
সুত্র- বিবিসি



