ডেস্ক রিপোর্টঃ“সরকারি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা এনজিওদের হাতে ন্যাস্ত করার সরকারি প্রস্তাবনাকে আতœঘাতী, ষড়যন্ত্রমূলক ও কায়েমী স্বার্থ বাস্তবায়নের সুদূরপ্রসারি লক্ষে আমলাতন্ত্র এই চক্রান্ত সাজিয়েছে।” আজ কমরেড রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পলিটব্যুরোর ভার্চুয়াল সভায় এই মত প্রকাশ করা হয়। সভায় বলা হয়, স্বাস্থসেবার মানোন্নয়নের ধুয়া তুলে সরকারের এই তুঘলকি সিদ্ধান্ত অবৈজ্ঞানিক ও জনগণকে বোকাবানাবার শামিল। সভায় বলা হয়, করোনা মহামারি আমাদের স্বাস্থখাতের দুরবস্থা, অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছে। তাই স্বাস্থ ব্যবস্থাপনার আমুল সংস্কার প্রয়োজন ও স্বাস্থখাতের সেবারমান বাড়াতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ বাড়াতে হবে। সরকারি হাসপাতালগুলো মানোন্নয়নের নামে নতুন বেনিয়াদের হাতে তুলে দেয়া হলে স্বাস্থসেবা জনগনের নাগালের বাইরে চলে যাবে, এই প্রস্তাব অপরিনামদর্শী ও অগ্রহণযোগ্য। পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশার উপস্থাপনায় করোনা অতিমারি পরিস্থিতি, মটর চালিত রিক্সা উচ্ছেদ ও এনজিওদের কাছে সরকারি হাসপাতাল তুলে দেয়া বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনায় পলিটব্যুরোর সদস্যগণ প্রস্তাব গ্রহণ করেন।
সভার প্রস্তাবে, মটরচালিত রিক্সা তুলে দেয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলা হয়, করোনার মহামারিতে জনগনের নাকাল অবস্থা । গবেষণা বলছে সাতাত্তর ভাগ মানুষের আয় তলানীতে। আড়াইকোটি মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছে। করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থবিধি প্রতিপালনে কর্মের উৎসগুলো বন্ধ হয়ে পড়ায় এবং বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় মানুষগুলো জীবিকার তাগিদে রিক্সার প্যাডেলে পা দিয়েছে। এই মানুষগুলোর জন্য কোন বিকল্প ব্যবস্থা না করে নির্দয়ভাবে তাদের জীবিকার সম্বল রিক্সা গুড়িয়ে দেয়া নির্দয় ও অমানবিক মানষিকতার বহিঃপ্রকাশ। সভায় বলা হয়, সরকার মটর ও ব্যাটারী আমদানিতে বাধা না দিয়ে আমদানিকারকদের ব্যবসার সুযোগ করে দিয়ে এখন রিক্সার মটর ও ব্যাটারী খুলে নেয়ার কথা বলছে। এটা সরকারের দু’চোখা জনস্বার্থ বিরোধী নীতির বহিঃপ্রকাশ প্রকাশ। সভায় প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্বভাবন দ্বারা মটর চালিত রিক্সাগুলোকে নিরাপদ ও জনগণের বাহন উপযোগী করে পরিবেশ বান্ধব যাতায়তের ব্যবস্থা গ্রহণের এবং জীবিকার বিকল্প ব্যবস্থা না করে রিক্সা ও ভ্যানচালকদের উচ্ছেদ বন্ধের আহবান জানানো হয়।
সভার অপর প্রস্তাবে, দেশে করোনা নতুন জাতের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়া ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয় সংক্রমণের বিস্তৃতি গ্রাম পর্যায়ে ছড়িয়েছে। জেলার হাসপাতালে সংকুলান না হওয়ায় করোনায় আক্রান্ত মানুষের চিকিৎসা বিঘœ ঘটছে। রোগিরা অক্সিজেনের অভাব বোধ করছে। এমন পরিস্থিতিতে করোনা প্রতিরোধে ১৮ বছরের উর্দ্ধেবয়সসিমার জনগণের সকল অংশকে দ্রুত টিকাদান করতে হবে। করোনা সংক্রমণ রোধে এই মুহুর্তে ভ্যাকসিনই হচ্ছে প্রধান বিকল্প। দ্রুত সময়ের মধ্যে জনগণের টিকা পাওয়ার সম্ভাবনা হতাশায় পরিনত হচ্ছে। প্রস্তাবে, ভ্যাকসিন নিয়ে রাজনীতি ও কুটনীতি পরিহার করে যেকোন ভাবে পর্যাপ্ত টিকা সংগ্রহ করে তা দেশের বেশীর মানুষকে প্রদানে টিকাদান কর্মসুচির একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ তেরীর জন্য সরকারের প্রতি পুনরায় আহবান জানানো হয়। ভ্যকসিন না পাওয়ায় জনগণের জীবন ও জীবিকাও ঝুঁকিতে পড়েছে। আলোচনায় অংশ নেন কমরেড আনিসুর রহমান মল্লিক, কমরেড সুশান্ত দাস, কমরেড মাহমুদুল হাসান মানিক, কমরেড নুর আহমেদ বকুল, কমরেড কামরূল আহসান, কমরেড আমিনুল ইসলাম গোলাপ, কমরেড হাজী বশিরুল আলম, কমরেড জ্যোতি শংকর ঝন্টু, কমরেড নজরুল ইসলাম হাক্কানী,কমরেড নজরুল হক নীলু , কমরেড এনামুল হক এমরান ।