শুক্রবার,১২,ডিসেম্বর,২০২৫
16 C
Dhaka
শুক্রবার, ডিসেম্বর ১২, ২০২৫
প্রচ্ছদরাজনীতি‘অপমানিত বোধ’ করায় ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচন হওয়ার পরই সরে যেতে চান: রাষ্ট্রপতি

‘অপমানিত বোধ’ করায় ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচন হওয়ার পরই সরে যেতে চান: রাষ্ট্রপতি

“অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে ‘অপমানিত’ বোধ করায় চলতি মেয়াদের মাঝামাঝি সময়ে পদত্যাগের পরিকল্পনা করছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচন হওয়ার পরই তিনি সরে যেতে চান বলে বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেছেন” 

৭৫ বছর বয়সী সাহাবুদ্দিন গত বছর আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাঁচ বছরের জন্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবেআগস্টে ছাত্র আন্দোলনের মুখে দীর্ঘদিনের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে নয়াদিল্লি চলে গেলে এবং সংসদ বিলুপ্ত হলেতিনি একমাত্র সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষ হিসেবে থেকে যান। যদিও সাধারণত রাষ্ট্রপতির ভূমিকা মূলত আনুষ্ঠানিক এবং নির্বাহী ক্ষমতা থাকে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার হাতে। তিনি সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক।

ঢাকায় তার সরকারি বাসভবন থেকে দেওয়া এক হোয়াটসঅ্যাপ সাক্ষাৎকারে মো. সাহাবুদ্দিন বলেনআমি চলে যেতে আগ্রহী। আমি সরে যেতে আগ্রহী। তিনি বলেছেনদায়িত্ব নেওয়ার পর এটাই তার প্রথম কোনও গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার। তিনি আরও বলেনযতক্ষণ না নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছেআমার থাকা উচিত। আমি সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রপতির পদ ধরে রাখছি বলেই এই পদে আছি।

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের অভিযোগ,  প্রায় সাত মাস ধরে ইউনূস তার সঙ্গে দেখা করেননি। তার প্রেস বিভাগটি কেড়ে নেওয়া হয়েছে এবং গত সেপ্টেম্বরে সারা বিশ্বের বাংলাদেশ দূতাবাসগুলো থেকে তার প্রতিকৃতি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তিনি বলেনসব কনস্যুলেটদূতাবাস এবং হাইকমিশনে রাষ্ট্রপতির প্রতিকৃতি ছিলরাতারাতি তা সরিয়ে ফেলা হয়েছে। জনগণের কাছে একটি ভুল বার্তা যায় যে হয়তো রাষ্ট্রপতিকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমি খুবই অপমানিত বোধ করেছি। তিনি বলেছেনপ্রতিকৃতি সরানোর বিষয়ে তিনি ইউনূসকে চিঠি দিলেও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আমার কণ্ঠস্বর রুদ্ধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য করা অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে ডইউনূসের প্রেস সচিবরা সাড়া দেননি বলে রয়টার্স জানিয়েছে।

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেছেনতিনি সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকারউজজামানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। আগস্টে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভের শেষ দিকে ওয়াকারউজজামানের সেনারা সক্রিয় ছিল নাযা এই প্রবীণ রাজনীতিবিদের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেয়। সাহাবুদ্দিন বলেনওয়াকারউজজামান স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তার ক্ষমতা দখলের কোনও উদ্দেশ্য নেই। যদিও বাংলাদেশের সামরিক শাসনের ইতিহাস রয়েছেতবু ওয়াকারউজজামান দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চান বলে জানিয়েছেন। সাহাবুদ্দিন আরও বলেনযদিও কিছু ছাত্র বিক্ষোভকারী প্রাথমিকভাবে তার পদত্যাগ দাবি করেছিলতবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কোনও রাজনৈতিক দল তাকে পদত্যাগ করতে বলেনি।

জরিপ অনুযায়ীসাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপিএবং কট্টরপন্থি জামায়াতে ইসলামী পরবর্তী সরকার গঠনের দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে। এই দল দুটি ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত জোটবদ্ধভাবে দেশ শাসন করেছিল। ২০ বছর দেশ শাসন করা শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছেন কিনাজানতে চাইলে সাহাবুদ্দিন উত্তর দিতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি বলেনরাষ্ট্রপতি হওয়ার পর থেকে তিনি স্বাধীন এবং কোনও দলের সঙ্গে তার আর সংশ্লিষ্টতা নেই।

সর্বশেষ