সোমবার,২২,ডিসেম্বর,২০২৫
18 C
Dhaka
সোমবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৫
প্রচ্ছদজাতীয়অপশক্তিরের উত্থানটা আমরা লক্ষ্য করেছি- গণমাধ্যমের ‘সর্বাত্মক সহযোগিতা’ চাইল বিএনপি

অপশক্তিরের উত্থানটা আমরা লক্ষ্য করেছি- গণমাধ্যমের ‘সর্বাত্মক সহযোগিতা’ চাইল বিএনপি

অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে একটি ‘অপশক্তির উত্থান’ দেখার কথা তুলে ধরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, গত কয়েকদিনের ঘটনাপ্রবাহে সেই শক্তির ‘স্বরূপ’ স্পষ্ট হয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখার ওপর জোর দিয়ে গণমাধ্যমের ‘সর্বাত্মক সহযোগিতা’ চেয়েছেন তিনি।

রোববার সংবাদমাধ্যমের সম্পাদক ও প্রধানদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় সালাহ উদ্দিন বলেন, “যে অপশক্তির উত্থান সবাই এখানে আজকে বলেছেন, মতি ভাই (প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান) প্রকাশ্যে বলেছেন, সেই অপশক্তিরের উত্থানটা আমরা লক্ষ্য করেছি। বিশেষ করে ৫ অগাস্টের পরবর্তী সময় থেকে এখন পর্যন্ত । সেটার একটা স্বরূপ, চেহারা এবং কর্ম গত কয়েকদিন আমরা লক্ষ্য করেছি, প্রকাশিত হয়েছে। সুতরাং জাতীয় ঐক্যকে ধরে রাখতে হবে এবং জাতীয়ভাবে আমাদের সবাই এ বিষয়টাতে যাতে সচেতন হতে পারি, সে বিষয়ে আপনাদের সংবাদপত্র এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ভূমিকা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”

বৃহস্পতিবার রাতে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্ববায়ক শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যে কারওয়ান বাজারে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার ও দৈনিক প্রথম আলোর কার্যালয়ে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে ধানমন্ডিতে ছায়ানট ভবনেও হামলা হয়। সেখানেও ভাঙচুর-লুটপাট চালিয়ে আগুন দেওয়া হয়। এছাড়া চট্টগ্রামে ভারতীয় ভিসা সেন্টারের বাইরে বিক্ষোভ থেকে ঢিল ছোড়া হয়।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরা সামনে রেখে রোববার ঢাকার র‌্যাডিসন ব্লু, ওয়াটার গার্ডেনে সংবাদমাধ্যমের সম্পাদক ও নির্বাহী প্রধানদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে বিএনপি, স্বাভাবিকভাবেই দুটি পত্রিকার কার্যালয়ে হামলার বিষয়টি সেখানে আলোচনায় প্রধান্য পায়। ম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সামনে রেখে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “এখন জাতীয় স্বার্থে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখার জন্য আপনাদের সহযোগিতা খুবই প্রয়োজন, এছাড়া হবে না।” পরে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এবং মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মওদদু আলমগীর পাভেল বক্তব্য দেন।

যায় যায় দিনের সম্পাদক শফিক রেহমান বলেন. “সাংবাদিকদের দায়িত্ব সমালোচনা করা… ঠিক আছে, কিন্তু প্রশংসা করাও তাদের দায়িত্ব, এটা আমার মনে রাখতে হবে। আমি যখন আবার ফিরে পেলাম যায় যায় দিন, আমি সম্পাদকীয় বিভাগকে বলেছি, তোমরা খেয়াল রাখবে, একটা ছোটখাটো প্রশংসার কাজও যদি হয়, ব্যক্তিগতভাবে, সরকারিভাবে, ওই কথাটা সম্পাদকীয়তে লিখবে। খালি সমালোচনা করো না।সাংবাদিকদের দায়িত্ব কিন্তু প্রশংসা এবং সমালোচনা দুটোই করা । আপনাদের অনুরোধ করছি, সাংবাদিক হয়ে যাওয়া মানে ফ্রি লাইসেন্স পেয়ে যাওয়া সরকারের সমালোচনা করা ইউনূস সাহেবের সমালোচনা–এটা কিন্তু নয়। আমি কিন্তু সরকারকে টেনেই বলছি।

তিনি বলেন, “এখানে আমি মাহফুজ সাহেবের (ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম) একটা কথা বলতে চাই…উনি চলে গেছেন। আশা করি তার সহযোগী মিস্টার মতিউর রহমান আমার কথাটা তার কাছে পৌঁছে দেবেন। তিনি বলেছেন যে, সাংবাদিক ভুল করতে পারে। ধন্যবাদ এই কথাটা বলার জন্য। সরকারও ভুল করতে পারে, সাংবাদিকও ভুল করতে পারে। কিন্তু তার চেয়ে বড় কথা হচ্ছে এই ভুলটা স্বীকার করার সাহস থাকতে হবে। মতিউর রহমানকে জানিয়ে দিতে চাই, তিনি যেন মাহফুজকে বলেন, আমি তাকে অতি বিনয়ী আখ্যা দিচ্ছি। কেননা তিনি বিশাল ভুল করেছিলেন ওয়ান ইলেভেন হওয়ার পরে এবং সেই ভুল তিনি কিন্তু টেলিভিশনে সকলের সামনে স্বীকার করেছিলেন। থ্যাংক ইউ মিস্টার মাহফুজ আনাম।”

প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, “আমি মনে করি দেশে একটা রাজনৈতিক শূন্যতা রয়েছে, চলছে… এটা বিপদজনক এবং সেটা বিএনপির জন্যও কিছুটা কঠিন অবস্থা। আমি সবসময় ভাবতাম বা এখনো মনে করি যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বেশ একটু আগে যদি আসতে পারতেন তাহলে হয়ত বিএনপি এবং দেশের মধ্যে একটা ভালো সুবিধাজনক অবস্থা তৈরি হতে পারত। উনার অনুপস্থিতিটা কিছুটা আপনাদের জন্য প্রশ্ন তৈরি করেছে, নানা রকম বিভ্রান্তি তৈরি হওয়ার সুযোগ হয়েছে। সেটা আপনাদের জন্য নেতিবাচক হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে।

মতিউর রহমান বলেন, “এই একটা বছর বা ১৫টা মাস ধরে বিএনপির সকল কর্মকাণ্ড নানা স্তরে নানাভাবে নানা ক্ষেত্রে যেভাবে হয়েছে, যতটুকু জানি বা যতটুকু জানি না, সেটুকু কিন্তু বিএনপির জন্য খুব ভালো হয়নি। সেগুলো এখনো সংশোধন করার, ভালো করার সুযোগ সম্ভাবনা আছে।”

সর্বশেষ