শুক্রবার,২৬,ডিসেম্বর,২০২৫
15 C
Dhaka
শুক্রবার, ডিসেম্বর ২৬, ২০২৫
প্রচ্ছদসারাদেশউত্তরা ইপিজেডে সংঘর্ষ, শ্রমিক নিহত

উত্তরা ইপিজেডে সংঘর্ষ, শ্রমিক নিহত

নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে একটি কারখানা বন্ধের জেরে বিক্ষোভের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক।

মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে ইপিজেডের এভারগ্রিন কারখানায় শ্রমিক বিক্ষোভের পর এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

নিহত হাবিবুর রহমান ইকু ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি নিটিং কারখানার শ্রমিক ছিলেন। তিনি নীলফামারী সদর উপজেলার সংগলশী ইউনিয়ের কাজীরহাট গ্রামের দুলাল হোসেনের ছেলে।

গুরুতর আহত পাঁচজনকে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সুত্র বলছে, হাসপাতলের মেডিকেল অফিসার ডা. তানভীরুল ইসলাম বলেন, “আমাদের এখানে মোট ছয়জনকে নিয়ে আসা হয়। তাদের মধ্যে হাবিবকে আমরা মৃত অবস্থায় পাই। বাকিরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।”

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুরো ইপিজেড এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিলেও নীলফামারী-সৈয়দপুর সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ইপিজেডের ভেতরে কারখানা মালিকদের সঙ্গে সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তারা।

নীলফামারীর ৫৬ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম বদরুদ্দোজা বলেন, “বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কোনো ধরনের মব সৃষ্টির সুযোগ নেই। প্রশাসনিক পর্যায়ে আলোচনা চলছে। ইপিজেডের সকল কারখানা আপাতত বন্ধ রয়েছে।”

শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এভারগ্রীণ প্রোডাক্টস ফ্যাক্টরী বিডি লিমিটেড নামে একটি পরচুলা কারখানার শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবিতে গত কয়েকদিন ধরেই আন্দোলন করে আসছিলেন। সোমবার হঠাৎ করেই কারাখানা বন্ধের ঘোষণা দেয় কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।

এর জের ধরে মঙ্গলবার সকালে ইপিজেডের মূল ফটকে অবস্থান নেন ওই শ্রমিকরা। ইপিজেডের অন্য কারখানার শ্রমিকদেরও তারা কাজে যোগ দিতে বাধা দেন।

খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি সামাল দিতে এলে শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে। এক পর্যায়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী গুলি চালালে হাবিবসহ কয়েকজন আহত হন। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ইপিজেডের শ্রমিক মমিনুর রহমান বলেন, “আমরা অন্য কারখানার কোনো শ্রমিককে প্রবেশে বাধা দিইনি। বরং তারাই আমাদের আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে আমাদের সঙ্গে অবস্থান নেয়।

“আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রধান গেটের সামনে অবস্থান নিয়েছিলাম। এসময় সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা অমানবিকভাবে এক নারী শ্রমিককে মারধর করতেছিল। আমরা এগিয়ে গেলে তারা আমাদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালাতে থাকে।”

আরেক শ্রমিক মো. রায়হান বলে, “আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হামলা চালালো কেন? আমরা তো কোনো রাজনৈতিক দাবি নিয়ে আন্দোলনে নামিনি। আমরা আমাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করছি।”

লিপি আক্তার নামে আরেক শ্রমিক বলেন, “আমরা ডিউটি করতে গেছি। যায়া দেখি গেট বন্ধ। হঠাৎ করে সেনাবাহিনী-পুলিশ আমাদের উপর হামলা চালায়। তারা কার অনুমতি নিয়ে আমাদের উপর গুলি চালাল? আমাদের এক ভাই নিহত হইল। এর দায়ভার কে নেবে। সরকারকে জবাব দিতে হবে।”

সর্বশেষ