শুক্রবার,২৯,মার্চ,২০২৪
24 C
Dhaka
শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪
Homeরাজনীতিজাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের মে’দিবসের আহবান-

জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের মে’দিবসের আহবান-

# শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত কর # আপদকালীন নগদ অর্থ ও খাদ্য সহায়তা দাও সামাজিক বৈষম্যের অবসান চাই # ২০ হাজার টাকা জাতীয় ন্যুনতম মজুরী ঘোষনা কর # অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শ্রমিকদের ভ্যাকসিন দাও

নতুন কথা ডেস্ক: মহান মে দিবসের ১৩৫তম বার্ষিকী ও শ্রমজীবি মানুষের আন্তর্জাতিক সংহতি দিবসে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল শ্রমজীবি ও মেহনতী মানুষকে সংগ্রমী অভিনন্দন জানিয়েছেন জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন নেতৃবৃন্দ। ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কামরূল আহসানের সভাপতিত্বে আজ ১লা মে সকাল ১১টায় পল্টন মোড়ে এবং একই সময়ে আশুলিয়া প্রেসক্লাবে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জনাব আমিরুল হক আমিন। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে আয়োজিত র‌্যালীপুর্ব প্রতিকী সমাবেশে বক্তাগণ শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন আত্মত্যাগী মে’ আন্দোলনের সংগঠক, নেতা-কর্মী ও শ্রমিকদের।

বক্তারা বলেন, মহান মে’দিবস হচ্ছে মানুষ কর্তৃক মানুষকে শোষনের বিরুদ্ধে সংগ্রামের প্রতিক। শতাব্দীপূর্ব শ্রমিকের সেই আন্দোলন সাফল্য ছিনিয়ে এনেছিল; প্রতিষ্ঠিত হয় ৮ ঘণ্টা শ্রমের সময় সীমা। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি লাভ করে মহান মে দিবস। পৃথিবীতে যতদিন শ্রমজীবি মানুষের অস্তিত্ব থাকবে, শ্রেণী শোষন থাকবে ততদিন এই দিনটি মুক্তিকামী মানুষের সংগ্রামের প্রতিক হিসেবেই পালিত হবে। তারা বলেন, এবারও মে’দিবস পালন করতে হচ্ছে করোনা মহামারির দ্বিতীয় প্রবাহের অত্যন্ত জটিল ও বিরূপ পরিবেশে। দ্বিতীয় পর্যায়ে করোনা প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়া ও মৃত্যুর মিছিল বেড়েছে। মালিকরা কর্মে নিয়োজিত শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা না করেই কারখানা চালু করায় শ্রমিকরা স্বাস্থঝুকিতে রয়েছেন। তাদের যাতায়তে কোন পরিবহনের ব্যবস্থা করেনি। পরিস্থিতি বিবেচনায় নতুন করে লকডাউনের কারণে কর্মে নিয়োজিত শ্রমিক-কর্মচারীরা বিশেষ করে যারা ‘দিন আনে দিন খায়’ তাদের পরিবার নিয়ে জীবনধারণ সংকটে পড়েছেন। বক্তারা বলেন, দেশে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে শ্রমিক ও শ্রমজীবি মানুষের সংখ্যা শতকরা ৮৫%। এরা তাদের আয়ের অর্থ দিয়ে শুধু নিজেরাই বাঁচে না; গ্রামীণ অর্থনীতিকেও সচল রাখে। দেশের এ্ই প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জীবিকা অজনের পথ বন্ধ হয়ে কঠিন সংকটে নিপতিত হয়েছেন। গত ১৪মাসে তাদের সকল সঞ্চয় শুন্য হয়েছে। অন্যদিকে প্রাতিষ্ঠানিক খাতে চলেছে লে-অফ, ছাঁটাই ও মজুরি কর্তন। অনেক কারখানা ও প্রতিষ্ঠানের মালিক শ্রমিক-কর্মচারিদের মজুরি-বেতন ঠিকমত পরিশোধ করে নাই। এতে শ্রমঅধিকার লংঘিত হয়েছে। অসংগঠিত খাতের ব্যপক শ্রমজীবি মানুষ যারা কোভিড-১৯ মহমারি কারণে জীবিকা হারিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন তাদের পরিবারের জীবন বাঁচাতে খাদ্য ও নগদ আর্থিক সহায়তা সহ তাদের জীবিকার টেকসই সমাধান করা জরুরী; ভবিষ্যতের স্বার্থে রাষ্ট্রকেই এই দায়িত্ব নিতে হবে। নেতৃবৃন্দ বলেন, পরিপুর্ণ ও শোভন স্বাস্থ্যসেবার অধিকার; মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রকে স্বাস্থ্যখাতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেয়া,সবার জন্য নিরাপদ ও বিনামুল্যে প্রতিষেধক পাওয়ার সুযোগ, জাতীয় ন্যুনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা ঘোষনা, গণতান্ত্রিক ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত করা, দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি রোধ ও ফটকাবাজারি বন্ধ করা এবং সামাজিক বৈষম্য দুর করার দাবী জানান। বক্তাগণ বাঁশখালী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে গুলিতে শ্রমিক হত্যার বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও দোষীদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন।
কেন্দ্রিয় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, ফেডারেশনের কেন্দ্রিয় নেতা এম দেলোয়ার হোসেন, আনোয়ার আলী, শাহানা ফেরদৌসী লাকী, নজরুল ইসলাম, আরিফা আক্তার প্রমুখ। সমাবেশ শেষে মিছিল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদে সমাবেশে যোগ দেয়।

সর্বশেষ