শুক্রবার,২৬,ডিসেম্বর,২০২৫
12 C
Dhaka
শুক্রবার, ডিসেম্বর ২৬, ২০২৫
প্রচ্ছদসীমানা পেরিয়েট্রাম্পের ৫০% শুল্কের মধ্যেই মোদি যাচ্ছেন চীনে, আসতে পারেন পুতিন — ভূরাজনীতিতে...

ট্রাম্পের ৫০% শুল্কের মধ্যেই মোদি যাচ্ছেন চীনে, আসতে পারেন পুতিন — ভূরাজনীতিতে নতুন সমীকরণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যে মোট ৫০% শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ার মধ্যেই চীন সফরে যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ৩১ আগস্ট ও ১ সেপ্টেম্বর চীনের তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিতব্য সাংহাই কো–অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনে তিনি যোগ দেবেন। এ সফরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনেরও উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, যা এ আঞ্চলিক সম্মেলনকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলবে।


যুক্তরাষ্ট্রের ‘জরিমানা শুল্ক’ ও ভারতের প্রতিক্রিয়া
রাশিয়া থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখার কারণে ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫% শুল্ক বসিয়েছে, যা পূর্ববর্তী ২৫% শুল্কের সঙ্গে যুক্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে মোট ৫০%। ওয়াশিংটন এই পদক্ষেপকে ‘জরিমানা শুল্ক’ বললেও নয়াদিল্লি স্পষ্ট করে জানিয়েছে, জাতীয় স্বার্থে গোপন কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। মোদি সরকার “Make in India” কর্মসূচিতে আরও জোর দিয়ে অভ্যন্তরীণ শিল্প ও কৃষি খাতকে সুরক্ষিত রাখার পরিকল্পনা করছে।


চীন সফরের তাৎপর্য
মোদি সর্বশেষ ২০১৯ সালে চীন সফরে গিয়েছিলেন। এরপর পূর্ব লাদাখের গালওয়ান সংঘর্ষে দুই দেশের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে। সাম্প্রতিক কূটনৈতিক উদ্যোগে সীমান্ত পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় মোদির এই সফর দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিককরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে। তিয়ানজিনে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা প্রবল।

রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে ভারতের এই ঘনিষ্ঠতা ব্রিকস ও এসসিও উভয় মঞ্চেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার একটি কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে।


সম্ভাব্য বৈঠক ও এজেন্ডা

  • মোদি–সি চিন পিং বৈঠক: সীমান্ত, বাণিজ্য ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা ইস্যু

  • সম্ভাব্য মোদি–পুতিন বৈঠক: জ্বালানি, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা

  • সন্ত্রাসবিরোধী বার্তা: পাকিস্তান ইস্যুতে ভারতীয় অবস্থান স্পষ্ট করার সুযোগ

  • বহুপাক্ষিক বাণিজ্য সহযোগিতা: মার্কিন শুল্কের প্রেক্ষাপটে বিকল্প বাণিজ্যপথ অনুসন্ধান


ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
ট্রাম্পের শুল্কনীতির ফলে চীন, রাশিয়া, ইরানসহ একাধিক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টানাপোড়েনে রয়েছে। ভারত–রাশিয়া ঐতিহাসিকভাবে ঘনিষ্ঠ, আর ইউক্রেন যুদ্ধের পর রাশিয়া–চীনও কাছাকাছি এসেছে। মোদির চীন সফর এবং সেখানে পুতিনের সম্ভাব্য উপস্থিতি দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ায় নতুন ভূরাজনৈতিক সমীকরণ গড়ে তুলতে পারে।

ওয়াশিংটন নিশ্চিতভাবেই এই সম্মেলনের গতিপ্রকৃতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবে, বিশেষ করে ভারত কতটা দৃঢ়ভাবে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ সামলে বহুপাক্ষিক অংশীদারিত্ব এগিয়ে নেয়, সেটিই এখন নজরে।

সর্বশেষ