প্রাথমিক স্তরে সংগীত শিক্ষক নিয়োগের পদক্ষেপকে ‘ইসলাম বিরোধী অ্যাজেন্ডা’ আখ্যা দিয়ে এ সংক্রান্ত বিধিমালা বাতিলের দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠনটি এর বদলে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগকে বিধিমালায় যুক্ত করার দাবি করে বলেছে, এতে মাদ্রাসা শিক্ষিতদের কর্মসংস্থান ঘটবে।
শুক্রবার রাতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব সাজেদুর রহমান এ সংক্রান্ত যুক্ত বিবৃতিতে এসব দাবি জানান।সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক ইসলামাবাদী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে হুঁশিয়ার দেওয়া হয়, “শিক্ষাব্যবস্থায় ইসলামবিরোধী অ্যাজেন্ডা মেনে নেওয়া হবে না।
অবিলম্বে এ বিষয়ক বিধিমালার গেজেট বাতিল করে সংগীত শিক্ষকের পরিবর্তে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগকে বিধিমালা যুক্ত করা না হলে গণ আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হেফাজত নেতারা।সব ইসলামী দলের পক্ষ থেকে প্রাথমিক শিক্ষায় ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের দাবি অনেক পুরনো বলে বিবৃতিতে বলেছে সংগঠনটি।
এর আগে ২০২৪ সালের ৯ ডিসেম্বর রাজধানী ঢাকায় এক আলোচনা সভায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিন বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগে সরকারের উদ্যোগ নেওয়ারে কথা বলেছিলেন, যার মধ্যে সংগীতও রয়েছে।
শুক্রবার হেফাজতে ইসলাম সংগীত শিক্ষক নিয়োগের বিরোধিতা করে বিবৃতিতে বলেছে, “সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত নতুন গেজেটে ধর্মীয় শিক্ষক না দিয়ে সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালাকে ‘ইসলামবিরোধী অ্যাজেন্ডা’।
“ইসলামে বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ। তাছাড়া সংগীত কোনো মৌলিক শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত নয়। বাংলাদেশের মতো মুসলিম-অধ্যুষিত দেশে মুসলিম অভিভাবকদের মতামত না নিয়ে তাদের ছেলেমেয়েদের প্রাথমিক শিক্ষায় সংগীত শিক্ষা চাপিয়ে দেয়ার অধিকার কোনো সরকারের নেই।”
সংগঠনটি মুসলিম শিশু-কিশোরদের ইসলামী মূল্যবোধ ও ঈমান রক্ষার প্রশ্নে বৃহত্তর ইসলামী জনতাকে সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এলজিবিটি ও গানবাদ্য ঢুকিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলিম শিশু-কিশোরদের ইসলামী মূল্যবোধ থেকে দূরে রাখার ডি-ইসলামাইজেশন প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা পতিত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট আমল থেকেই ছিল।
“দুঃখজনকভাবে অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতার সুযোগে সেই পুরনো ইসলামবিরোধী অ্যাজেন্ডাগুলো বাস্তবায়নে নেমেছে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চেপে বসা পাশ্চাত্যের উচ্ছিষ্টভোগী কিছু সুশীল এনজিওকর্মী।”
পাশাপাশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠনটির নেতারা বিবৃতিতে বলেন, “বাংলা, অংক ও ইংরেজির মতো মৌলিক শিক্ষায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এতটাই দুর্বল যে, অনেক অভিভাবক এখন স্কুল থেকে মুখ ফিরিয়ে তাদের সন্তানদের মাদ্রাসায় ভর্তি করাচ্ছেন।
“এ নিয়ে কিছু সেক্যুলার মিডিয়ার হা-হুতাশও আমরা দেখেছি। সরকারের উচিত, প্রাথমিক স্তরে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগসহ মৌলিক শিক্ষার মান বাড়াতে সংশ্লিষ্ট দক্ষ ও যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার ব্যবস্থা করা।”



