রবিবার,১৬,নভেম্বর,২০২৫
21 C
Dhaka
রবিবার, নভেম্বর ১৬, ২০২৫
প্রচ্ছদজাতীয়বিচারকের সামনে মব- সাংবাদিককে মারধর,পান্নার জামিন নাকচ

বিচারকের সামনে মব- সাংবাদিককে মারধর,পান্নার জামিন নাকচ

সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নার জামিন শুনানিতে মারধরের শিকার হয়েছেন সময় টিভির সাংবাদিক আসিফ হোসাইন সিয়াম। তাকে কিল, ঘুষি ও লাথি মেরেছেন এজলাসে থাকা কয়েকজন আইনজীবী।

বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকার মহানগর হাকিম হাসিব উল্লাস পিয়াসের আদালতে এ ঘটনা ঘটে।

গত ২৮ অগাস্ট ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির এক আলোচনা সভা থেকে সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী, সাংবাদিক পান্নাসহ ১৬ জনকে আটক করা হয়। পরদিন সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের কারাগারে পাঠায় শাহবাগ থানা পুলিশ।

বৃহস্পতিবার লতিফ সিদ্দিকী ও পান্নার জামিন শুনানির দিন ধার্য ছিল। তবে আদালতে হাজির করা হয় কেবল সাংবাদিক পান্নাকে।

দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটের দিকে সাংবাদিক পান্নাকে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের অষ্টম তলায় ৩০ নম্বর এজলাসে নেওয়া হয়।

পান্নাকে তড়িৎ গতিতে কাঠগড়ায় নেওয়ার পর হেলমেট খুলে দেওয়া হয়। তখন পুলিশের উদ্দেশে পান্না বলেন, “আপনারা এমন কেন করছেন, আমি তো আপনাদের শত্রু নই।”

এ সময়ে পান্নার কাছে দাঁড়িয়ে থাকা সাংবাদিক মুক্তাদির রশীদ জিজ্ঞেস করেন, “ভাই আপনাকে কি জেলের ভেতরে নির্যাতন করা হয়েছে?”

সাংবাদিক পান্না উত্তর দেন, “না।”

তখন মুক্তাদির রশীদকে এজলাস থেকে বের হয়ে যেতে ধমকাতে থাকেন আইনজীবী মহিউদ্দিন মাহী।

এ সময় মুক্তাদির রশীদ বলেন, “আদালত কক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার ক্ষমতা কেবলমাত্র বিচারকের আছে। উনি বললে বের হয়ে যাব। উনাকে বলতে দিন।”

একথা শোনার সাথে সাথে ওই আইনজীবী মুক্তাদিরকে মারতে উদ্ধত হলে তাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন পাশে সাংবাদিক সিয়াম।

এরই মাঝে বিচারক এজলাসে ওঠেন। জামিন শুনানি শুরু হয়।

সিয়াম ওই আইনজীবীকে বলেন, “উনি বহিরাগত না, একজন সাংবাদিক।” একথা বলার সাথে সাথে বেঞ্চ থেকে লাফ দিয়ে উঠে কানের ওপর ঘুষি মারেন আইনজীবী মাহী। এসময় সিয়াম তার হাতে থাকা মাইক্রোফোন উঠিয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেন।

তবে আইনজীবী তাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে আসেন। সিয়াম কিছু বুঝে ওঠার আগেই আইনজীবীর কয়েকজন সহযোগী তাকে ঘিরে মারধর শুরু করেন। যে যেভাবে পেরেছে, সিয়ামকে মেরেছেন। চড়, থাপ্পড়, কিল, ঘুষি, লাথিতে রক্তাক্ত হন সিয়াম।

এ পরিস্থিতি দেখে এজলাস থেকে নেমে খাসকামড়ায় চলে যান বিচারক। এ সময় প্রসিকিউশনের পক্ষে থাকা কাইয়ুম হোসেন নয়ন ওই সাংবাদিককে উদ্ধার করে তাকে সাক্ষীর কাঠগড়ার কাছে নিয়ে যান।

ওই আইনজীবীদের চাপে মুক্তাদির রশীদকেও এজলাস কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়।

পরে সিয়াম বলেন, “কোনো কারণ ছাড়াই বিচারকের সামনে মব সৃষ্টি আমাকে মারধর করলো কয়েকজন আইনজীবী। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।“

৩টা ২৫ মিনিটে বিচারক আবার এজলাসে আসেন। এরপর শুনানি নিয়ে আদালত লতিফ সিদ্দিকী ও সাংবাদিক পান্নার জামিন আবেদন নাকচ করে দেন।

সর্বশেষ