বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১২ মিনিটে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইসমাইল সাদী দ্য ডেইলি স্টারকে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি বারডেম হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। গতকাল তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। আজ রাতে তার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। রাত ১০টা ১২ মিনিটে ভেন্টিলেশন সাপোর্ট খুলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।গবেষক ও বহুমাত্রিক লেখক, রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ আহমদ রফিক পেশায় ছিলেন চিকিৎসক। জীবনভর তিনি দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। রবীন্দ্র চর্চা কেন্দ্র ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন তিনি। তার অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশ পদক পেয়েছেন। এছাড়া, কলকাতার টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউট তাকে ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’ উপাধিতে দিয়েছে।
আহমদ রফিকের জন্ম ১৯২৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। তার স্ত্রী মারা গেছেন ২০০৬ সালে। তিনি নিঃসন্তান। কবিতা, প্রবন্ধ, ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, গবেষণা মিলিয়ে তার লেখা ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক। সর্বশেষ ২০২৩ সালের একুশের বইমেলায় দুটি বই সময় প্রকাশন থেকে ‘ভারত-পাকিস্তান বাংলাদেশ কথা’, এই সময় পাবলিকেশনস থেকে প্রবন্ধগ্রন্থ ‘শিল্প-সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্য’ প্রকাশিত হয়। আহমদ রফিকের দৃষ্টি ক্ষীণ হয়ে আসে ২০১৯ সালে। সে বছর চোখে অস্ত্রোপচার করা হলেও অবস্থার বিশেষ পরিবর্তন হয়নি। ২০২৩ সালে তিনি প্রায় দৃষ্টিহীন হয়ে পড়েন।
ভাষাসৈনিক ও রবীন্দ্রসংগীত বিশেষজ্ঞ আহমদ রফিকের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আজ শনিবার (৪ অক্টোবর) সকাল ১১টায় তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে। সাধারণ মানুষ, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন সেখানে উপস্থিত থেকে শ্রদ্ধা জানাবেন। শ্রদ্ধা জানানো শেষে একটি শোক র্যালি বের হবে, মরদেহ ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজে হস্তান্তরের মাধ্যমে শেষ হবে। আহমদ রফিক জীবদ্দশায় দেহদানের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তাই তার দেহ চিকিৎসা শিক্ষার্থী ও গবেষকদের শিক্ষাকার্যে ব্যবহৃত হবে।



